অনাপত্তিপত্র ছাড়াই বিদেশ চলে গেলেন নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিকা

বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনাপত্তিপত্র (এনওসি) না নিয়েই আমেরিকা চলে গেলেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ফারহানা রিয়া দিবা।

জানা গেছে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম.ফিল. করার জন্য ২ বছরের শিক্ষাছুটিতে রয়েছেন তিনি, যা শুরু হয় ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে। তবে শিক্ষাছুটির মেয়াদের শেষ সময়ে আমেরিকা গিয়েছেন তিনি। সূত্র মতে, চলতি বছরের অক্টোবর মাসে আমেরিকা গমন করেন তিনি এবং এখনও সেখানে অবস্থান করছেন।

তবে দপ্তরসূত্রে জানা গেছে, সরকারি চাকরিজীবীদের দেশের বাইরে যাওয়ার জন্য প্রতিষ্ঠান থেকে যে অনাপত্তিপত্র নিতে হয়, সেই অনুমোদন নেননি তিনি।

শিক্ষিকার এম.ফিল. সুপারভাইজার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মমিনুল ইসলাম বলেন, তাঁর এম.ফিল. সম্পূর্ণ হয়নি। আর আমার সঙ্গে অনেক দিন যোগাযোগ নেই। দেশের বাইরে গিয়েছেন কি না, সে বিষয়েও জানি না।

এবিষয়ে ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের বিভাগীয় প্রধান রায়হানা আক্তার বলেন, তাঁর দেশের বাইরে যাওয়ার বিষয়টি আমি অন্য সহকর্মীদের কাছ থেকে শুনেছি। তবে আমাকে তিনি এ বিষয়ে কিছু জানাননি। আর অনাপত্তিপত্রও নেননি। তবে ঘটনা যদি সত্য হয়ে থাকে এবং তিনি যদি আসলেই এভাবে দেশের বাইরে গিয়ে থাকেন, তাহলে বিষয়টিতে চাকরির বিধিমালা লঙ্ঘিত হয়েছে। আশা করছি, প্রশাসন আইন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।

কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হুদা বলেন, তাঁর বিদেশ গমনের বিষয়টি আমি জানি না। এ বিষয়ে বিভাগ থেকে অবগত করলে জানতে পারব। পরবর্তীতে প্রশাসন উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে।

এবিষয়ে রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান বলেন, চাকরিরত অবস্থায় অবশ্যই কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিয়ে দেশের বাইরে যেতে হবে। অনুমতি ছাড়া যাওয়ার সত্যতা পেলে আইন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তবে সহকারী অধ্যাপক ফারহানা রিয়া দিবাকে হোয়াটসঅ্যাপ এবং মেসেঞ্জারে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি এড়িয়ে যান। পরবর্তীতে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি। তবে ফেসবুকে নিয়মিত সক্রিয় থাকতে দেখা গেছে তাঁকে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, শিক্ষাছুটিতে থাকা অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের বেতন-ভাতা প্রদান করে থাকে। এই বেতন নেওয়ার পরও ছুটি শেষে বিভাগে না ফিরে অন্য দেশে থেকে যাওয়ার নজির রয়েছে। এমন ঘটনা হলে প্রশাসনের অবশ্যই বেতনের সমপরিমাণ টাকা ফেরত নিতে হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, এম.ফিল. কিংবা পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের জন্য শিক্ষাছুটিতে থাকা অবস্থায়ও শিক্ষকদের বেতন-ভাতা প্রদান করে থাকে বিশ্ববিদ্যালয়। এই বেতন নেওয়ার পরও ডিগ্রি নেওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ে না ফিরে অন্য দেশে চলে যাওয়া সম্পূর্ণ অনৈতিক এবং প্রতারণার শামিল। এই ধরনের কার্যকলাপ দেশকে পিছিয়ে দিচ্ছে। এমন ঘটনা হলে প্রশাসনের অবশ্যই বেতনের সমপরিমাণ টাকা ফেরত নিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

শেয়ার করুন:-
শেয়ার