মাশরাফিকে আবেগঘন বিদায় মুশফিক-তামিমদের

মাশরাফিকে আবেগঘন বিদায় মুশফিক-তামিমদের
অন্য সব দিন সাধারণত স্ট্রেচিংয়ের পর শুরু হয় ফুটবল খেলা বা নানা কসরতে গা গরম পর্ব। এ দিন একটু ব্যতিক্রম। স্ট্রেচিংয়ের পর মাঠে গোল হয়ে বসলেন ক্রিকেটারদের সবাই। দাঁড়ানো শুধু একজন, মাশরাফি বিন মুর্তজা। নেতৃত্ব ছাড়ার সিদ্ধান্তের কথা সতীর্থদের সেখানেই জানিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। সবাইকে ছুঁয়ে গেছে অধিনায়কের বিদায়ের ঘোষণা।

পরদিন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের শেষ ওয়ানডে, তাই প্রস্তুতির ব্যাপারও ছিল। অনুশীলন শেষে ক্রিকেটাররা জানালেন প্রতিক্রিয়া। সবার কথায় ফুটে উঠেছে অধিনায়ক মাশরাফির বিশালত্ব, এই দলে ও দেশের ক্রিকেটে তার অবদান।

মুশফিকুর রহিম: মাশরাফি ভাইয়ের রিপ্লেসমেন্ট কখনও আসবে না। পাশাপাশি এটিও বলব, মাশরাফি ভাই পরিবারের একটি অংশ। শুধু আমাদের জন্য বড় ভাই-ই নন, মাশরাফি ভাই আমাদের একাংশ। অধিনায়ক হিসেবে তাকে অনেক মিস করব।

উনি অধিনায়ক হওয়ার পর আমাদের দলকে আমূল বদলে দিয়েছেন। মাঠের ভেতরই নয় শুধু, মাঠের বাইরেও অনেক বদলে দিয়েছেন। অবশ্যই অনেক মিস করব। আশা করব, উনি যতদিন পারেন যেন খেলা চালিয়ে যেতে পারেন। উনার নেতৃত্বে খেলা বা উনার সঙ্গে খেলার অন্যরকম মেজাজ আছে। আশা করি বাংলাদেশকে ভবিষ্যতেও অনেক কিছু দিতে পারবেন।

মাহমুদউল্লাহ: মাশরাফি ভাই যখন অধিনায়ক ছিলেন, ভাই, বন্ধু বা অধিনায়ক যাই বলেন, আমি পুরো সময়টা খুব উপভোগ করেছি। প্রায় ৬ বছর উনি অধিনায়কত্ব করেছেন। অনেক সাফল্যও পেয়েছেন। উনার পরবর্তী জীবনের জন্য শুভকামনা জানাচ্ছি এবং এটায় কোনো সন্দেহ নেই যে উনি বাংলাদেশের একজন কিংবদন্তি।

তামিম ইকবাল : এত অল্প সময়ে মাশরাফি ভাইকে নিয়ে কথা বলা কঠিন। বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য উনি যা করেছেন তা কোনো ক্রিকেটার, ক্রিকেট বোর্ড, বাংলাদেশের ক্রিকেটের সমর্থক কারও কোনোদিন ভোলা উচিত নয়। আমাদের সবার মনের ভেতর থাকা উচিত। ২০১৫ সালে আমরা একটি জায়গায় ছিলাম, ২০১৯ সালে একটা অবস্থায় এসেছি। উনার হাত ধরেই। ওয়ানডেতে বিশেষ করে গোটা ক্রিকেট বিশ্ব আমাদের এখন যেভাবে মূল্যায়ন করে, এটা উনার জন্যই সম্ভব হয়েছে। আমার জন্য, আমাদের জন্য যা করেছেন, কখনোই ভোলার নয়।

আমার পক্ষ থেকে উনাকে শুভ কামনা জানাই। খেলোয়াড় হিসেবে তাকে এখনও পাব আমরা। আশা করি আরও অনেক দিন তাকে পাব আমরা।

লিটন কুমার দাস : মিস তো করবই। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সেরা অধিনায়ক তিনি। ক্রিকেটারদের যেভাবে সমর্থন করে গেছেন, এটা বলার মতো নয়। বিশেষ করে জুনিয়র ক্রিকেটারদের। আমার যখন অভিষেক হয়, উনার নেতৃত্বে খেলেছি। আমার জন্য সেটি বড় পাওয়া। আমার পাশে থেকেছেন সবসময়। নতুন যারাই আসে দলে, সবাইকে সমর্থন করেন। অধিনায়ক যখন একজন ক্রিকেটারের এত জোর দিয়ে পাশে থাকে, সেটা অনেক বড় ব্যাপার। উনার ভেতর এই ব্যাপারটি অনেক বেশি আছে। আমরা তাকে অনেক মিস করব।

মোহাম্মদ মিঠুন : আমরা সবাই জানি অধিনায়ক হিসেবে তিনি ক্রিকেটারদের কাছে কেমন ছিলেন। বড় ভাই হিসেবে তিনি অসাধারণ। আমরা যে কোনো সমস্যা হলেই তার কাছে যেতাম। তিনি বুদ্ধি দিয়ে হোক, নিজে চেষ্টা করে হোক, সবসময় যে কোনো সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেছেন।

আমি কিছুক্ষণ আগেই শুনেছি, উনি আর অধিনায়কত্ব করছেন না। এটাই শেষ ম্যাচ। অবশ্যই উনাকে অনেক বেশি মিস করব। তারপরও তার সঙ্গে যেখানেই খেলব, অধিনায়ক না থাকলেও সবাই তাকেই নেতা হিসেবে চিন্তা করব।
মুস্তাফিজুর রহমান

জানার পর থেকেই মন খারাপ। ভাইয়ের কোনো ব্যাখ্যা নাই আমার কাছে। আমাকে তিনিই নিয়ে এসেছিলেন দলে। আমার মন এখনও খারাপ।

তাইজুল ইসলাম : আমার ক্ষেত্রে শুধু বলব না, বাংলাদেশের প্রত্যেকটা খেলোয়াড়ের জন্যই মাশরাফি ভাইয়ের প্রভাব খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যখন নতুন, জাতীয় দলে ঢুকেছি, আসলে তখনের সহায়তা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এটা যেকোনো পর্যায়ের ক্রিকেটারের জন্যই অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এদিক থেকে মাশরাফি ভাইয়ের সমর্থন অন্যরকম ছিল। অধিনায়ক বলেন আর ব্যক্তি মানুষ হিসেবে, আমরা তাকে অনেক মিস করব।

আল আমিন হোসেন: অধিনায়ক হিসেবে তো বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল। তিনি যতদিন খেলেছেন আমাদের আগলে রেখেছেন। কখনও অভ্যন্তরীণ বা বাইরের নেতিবাচক বিষয়গুলো আমাদের বুঝতেই দেননি, তিনি দারুণভাবে সব সামলেছেন। অধিনায়ক হিসেবে তিনি আরও কিছুদিন আমাদের সাথে থাকলে ভালো হতো। কিন্তু এ বিষয়গুলো নীতিনির্ধারক যারা আছে, তারা যেটা ভালো মনে করবে সেটাই করবে। অধিনায়ক হিসেবে কালকেই তার শেষ। আমি দোয়া করব, ভাই যেন খেলোয়াড় হিসেবে হলেও আরও কিছুদিন আমাদের সঙ্গে থাকেন।

মেহেদী হাসান মিরাজ : অনেকগুলো ওয়ানডে খেলেছি। প্রায় ৪০টার মতো ওয়ানডে খেলা হয়েছে। যে কয়দিনই ছিলাম, খুবই আগলে রেখেছে সবাইকে। আমরা বেশিই মিস করব। বিশেষ করে আমরা যারা তাকে অল্প পেয়েছি। তারপরও যতটুকু পেয়েছি, নিজেকে সৌভাগ্যবান বলতে হয়। তার নেতৃত্বে খেলেছি, এটা জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া ছিল। অনেক সিরিজ জিতেছি তার নেতৃত্বে। অনেক মিস করব।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

২০২৩ সালে বাংলাদেশের সেরা কারা?
সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েই বছর শেষ করলেন রোনালদো
টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের সাফল্যের হার ৭১ শতাংশ
ইতিহাস গড়া হলো না বাংলাদেশের
ক্রিকইনফোর বর্ষসেরা ওয়ানডে একাদশে বাংলাদেশের নাহিদা
বাংলাদেশ ম্যাচে কে এই নারী আম্পায়ার
সুখের মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে বেরসিক বৃষ্টির জয়
টাইগারদের আগামী বছরের কর্মসূচিতে নেই অস্ট্রেলিয়া-ইল্যাংন্ড
মাশরাফির দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড ভাঙলেন সোহান
২০২৬ বিশ্বকাপের সূচি ঘোষণা হতে পারে জানুয়ারিতে