বাংলাদেশের মতো উন্নয়ন পাকিস্তান ও ভারতেও হয়নি: অমর্ত্য সেন

বাংলাদেশের মতো উন্নয়ন পাকিস্তান ও ভারতেও হয়নি: অমর্ত্য সেন
বাংলাদেশ বর্তমান সময়ে অর্থনৈতিক অগ্রগতির দিকে যাচ্ছে। এই অগ্রগতির পেছনে সুচিন্তিত সরকারি পরিকল্পনার পাশাপাশি বেসরকারি অলাভজনক প্রতিষ্ঠানগুলোর অবদান অনেক বেশি। তবে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান নারীদের। তারা এটা অনুধাবন করতে পেরেছিল যে সমাজ চেতনায় নারী-পুরুষের যুক্ত অবদান প্রয়োজন। এই উদ্যোগটিই বাংলাদেশের প্রগতিকে এগিয়ে নিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন নোবেল জয়ী ভারতীয় বাঙালি অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন।

বাংলাদেশের উন্নয়ন সম্পর্কে বলতে গিয়ে নোবেলজয়ী এই অর্থনীতিবিদ বলেন, এদেশের মানুষ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে ব্যাপকভাবে সংযুক্ত। কর্মসংস্থান ও যোগাযোগ অবকাঠামোতে ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। এই উন্নয়ন ভারত কিংবা পাকিস্তানসহ প্রতিবেশী অন্য কোনো দেশে হয়নি। এমনকি বাংলাদেশ যতদিন পাকিস্তানের অধীন ছিল, ততদিন এ দেশে এ রকম উন্নয়ন ছিল না। অবকাঠামো উন্নয়নের উদাহরণ দিয়ে ভারতীয় এ অর্থনীতিবিদ ও দার্শনিক বলেন, ঢাকার মানিকগঞ্জের তার বাবার বাড়ি থেকে বিক্রমপুরে মামার বাড়ি যেতে দুই দিন সময়ের প্রয়োজন হতো। এখন দুই ঘণ্টাও লাগে না।

আজ সোমবার (৯ মার্চ) বিকাল তিনটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভারত থেকে ভিডিও বার্তায় যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। বছরব্যাপী ‘বাংলা ভাষায় অধ্যাপক অমর্ত্য সেন পাঠচক্র, বিষয়: সমৃদ্ধ ও ন্যায্য সমাজের সন্ধানে অমর্ত্য সেন’ শীর্ষক আলোচনার উদ্বোধন উপলক্ষে বাঙলার পাঠশালা ফাউন্ডেশন এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। ফাউন্ডেশনের আয়োজনে বছরব্যাপী ‘সমৃদ্ধ ও ন্যায্য সমাজের সন্ধানে অমর্ত্য সেন’ বিষয়ের ওপরে ১২টি ক্লাস ও চারটি লোকবক্তৃতা অনুষ্ঠিত হবে।

অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক অমর্ত্য সেন বলেন, যে ধরনের কাজের ভিত্তিতে একটা দেশ এগিয়ে যায় বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সফল হয়, সেই ব্যবস্থার মাধ্যমে বাংলাদেশে অন্য দেশের তুলনায় অনেক বেশি সাফল্য এসেছে। এনজিওগুলোর মধ্যে ব্র্যাক, গ্রামীণ ব্যাংক ও গণস্বাস্থ্য সব দিক দিয়েই খুবই সাবলীলভাবে এগিয়ে গেছে। অন্যদিকে সরকারি যে পরিকল্পনা তার মধ্যে রাস্তা ও যোগাযোগ প্রাধান্য পেয়েছে। একসময় যেখানে বাংলাদেশের এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে এক দিনের বেশি লেগে যেত। সেখানে এখন দুই তিন ঘণ্টার মধ্যে যাওয়া যায়।’

তিনি আরও বলেন, মানুষের দায়িত্বশীলতা ও কর্তব্যবোধ নিয়ে আরেকটু চিন্তা করার কারণ রয়েছে। যেটা আমাদের অর্থনীতির আলোচনাতেও তেমন নেই। অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রগতিতে সবচেয়ে বড় অবদান হচ্ছে দায়িত্ববোধ দায়বদ্ধতাকে কতটুকু ছাড়িয়ে যেতে পারছে। মানুষ হিসেবে যা কর্তব্য তা কতটা আমরা করতে পারছি। এই বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে হবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রেহমান সোবহানের সভাপতিত্বে ‘বাংলাদেশে অমর্ত্য সেনের চিন্তার প্রাসঙ্গিকতা’ শীর্ষক মূল বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতি বিষয়ক উপদেষ্টা মসিউর রহমান, সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইদুজ্জামান। এই পাঠচক্রের আহ্বায়ক ছিলেন অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক সিদ্দিকুর রহমান ওসমানী।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

সব ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকা‌বিলায় র‌্যাব প্রস্তুত
নববর্ষের আনন্দ যেন বিষাদের কারণ না হয়
জানুয়ারি থেকে ১০ ডলার করে রেশন পবে রোহিঙ্গারা
নতুন সুদহার নির্ধারণ করল বাংলাদেশ ব্যাংক
নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা মনিটরিং সেল গঠন ইসির
ইনানী–সেন্টমার্টিন রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু
খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন দেশের ২১ শতাংশ মানুষ
ভোটের দিন ঘিরে নাশকতার তথ্য নেই
ব্যাগেজ রুলের অপব্যবহারে ধ্বংস হচ্ছে জুয়েলারি শিল্প
বছর ঘুরলেও প্রবাসী আয়ে গতি ফিরেনি