দুর্বৃত্তের ছোড়া গুলি ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদির বাম কানের নিচে ঢুকে ডান কানের ওপরে ক্রস হয়ে বেরিয়ে গেছে। একটি গুলিই ছুড়েছে দুর্বৃত্ত। ডিবি কর্মকর্তাদের ধারণা, দুর্বৃত্তরা আগে থেকেই তাকে গুলি করার পরিকল্পনা করেছিল। সেই অনুযায়ী সময় ও স্থান বেছে নেওয়া হয়।
শুক্রবার ছুটির দিন যানজট থাকে না। সড়ক ফাঁকা থাকে। এই সুযোগ তারা বেছে নিয়েছে। শুটার গ্রুপ তার পিছু নিয়ে অপারেশন সাকসেস করে পালিয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত গোয়েন্দারা শুটারদের কোনো অবস্থান শনাক্ত করতে পারেনি।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি সূত্র বলছে, গুলিতে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে অন্তত এক জনসহ সন্দেহভাজন পাঁচ জন গোয়েন্দা নজরদারিতে রয়েছে।
সূত্র জানায়, গুলির ঘটনায় মাঠ পর্যায়ে তথ্য সংগ্রহ করেছে পুলিশ, ডিবি ও র্যাব। কেন, কারা এবং কী উদ্দেশ্যে তার ওপর গুলি করেছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি হাদির গুলির ঘটনার বিষয়টি উদ্ঘাটনের স্বার্থে একাধিক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। হাদিকে গুলির পর কেউ যাতে প্রতিরোধ করতে না পারে তার রিকশার আগে ও পিছে দুর্বৃত্তদের কোনো গাড়ি ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
এছাড়াও সিসি ক্যামেরায় আশপাশের লোকজনের গতিবিধিও পর্যবেক্ষণের জন্য রাখা হয়েছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ, ঘটনাস্থলের ফুটেজ এবং প্রাপ্ত অন্যান্য তথ্য ও উপাত্ত বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। ফুটেজে মোটরসাইকেলের পেছনে বসে গুলি করতে দেখা যাওয়া ব্যক্তির চেহারার সঙ্গে ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খানের চেহারা মিল রয়েছে। পুলিশ তাকেই এই হামলার মূল সন্দেহভাজন বলে মনে করছে। এর আগেও ফয়সাল করিমের বিরুদ্ধে গুরুতর অপরাধের অভিযোগ রয়েছে।
গত বছরের নভেম্বর মাসে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের আদাবর এলাকায় একটি অফিসে ঢুকে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুট ও ডাকাতির ঘটনায় তিনি র্যাবের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন। ঐ সময় একাধিক মূলধারার সংবাদমাধ্যমে তার ছবিসহ খবর প্রকাশিত হয় এবং তিনি মামলার প্রধান আসামি ছিলেন। পরে তিনি জামিনে কারাগার থেকে ছাড়া পান। শুটার ফয়সালসহ মোটরসাইকেলে আরো এক জনকে ধরতে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।
ডিবি জানিয়েছে, ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছবির ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে শনাক্ত করা গেছে এবং পুলিশ তাকে হন্যে হয়ে খুঁজছে। তাকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য পুলিশ জনগণের প্রতি বিনীত অনুরোধ করেছে।
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার শফিকুল ইসলাম গতকাল শনিবার বিকালে জানান, হাদিকে কারা গুলি করেছে তাদের চিহ্নিত করার জন্য আমরা কাজ করছি। এখনো পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম বিভাগের পরিচালক উইং কমান্ডার এম জেড এম ইন্তেখাব চৌধুরী জানান, ‘আমরা ছায়া তদন্ত করছি। আমাদের টিম মাঠে কাজ করছে।’
এমকে