পাট রপ্তানি আয় ২০ শতাংশ বেড়েছে: পাটমন্ত্রী

পাট রপ্তানি আয় ২০ শতাংশ বেড়েছে: পাটমন্ত্রী
গত অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরে পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি আয় ২০ দশমিক ৮২ শতাংশ বেড়েছে বলে জানিয়েছেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী।

শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর অফিসার্স ক্লাবে পাট দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

পাটমন্ত্রী বলেন, 'চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত সময়ে পাট ও পাটজাত পণ্যে ৬শ ১৬ দশমিক ২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের রপ্তানি আয় করেছি আমরা। এই আয় গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ২০ দশমিক ৮২ শতাংশ বেশি।’

প্রতিবছর ৬ মার্চকে জাতীয় পাট দিবস ঘোষণা দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে অনেক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়ে গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক বাজারে পাট পণ্যের বিস্তার ঘটেছে। অনেকে আগে বলতো পাট মরে গেছে, কিন্তু এখন থেকে মনে করতে হবে পাঠ জেগে উঠেছে।’

বাংলাদেশ ২৮২টি পাটজাত পণ্য উৎপাদন করছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘প্লাস্টিকের অতি ব্যবহারের ফলে পরিবেশের ক্ষতি বেড়েছে। পরিবেশ রক্ষায় পাটের তৈরি বহুমুখী পাটপণ্য উৎপাদন করছে বাংলাদেশ। আমরা ইতোমধ্যে ২৮২টি বহুমুখী পণ্য উৎপাদন করছি। যা অনেকেই জানেন না। তাদের কাছে অনুরোধ আপনারা পাট মেলায় যাবেন এবং পাট সম্পর্কে জানবেন। সেখানে গেলে কোনো না কোনো পণ্য আপনাদের পছন্দ হবেই। এ বিশ্বাস আমাদের আছে।’ এ সময় পাটখাতে অংশীজন সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন মন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত বাণিজ্যমন্ত্রী টিমু মন্সী বলেন, ‘একটা সময় আমরা পাট দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতাম। কিন্তু আমরা সে অবস্থান ধরে রাখতে পারিনি। এখন আমরা আবারও ঘুরে দাঁড়িয়েছি। আমাদের পাটের সোনালী আঁশের স্বপ্ন শুরু হয়েছে। এটি আমরা নিশ্চিত করবো। আর বেশি দিন নেই যেখানে বিশ্ব বাজারে পলিথিন ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হবে।’

পাট দিয়ে শুধু ছালার বস্তা তৈরি হয় সে ধারণা পাল্টেছে বলে মনে করেন বাণিজ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘এখন পাট দিয়ে বিভিন্ন রকমের গিফট আইটেম তৈরি হয়। আমাদের দেশে যখন বিদেশি কোন কূটনীতিক আসে তখন আমরা তাদের পাটের তৈরি বিভিন্ন গিফট আইটেম দিয়ে থাকি। তারা সেগুলো সে দেশে নিয়ে যায় এব বিশ্বময় এগুলো তুলে ধরেন। এটাও আমাদের একটা অর্জন।’

শিগগিরই ‘পাটের সোনালী দিন’ ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে এমন আশা প্রকাশ করে টিপু মুন্সী বলেন, ‘অনেক কষ্টে চাষিরা এ পাটের শিল্পকে টিকিয়ে রেখেছেন। এজন্য আমাদের প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে অনেক সচেষ্ট। তাই এ পাঠের উৎপাদন যেন আরও বাড়ানো যায় সেজন্য পাট মন্ত্রণালয়কে যথেষ্ট দিক নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন। এতে আমার বিশ্বাস খুব শিগগিরই আমরা পাটের সোনালী দিন ফিরিয়ে আনতে পারব। আজকে জাতীয় পাট দিবসে সোনালী আঁশ যেন আমাদের মনে আশা জাগায় সে প্রত্যাশা আমাদের।’

বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব লোকমান হোসেন মিয়া বলেন, ‘এ দেশে এক সময় সোনালী আঁশ ছিল পাট। কিন্তু ৭৫ পরবর্তী সময়ে পাট শিল্প অবহেলিত খাতে পরিণত হয়। পরে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর পাটকে নিয়ে নতুন ভাবনা শুরু হয় এবং পাটের সোনালী ভবিষ্যৎ কিভাবে কাজে লাগানো যায় সেটি নিয়ে কাজ শুরু হয়। আর এতে গত ১৬ সালের পর থেকে পাটের উৎপাদন এবং সরবরাহসহ বিশ্বব্যাপী চাহিদা বাড়তে থাকে। তাই বিশ্বব্যাপী ৬৫টি দেশে পাটকে ব্যবহার নিশ্চিত করতে পলিথিন ব্যবহার বন্ধ করা হয়েছে।’

পর্তুগালের তারকা ফুটবলার ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর পায়ের জুতা বাংলাদেশি পাট দিয়ে তৈরি হয় এমন তথ্য জানিয়ে সচিব বলেন, 'বিশ্ব ফুটবলার রোনালদোর পায়ের সু বাংলাদেশের পাট দিয়ে তৈরি হয়। যেটি আর কোথাও বিক্রি হয় না। সরাসরি তাদের কাছে পাঠিয়ে দেয়া হয় উৎপাদনের পর। তাই সবার কাছে অনুরোধ আমরা যখন প্রিয়জনকে উপহার দেই এবং বিদেশিদের গিফট আইটেম পাঠিই সেসময় যেন পাটের পণ্য দেয়া হয়। এতে পাটের বিস্তার ঘটবে।'

অনুষ্ঠান শেষে চার দিনব্যাপী পাট মেলার উদ্বোধন ঘোষণা করেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর। এসময় তিনি মেলা প্রাঙ্গন ঘুরে দেখেন। এর আগে বস্ত্র ও পাট খাতে বিশেষ অবদানের জন্য ১১টি ক্যাটাগরিতে ১১ জনকে পুরস্কৃত করা হয়।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি মির্জা আজম, পাট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) সওদাগর মোস্তাফিজুর রহমানসহ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

সব ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকা‌বিলায় র‌্যাব প্রস্তুত
নববর্ষের আনন্দ যেন বিষাদের কারণ না হয়
জানুয়ারি থেকে ১০ ডলার করে রেশন পবে রোহিঙ্গারা
নতুন সুদহার নির্ধারণ করল বাংলাদেশ ব্যাংক
নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা মনিটরিং সেল গঠন ইসির
ইনানী–সেন্টমার্টিন রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু
খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন দেশের ২১ শতাংশ মানুষ
ভোটের দিন ঘিরে নাশকতার তথ্য নেই
ব্যাগেজ রুলের অপব্যবহারে ধ্বংস হচ্ছে জুয়েলারি শিল্প
বছর ঘুরলেও প্রবাসী আয়ে গতি ফিরেনি