নিদ্রাহীনতার কারণ ও প্রতিকার

নিদ্রাহীনতার কারণ ও প্রতিকার
সুস্থ থাকতে সঠিক মাত্রায় নিয়মিত ঘুমানো প্রয়োজন। নিয়মিত ঘুম না হলে নানারকম শারীরিক ও মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। তাই সুস্থ থাকতে হলে নিয়মিত এবং পর্যাপ্ত ঘুম খুব জরুরি।

বর্তমানে মানুষের নানামুখী ব্যস্ত জীবনের নানা চাপে অনিদ্রা ঘরে ঘরে একটি বিরাট সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সারাদিন অক্লান্ত পরিশ্রমের পর শরীর যেন আর চলতে চায় না। মনে হয়, কোথাও একটু হেলান দিতে পারলেই ঘুমিয়ে পড়া সম্ভব। কিন্তু সেই মনে হওয়াটা মিথ্যা প্রমাণ হয়, যখন রাতে বিছানায় শুয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা পার করে দিলেও ঘুম আসে না।

এ অবস্থায় বিছানায় এপাশ-ওপাশ করতে করতেই কেটে যায় রাতের অনেকটা সময়। এভাবে ঘুম না আসার কারণে নানাবিধ ভয়াবহ সমস্যায় জর্জরিত হয়ে পড়ে ভূক্তভোগী।

আসুন আজ জেনে নেই, ঘুম না হওয়ার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে।

অনিদ্রার কারণ:

অনিদ্রা বা ঘুম না হওয়ার পেছনে অনেক কারণ রয়েছে।তবে সাধারণত মানসিক এবং শারীরিক সমস্যাই এর মূল কারণ। এছাড়া অভ্যাস এবং পরিবেশগত কারণেও মানুষ এই সমস্যায় পতিত হতে পারে।

মানসিক কারণের মধ্যে রয়েছে- ভয়, হতাশা, মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা, ঝগড়াঝাটি, পেশাগত সমস্যা, অসুখী যৌনজীবন, বিষণ্ণতা, উদ্বিগ্নতা, আঘাত-পরবর্তী মানসিক চাপ ইত্যাদি।

শারীরিক কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে হৃদরোগ, হাঁপানি, মেনোপজসহ নানা ধরণের অসুখ।

এছাড়া ঘুমের প্যাটার্ন চেঞ্জ হলে, রাতের শিফটে কাজ করলে, আরামদায়ক বিছানা না হলে কিংবা নির্দিষ্ট বিছানা পরিবর্তন হলে এ সমস্যা দেখা দিতে পারে।

অনিদ্রার প্রতিকার:

প্রথমে ঘুম না হওয়ার কারণ খুুঁজে বের করতে হবে। শারীরিক কোনো অসুস্থতা কিংবা মানসিক চাপ থেকে ঘুমের সমস্যা হলে সেই কারণটি দূর করতে হবে।

ঘুমের সময় অর্থাৎ রাত ১১টার আগে বা পরে বিছানায় যাওয়া যাবে না। কেবল ঘুমের নির্ধারিত সময়ই বিছানায় যেতে হবে।

শব্দহীন, স্নিগ্ধ ও নিরিবিলি পরিবেশ, আরামদায়ক ও পরিপাটি বিছানা-বালিশ, সাথে বাতি নিভিয়ে কিংবা হালকা আলো জ্বেলে শোয়ার পরিবেশ তৈরি করুন।

বিছানায় যাওয়ার ২০ মিনিটের মধ্যে ঘুম না এলে এপাশ-ওপাশ করে অর্থাৎ জোর করে ঘুমের চেষ্টা করে সময় নষ্ট করবেন না। বরং উঠে বোরিং লাগে এমন কোনো কাজ করুন। কিছুক্ষণ পরে আবার বিছানায় যেতে হবে। আবার ২০ মিনিট চেষ্টা করে ঘুম না এলে উঠে যেতে হবে।

বিকালে ব্যায়াম করা থেকে বিরত থাকুন।

সন্ধ্যার পর চা, কফি খাওয়া যাবে না।

লেটুস ঘুমের জন্য খুবই উপকারী। লেটুসে অ্যান্টি-ক্র্যাম্পিং এজেন্ট থাকে, যা ঘুম আসতে সাহায্য করে। তাই খাবারের তালিকায় লেটুস রাখুন।

ঘুমানোর অন্তত দেড় থেকে দুই ঘণ্টা আগে রাতের খাওয়া শেষ করতে হবে।

শোয়ার আগে আগে এক গ্লাস গরম দুধ কিংবা এক গ্লাস পানি খেয়ে নিন।

ঘুম এলে সঙ্গে সঙ্গে ঘুমাতে যাওয়া উচিত। ঘুমাতে যাওয়ার আগে দীর্ঘ সময় ধরে কোনো কাজ করা উচিত নয়।

প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় ঘুমাতে যাওয়া এবং ঘুম থেকে ওঠার চেষ্টা করুন।

ক্ষুধা নিয়ে বিছানায় ঘুমাতে যাওয়া উচিত নয়।

মাদক ও ধূমপান বর্জন করুন।

ঘুমাতে যাওয়ার আগে গোসল করে নিতে পারেন। এতে ফ্রেশ লাগবে ও ভালো ঘুম হবে।

দুপুরে বেশি ঘুমানো উচিত নয়। সম্ভব হলে একেবারেই বাদ দেওয়া উচিত।

সতর্কতা:

অনেকেই ঘুম না হলে নিজে নিজেই ঘুমের ওষুধ কিনে খান। এটা একদমই উচিত নয়। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো ধরনের ঘুমের ওষুধ খাবেন না।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

কাজে লাগান পুরনো টুথব্রাশ
খরচ কমাতে বছরের শুরু থেকেই করুন এই ৫ অভ্যাস
শীতে যে ৪ খাবার বাদ দেবেন না
উৎসবে বাজি-পটকা কতটা ক্ষতিকর?
শীতে কোন সময় গোসল করলে শরীর থাকবে সুস্থ?
গলাব্যথা সারাতে কেন লবণ-পানি পান করবেন
কাঠবাদামের তেল কতটা উপকারী?
সপ্তাহে ১ দিন শ্যাম্পু করলেই দূর হবে খুশকি
সর্দি-কাশি দূর করার ঘরোয়া উপায়
জাল নোট চেনার সাত উপায়