নজিরবিহীন ঘটনা ভারতের শেয়ারবাজারে!

নজিরবিহীন ঘটনা ভারতের শেয়ারবাজারে!
৪৫ মিনিটের জন্যে থমকে ছিল ভারতের শেয়ারবাজার, সেনসেক্স এর সুচক নামল ৩০৯১ পয়েন্ট, নিফটি ৯০০০ এর নিচে।করোনা ভাইরাসের জেরেই বিশ্ব-বাণিজ্যের অবস্থা টালমাটাল, নামছে শেয়ার সূচক।

শুক্রবার ভারতের শেয়ারবাজারে বাজার খোলার পর প্রায় ৪৫ মিনিট বন্ধ ছিল লেনদেন। জানা গেছে, বেঞ্চমার্ক সূচকগুলির প্রত্যেকটি ১০ শতাংশে আটকে থাকায় শেয়ার বাজারে লেনদেনও থমকে যায়।

S&P BSE Sensex শুক্রবার বাজার খোলার পর আগের দিনের বাজার বন্ধের সময়ের তুলনায় শেয়ার সূচক (Sensex Nifty) ৯.৪৩ শতাংশ বা ৩,০৯০.৬২ পয়েন্ট হ্রাস পেয়ে ২৯,৬৮৭.৫২ তে নেমে যায়। পাশাপাশি বিস্তৃত NSE Nifty ৫০ বেঞ্চমার্ক আগের দিনের তুলনায় ৯৬৬.১ পয়েন্ট বা ১০.০৭ শতাংশ কমে গিয়ে ৮,৬২৪.০৫ তে দাঁড়ায়, যা গত ৩ বছরের তুলনায় সর্বনিম্ন। মনে করা হচ্ছে, বিশ্বের বাণিজ্য বাজারে করোনা ভাইরাসের (Coronavirus) বড়সড় প্রভাব পড়েছে, এর জেরেই শেয়ার বাজারের (Stock Market) এই অবস্থা।

এদিকে ২০০৮ সালে বিশ্ব জুড়ে আর্থিক সঙ্কটের পরে এই প্রথমবার ভারতীয় শেয়ার বাজারের অবস্থা এত খারাপ। শেয়ার সূচকগুলির জন্যে পরবর্তী সার্কিট ব্রেকারের সীমা রাখা হয়েছে ১৫ শতাংশ।

বিশ্লেষকরা বলছেন, করোনা ভাইরাসের আতঙ্কের জেরেই বিশ্বের বাণিজ্য বাজারে পড়ল বড়সড় প্রভাব, শেয়ার কেনাবেচা সাময়িকভাবে প্রায় স্থগিত হয়ে যাওয়ায় তার প্রভাব পড়ে ভারতের শেয়ার বাজারেও।

শুক্রবার ভারতীয় টাকার দাম ডলারের তুলনায় এখনও পর্যন্ত সর্বনিম্ন অবস্থায় পৌঁছেছে। মনে করা হচ্ছে করোনা ভাইরাস মহামারীর আকার নেওয়াতেই সংশয়ে ভুগছেন বিনিয়োগকারীরা। তাঁরা ঝুঁকিপূর্ণ জায়গায় বিনিয়োগ করার থেকে নিশ্চিত জায়গায় বিনিয়োগ করতে চাইছেন।

এশিয়ার অন্যান্য দেশের শেয়ার বাজারে ইকুইটিগুলি ক্রমাগত নামতে থাকে, জাপানের নিক্কি ২২৫ সূচক অর্থাৎ ১০ শতাংশ হ্রাস পায়। দেখা যাচ্ছে, ২০০৮ সালের বিশ্বব্যাপী আর্থিক মন্দার পরে চলতি সপ্তাহই শেয়ার কেনাবেচার ক্ষেত্রে সবচেয়ে খারাপ সপ্তাহে পরিণত হতে চলেছে। এদিকে জাপানের বাইরে এশিয়া-প্যাসিফিকের শেয়ারের এমএসসিআইয়ের বিস্তৃত সূচকটি ২ শতাংশ কমে গেছে।

মনে করা হচ্ছে, বিশ্বের বাণিজ্য বাজারে করোনা ভাইরাসের বড়সড় প্রভাব পড়েছে, এর জেরেই শেয়ার বাজারের এই অবস্থা।

করোনা ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়া রুখতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ইউরোপ থেকে আগত পর্যটকদের উপর আজ (শুক্রবার) থেকে আগামী ৩০ দিনের জন্যে অস্থায়ী ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর এরপরেই বিশ্বের বাণিজ্য বাজারে পড়ে বড়সড় প্রভাব, শেয়ার কেনাবেচা সাময়িকভাবে প্রায় স্থগিত হয়ে যাওয়ায় তার প্রভাব পড়ল ভারতের শেয়ার বাজারেও।

করোনা ভাইরাস নিয়ে উদ্বেগ গোটা বিশ্বে ছড়িয়েছে। সব দেশই চাইছে যেকোনও প্রকারে এই মারণ ভাইরাসের হাত থেকে রক্ষা পেতে। করোনা প্রাদুর্ভাব এবং এর অর্থনৈতিক প্রভাব থেকে কীভাবে বিশ্বের বাণিজ্যকে বাঁচানো যায় তা নিয়ে ভাবছেন, আর ক্রমশই আরও খারাপ হচ্ছে শেয়ার বাজারের পরিস্থিতি।

উদ্বেগ কমাতে নেওয়া পদক্ষেপগুলি দ্রুত বৈশ্বিক অর্থনীতির পরিস্থিতির মোড় ঘোরাতে পারে এমন আশা করা হলেও বাস্তবে তা ঘটছে না। ফলে আরও আশঙ্কাগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন বিনিয়োগকারীরা। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ যে হারে বাড়ছে তাতে ব্যবসায়িক পরিস্থিতি আরও খারাপ অবস্থায় যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সারা বিশ্ব জুড়ে এক লাখেরও বেশি মানুষ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতের দিকে এই মারণ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ভারতেও একজনের মারা যাওয়ার খবর মিলেছে। এই প্রথম ভারতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে কারো মৃত্যু হল বলে জানিয়েছে সরকারি সূত্র।

বৃহস্পতিবার, বাজার বন্ধের সময় S&P BSE Sensex সূচক ২,৯১৯.২৬ পয়েন্ট বা ৮.১৮ শতাংশ কমে গিয়ে ৯,৫৯০.১৫ এ থেমে যায়, এবং বিস্তৃত NSE Nifty ৮৬8.২৫ পয়েন্ট বা ৮.৩০ শতাংশ হ্রাস পেয়ে সর্বনিম্ন অবস্থায় এসে দাঁড়ায়।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

ফু-ওয়াং সিরামিকের লভ্যাংশ অনুমোদন
এক বছরে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ২০ হাজার কোটি টাকা
ডিএসইতে মোবাইল গ্রাহক-লেনদেন দুটোই কমেছে
বছরজুড়ে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির অনুমোদন পেয়েছে ৯ কোম্পানি
পুঁজিবাজারে লেনদেন বন্ধ আজ
বছরের ব্যবধানে পুঁজিবাজারে লেনদেন বেড়েছে ৪০ শতাংশ
রবিবার পুঁজিবাজার বন্ধ থাকলেও চলবে দাপ্তরিক কার্যক্রম
লোকসানে ৮ খাতের বিনিয়োগকারীরা
সাপ্তাহিক রিটার্নে মুনাফায় ১০ খাতের বিনিয়োগকারীরা
খাতভিত্তিক লেনদেনের শীর্ষে প্রকৌশল খাত