ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালনা পর্ষদের দুইটি শূন্য পদে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মো. হানিফ ভুঁইয়া ও মো. সাজেদুল ইসলাম শেয়ারহোল্ডার পরিচালক পদে নির্বাচিত হয়েছেন। গত ১৫ ডিসেম্বর গঠিত নির্বাচন কমিশন আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁদের পরিচালক হিসেবে নির্বাচিত ঘোষণা করে। আগামীকাল ১৮ ডিসেম্বর ডিএসই’র ৬৪তম বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) তাঁরা আনুষ্ঠানিকভাবে পরিচালনা পর্ষদে অন্তর্ভুক্ত হবেন।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) ডিএসই থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
ডিএসই’র পরিচালনা পর্ষদের দুইটি শূন্যপদে নির্বাচন পরিচালনার লক্ষ্যে গত ১৪ অক্টোবর অনুষ্ঠিত ডিএসই’র ১১০১তম বোর্ড সভায় অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি (বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশন) মো. আব্দুস সামাদকে চেয়ারম্যান করে তিন সদস্যবিশিষ্ট নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়। কমিশনের অপর দুই সদস্য ছিলেন ডিএসই’র শেয়ারহোল্ডার প্রতিনিধি মোহাম্মদ ইব্রাহিম এবং ড. মো. জহিরুল ইসলাম।
নির্বাচন কমিশন দুজন শেয়ারহোল্ডার পরিচালক নির্বাচনের জন্য ২৮ অক্টোবর নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করে। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ১৩ নভেম্বর থেকে ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত (অফিস চলাকালীন সময় বিকাল ৫টা পর্যন্ত) মনোনয়নপত্র গ্রহণ করা হয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে রেপিড সিকিউরিটিজ লিমিটেডের শেয়ারহোল্ডার প্রতিনিধি মো. হানিফ ভুঁইয়া এবং শ্যামল ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের শেয়ারহোল্ডার প্রতিনিধি মো. সাজেদুল ইসলাম মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। অন্য কোনো প্রার্থী না থাকায় তাঁরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।
উল্লেখ্য, ডিএসই’র ৬৪তম বার্ষিক সাধারণ সভায় বর্তমান শেয়ারহোল্ডার পরিচালক মোহাম্মদ শাহজাহান এবং মো. শাকিল রিজভী অবসর গ্রহণ করবেন।
মো. হানিফ ভূঁইয়া বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের একজন সু-পরিচিত ব্যক্তিত্ব৷ তিনি পুঁজিবাজারের সাথে দীর্ঘদিন যাবত সম্পৃক্ত থেকে অত্যন্ত সুনামের সাথে শেয়ার ব্যবসা পরিচালনা করে যাচ্ছেন৷ মো. হানিফ ভুঁইয়া ১৯৯৫ সালে ডিএসই’র সদস্য হিসেবে কাজ শুরু করেন এবং ২০০৬ সালে ডিএসই’র কর্পোরেট সদস্য রেপিড সিকিউরিটিজ নামে আত্মপ্রকাশ করেন৷ বর্তমানে তিনি উক্ত ব্রোকারজ হাউজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক৷
তিনি মার্চ ২০০২ থেকে ফেব্রুয়ারী ২০০৫ সাল পর্যন্ত কাউন্সিলর, মার্চ ২০০৭ থেকে মার্চ ২০১০ সাল এবং মার্চ ২০১২ থেকে ফেব্রুয়ারী ২০১৪ সাল পর্যন্ত ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন৷ তিনি ২৩ মার্চ ২০১৭ সালে ডিমিউচ্যুয়ালাইড ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ চতুর্থবারের মত পরিচালক নির্বাচিত হন৷ তিনি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক হিসেবে দীর্ঘদিন সফলতারভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং দেশের ক্রিকেট উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। এছাড়াও ক্রীড়ায় বিশেষ কৃতিত্বের জন্য তিনি জাতীয় পুরস্কার অর্জন করেন।
এছাড়া অত্যন্ত দক্ষ, কর্মঠ ও অভিজ্ঞ পুঁজিবাজার বিশ্লেষক মো. সাজেদুল ইসলাম ২০০৬ সাল থেকে পুঁজিবাজারের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে সুনামের সাথে ব্যবস্যা পরিচালনা করে আসছেন৷ তার শ্যামল ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড ১৯৯৩ সালে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সদস্যপদ অর্জন করে। বর্তমানে তিনি প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন৷ পুঁজিবাজারের একজন অভিজ্ঞ ব্যক্তিত্ব হিসেবে তিনি প্রতিষ্ঠানের কৌশল প্রণয়ন, কার্যক্রম পরিচালনা, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা, নীতিমালা অনুসরণ এবং ব্যবসা সম্প্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ ও ধারাবাহিক ভূমিকা রেখে আসছেন।
পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংগঠনে মো. সাজেদুল ইসলামের রয়েছে সক্রিয় নেতৃত্ব। তিনি ২০২১ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সিনিয়র সহ-সভাপতি, এর আগে ২০২০ থেকে ২০২১ পর্যন্ত সহ-সভাপতি এবং ২০১৬ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০২৪ সাল থেকে তিনি ডিএসই ব্রোকার্স ক্লাবের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
সাজেদুল ইসলাম ২০০৬ সাল থেকে তিনি ইউনিয়ন অক্সিজেন পিএলসি এবং মুসাফা কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি এম.কম (ম্যানেজমেন্ট) এবং এমবিএ (ফাইন্যান্স ও ব্যাংকিং) ডিগ্রিধারী। ব্যবসা উন্নয়ন, মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা এবং পুঁজিবাজার-সংক্রান্ত আইন বিষয়ে তাঁর দক্ষতা উল্লেখযোগ্য। পাশাপাশি তিনি ঢাকা ক্লাব, ধানমন্ডি ক্লাব, পূর্বাচল ক্লাব এবং মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের সদস্য। পুঁজিবাজার-বিষয়ক বিভিন্ন সভা, সেমিনার ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের জন্য তিনি যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য, জাপানসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ সফর করেছেন।
এমকে