ঋণ বিতরণের শর্ত শিথিল

ঋণ বিতরণের শর্ত শিথিল
ব্যাংকগুলোকে নিজস্ব নীতিমালা অনুযায়ী ভোক্তা, ক্ষুদ্র ও স্বল্পমেয়াদি কৃষিঋণ বিতরণ করার অনুমতি দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে জারি করা সর্বশেষ নীতিমালা ইন্টারনাল ক্রেডিট রিস্ক রেটিং (আইসিআরআর) অনুসরণের প্রয়োজন হবে না। ব্যাংকের পাশাপাশি আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বীমা সংস্থা, মাইক্রোফিন্যান্স প্রতিষ্ঠান, মার্চেন্ট ব্যাংক, স্টক ব্রোকারেজ এবং বেসরকারি সংস্থাগুলোকেও এই সুবিধার আওতায় আনা হয়েছে। এসব ঋণ বিতরণে প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের নিজস্ব ঋণঝুঁকি ব্যবস্থাপনার সরঞ্জাম এবং ঝুঁকি নিরসন কৌশল ব্যবহার করতে পারবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে এ-সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন বুধবার জারি করা হয়। দেশের সব তফসিলি ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের কাছে এটি পাঠানো হয়েছে। এতে বলা হয়, সব ধরনের ঋণ বিতরণে আইসিআরআর নীতিমালা অনুসরণ করতে হবে। তবে ভোক্তা ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে ৫০ লাখ টাকার বেশি এবং উৎপাদনশীল ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের সর্বোচ্চ এক কোটি টাকা ঋণ দেওয়ার জন্য নিজস্ব নিয়ম অনুসরণ করতে পারবে ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বীমা সংস্থা, মাইক্রোফিন্যান্স প্রতিষ্ঠান, মার্চেন্ট ব্যাংক, স্টক ব্রোকারেজ ও বেসরকারি সংস্থা।

প্রসঙ্গত, দেশের ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণ উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছার প্রেক্ষাপটে ২০১৯ সালের ১৭ জানুয়ারি বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) মিলনায়তনে ঋণের ঝুঁকি পরিমাপের নতুন নীতিমালা উদ্বোধন করেন গভর্নর ফজলে কবির। ইন্টারনাল ক্রেডিট রিস্ক রেটিং (আইসিআরআর) নামের এই নীতিমালায় ঋণের পরিমাণ ও গুণগত উভয় ধরনের সক্ষমতার মূল্যায়ন শর্ত রাখা হয়। নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, এই শর্তগুলো পূরণ না করেও ঋণ পাবেন গ্রাহক।

মূল্যায়নের ভিত্তিতে গ্রাহককে চার শ্রেণিতে বিভাজন করবে ব্যাংকগুলো। কোনো গ্রাহক ‘চমৎকার’ (এক্সিলেন্ট) বা ‘ভালো’ (গুড) রেটিং পেলে ব্যাংক তাকে অর্থায়ন করতে পারবে। ‘প্রান্তিক’ (মার্জিনাল) রেটিংধারী গ্রাহককে পুরনো ঋণ নবায়ন বা নতুন করে ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। তবে ‘অগ্রহণযোগ্য’ রেটিংধারীকে কোনো পরিস্থিতিতেই নতুন ঋণ দিতে পারবে না ব্যাংকগুলো, যদি না আগের ঋণ শতভাগ নগদ পরিশোধ হয় বা জামানত দিয়ে ঋণটি আচ্ছাদন করা হয়। ‘অগ্রহণযোগ্য’ (আনএকসেপ্টেবল) রেটিংভুক্ত গ্রাহকের আগের ঋণ সর্বোচ্চ দুবার নবায়ন বা বর্ধিত করা যাবে।

নীতিমালায় আরও বলা হয়েছে, রেটিং করার ক্ষেত্রে একটি পার্টি বা গ্রাহকের পরিমাণগত সক্ষমতায় ৬০ শতাংশ নম্বর এবং গুণগত সক্ষমতায় ৪০ শতাংশ নম্বর থাকবে। পরিমাণগত সক্ষমতা সূচকে ৬০ নম্বরের মধ্যে মোট গৃহীত ঋণ ও আর্থিক সক্ষমতায় ১০, চলতি দায় ও তরল সম্পদে ১০, মুনাফার সক্ষমতায় ১০, সুদ পরিশোধের সক্ষমতা ও নগদ প্রবাহের ওপর ১৫, পরিচালনগত দক্ষতায় ১০ এবং ব্যবসার মানের ওপর পাঁচ নম্বর থাকবে।

এ ছাড়া গুণগত সক্ষমতায় ৪০ নম্বরের মধ্যে কার্যদক্ষতার আচরণে (পারফরম্যান্স বিহ্যাবিয়র) ১০, ব্যবসা ও খাত ঝুঁকিতে সাত, ব্যবস্থাপনা ঝুঁকিতে সাত, জামানত ঝুঁকিতে ১১, সম্পর্ক ঝুঁকিতে তিন, পরিপালন ঝুঁকিতে দুই নম্বর থাকবে। এই রেটিংয়ে কোনো গ্রাহক ৮০-এর বেশি নম্বর পেলে তাকে ‘চমৎকার’, ৭০-এর বেশি এবং ৮০-এর কম নম্বর পেলে ‘ভালো’, ৬০-এর বেশি এবং ৭০-এর কম পেলে ‘প্রান্তিক’ এবং ৬০-এর নিচে নম্বর পেলে ‘অগ্রহণযোগ্য’ রেটিং দেয়া হবে। তবে কোনো গ্রাহক গুণগত রেটিংয়ে যত নম্বরই পাক না কেন, পরিমাণগত রেটিংয়ে ৫০ শতাংশ নম্বর না পেলে তাকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ রেটিং দেয়া হবে।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

বিদেশি ডেবিট কার্ডে অর্থ তোলা বন্ধ করল ইবিএল
এসবিএসি ব্যাংকের নতুন এএমডি নূরুল আজীম
বছরজুড়ে আলোচনায় খেলাপি ঋণ, সুদহার ও বিনিময়হার
বিকাশের প্রধান যোগাযোগ কর্মকর্তা মাহফুজ মারা গেছেন
ন্যাশনাল ব্যাংকের নতুন পর্ষদের ৩ কমিটি গঠন
ব্যাংকে চাকরির আবেদনের বয়সসীমা শিথিল
মাসিক সঞ্চয় হিসাব খোলা যাচ্ছে বিকাশ অ্যাপে
ফের এবিবির চেয়ারম্যান সেলিম আর এফ হোসেন
অফিসার পদে ৭৮৭ জনকে নিয়োগ দেবে সরকারি ৫ ব্যাংক
ন্যাশনাল ব্যাংকের নতুন পরিচালক হলেন যারা