বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মেগা প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে, যার আওতায় রয়েছে ছয় স্তরের কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা তার নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে শুরু করে গুলশান এলাকার তার বাসভবন ফিরোজা পর্যন্ত পুরো এলাকা নিরাপত্তার চাদরে আচ্ছাদিত থাকবে। বিশেষভাবে, এভারকেয়ার হাসপাতাল, বিমানবন্দর এবং তিনশ’ ফিট রোড এলাকা ড্রোন উড়ানো নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
নিরাপত্তার পরিকল্পনা অনুযায়ী, তারেক রহমানের চারপাশে ১২ ঘণ্টা ধরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা নিরাপত্তা টানেল তৈরি করবে। ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) থেকে প্রায় ১৫০-২০০ সাদা পোশাকধারী সদস্য মোতায়েন করা হবে, যারা তার কনভয়ের সঙ্গী হয়ে তাকে নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছাবে। এছাড়া, সেনাবাহিনী, র্যাব, বিজিবি ও অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থা একযোগে নিরাপত্তার তদারকি করবে।
এদিকে, তারেক রহমানের সমাবেশ উপলক্ষে স্থাপিত মঞ্চের উচ্চতা ১৫ ফুট পর্যন্ত করা হয়েছে। স্নাইপার হামলা ও গ্রেনেড নিক্ষেপের সম্ভাবনা মাথায় রেখে মঞ্চের অবস্থান সাতবার পরিবর্তন করা হয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনীর পক্ষ থেকে প্রতিবারই স্নাইপার অ্যাটাকের মহড়া অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং মঞ্চের চারপাশে বুলেটপ্রুফ কাঁচ স্থাপন করা হয়েছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেছেন, ‘তারেক রহমানের নিরাপত্তায় কোনো রকম শঙ্কা নেই। ডিএমপি ও অন্যান্য সংস্থাগুলি সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে।’
সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, সিএসএফ, সেনাবাহিনীর এয়ার ডিফেন্স ইউনিট, ডিবি, র্যাব, বিজিবি, ব্যাটালিয়ন আনসারসহ বিভিন্ন সংস্থা তাদের সর্বোচ্চ প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা উঁচু ভবনের ছাদেও অবস্থান নিয়েছেন, যাতে স্নাইপার হামলার কোনো সুযোগ না থাকে।
ডিএমপি কমিশনার একটি গণবিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, তারেক রহমানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এভারকেয়ার হাসপাতাল এবং তার চলাচলের সড়ক পথে যেকোনো প্রকার ড্রোন উড়ানো নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ড্রোন উড্ডয়ন করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে, বিএনপি পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, দলের নেতারা শুধুমাত্র বিমানবন্দরে তারেক রহমানকে শুভেচ্ছা জানাতে যাবেন। অতিরিক্ত নিরাপত্তার জন্য বিমানবন্দরের অভ্যর্থনাস্থল ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আলাদা নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হবে।
তারেক রহমানের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে সিএসএফ সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে এবং দশ হাজারেরও বেশি স্বেচ্ছাসেবকও নিরাপত্তা কাজে সহায়তা করবেন। এছাড়া, তার দেশে ফেরার পর, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটের দুটি কেবিন ক্রু সদস্যকেও প্রত্যাহার করা হয়েছে, যাতে তার নিরাপত্তা কোনোভাবেই বিঘ্নিত না হয়।