ক্যাটাগরি: রাজনীতি

ঘোষিত সময়ের মধ্যেই নির্বাচন হতে হবে: ড. হেলাল

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনোনীত ঢাকা-৮ আসনে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের প্রার্থী এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন বলেছেন, ঘোষিত সময়ের মধ্যেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে হবে। ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচনের যেই রোডম্যাপ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ঘোষণা করেছে সেই রোডম্যাপেই নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে। কোনভাবেই এর ব্যত্যয় ঘটানো যাবে না। এক ব্যক্তি কিংবা এক দলেল জন্য কোনো কিছু থেমে যায় না, থেকে থাকতে পারে না।

সোমবার (০৮ ডিসেম্বর) বিকেলে ঢাকা-৮ আসনে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের সমর্থনে পল্টন থেকে মগবাজার এলাকায় প্রচার মিছিল পূর্বক বায়তুল মোকাররম উত্তর গেইটে অনুষ্ঠিত পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ডাকসু. রাকসু, চাকসু, জাগসুতে ভরাডুবির পর একটি দল জাতীয় নির্বাচনে পরাজয়ের ভয়ে আতঙ্কে আছে। তারা নির্বাচন পিছিয়ে দিতে নানারকম ষড়যন্ত্র চক্রান্ত করছে। দাঁড়িপাল্লার প্রতি গণজোয়ার দেখে একটি দল পাগল হয়ে গেছে । তারা এখন পতিত আওয়ামী লীগের ভাষায়, আওয়ামী লীগের ভূমিকায় আবির্ভূত হচ্ছে। তাদের দলীয় কর্মকাণ্ড আর আওয়ামী লীগের দলীয় কর্মকাণ্ডের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই।

এসময় তিনি আরও বলেন, ‘‘দাঁড়িপাল্লায় ভোট দিলে দেশ দুর্নীতি- সন্ত্রাস – চাঁদাবাজ মুক্ত হবে”। জামায়াতে ইসলামী দুর্নীতিমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত, চাঁদাবাজমুক্ত এক নিরাপদ বাসযোগ্য বাংলাদেশ গড়তে চায়। নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ দুর্নীতি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ। সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজদের কালো হাত ভেঙ্গে দিয়ে জনগণের প্রত্যাশিত নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলা হবে। দুর্নীতি-সন্ত্রাস-চাঁদাবাজ মুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণে জামায়াতে ইসলামী প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, জামায়াতে ইসলামী ধর্মের ব্যবসা করে না, ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করে না। ধর্মের ব্যবসা আর ধর্ম নিয়ে তারাই রাজনীতি করে যারা নির্বাচন আসলে মাথায় টুপি লাগিয়ে ধর্মীয় অনুভূতিকে সুযোগ হিসেবে কাজে লাগায়।

জামায়াতে ইসলামীর জন্য আওয়ামী লীগ ভালো ছিল বিএনপি নেতার বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ‘‘জামায়াতের জন্য নয় যারা নেত্রীর বাসার সামনে থেকে বালুর ট্রাক সরাতে রাস্তায় আসেনি তাদের জন্যই আওয়ামী লীগ ভালো ছিল”। আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাত করে যিনি ব্যাংকের মালিক হয়েছেন, নিজের মালিকানাধীন ব্যাংক রক্ষা করেছেন তার জন্যই আওয়ামী লীগ ভালো ছিল। যারা দলের স্বার্থ না দেখে নিজের স্বার্থ দেখেছে তাদের জন্যই আওয়ামী লীগ ভালো ছিল। জামায়াতে ইসলামীর কোনো নেতাকর্মী নিজের স্বার্থ দেখেনি। বরং জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতৃবৃন্দ ফাঁসির মঞ্চে গিয়েছে তবুও আধিপত্যবাদের দোসর আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাত করেনি, আপোষ করেনি।

তিনি আরও বলেন, অতীতে ভোট ডাকাতি করে যারা ঢাকা-৮ আসনের এমপি হয়েছে তাদেরকে ভোট ডাকাতি করতে জনগণ আর সুযোগ দেবে না। ভোট ডাকাতদের জনগণ প্রতিহত করতে প্রস্তুত রয়েছে। তাই ভোট ডাকাতির চিন্তা বাদ দিয়ে জনগণের আস্থা অর্জনে মনযোগী হতে তিনি রাজনৈতিক পক্ষদ্বয়ের প্রতি আহ্বান জানান।

সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি (ঢাকা-৮ আসন কমিটির পরিচালক) মুহাম্মদ শামছুর রহমান বলেন, একটি দল আওয়ামী লীগের মতোই পাতানো নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় বসতে চায়। তারা জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে গণতান্ত্রিক ও নিয়মতান্ত্রিক ভাবে না পেরে আওয়ামী লীগের মতো অপরাজনীতি চর্চা চেষ্টা করছে। জনগণ এদেশে আর কাউকে হাসিনা হতে দেবে না, আর কাউকে আওয়ামী লীগের ভূমিকায় আবির্ভূত হতে দেবে না।

তিনি আরও বলেন, সারাদেশের ন্যায় ঢাকা-৮ আসনেও জামায়াতে ইসলামীর দাঁড়িপাল্লা প্রতীকে মানুষের সমর্থন ও আস্থা বেড়ে বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছিয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর অগ্রযাত্রায় যাদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে তাদেরকে প্রতিহিংসার রাজনীতি প্রতিহার করে জামায়াতে ইসলামীকে অনুসরণ করার আহ্বান জানান।

সভা শেষে, নেতৃবৃন্দ এক বিশাল প্রচার মিছিল নিয়ে বায়তুল মোকাররম উত্তর গেইট থেকে পল্টন-বিজয়নগর-কাকরাইল-শান্তিনগর হয়ে মগবাজারের অভিমুখে যাত্রা শুরু করে।

এসময় অন্যান্যের মধ্যে মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য ও পল্টন থানা আমীর শাহীন আহমেদ খান, মহানগরীর কর্মপরিষদ সদস্য ও শাহজাহানপুর পূর্ব থানা আমীর মুহাম্মদ শরিফুল ইসলাম, মহানগরীর সহকারী প্রচার সম্পাদক ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ১৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদপ্রার্থী আবদুস সাত্তার সুমন, শাহবাগ পূর্ব থানা আমীর আহসান হাবীব, মতিঝিল দক্ষিণ থানা আমীর মাওলানা মোতাছিম বিল্লাহ, শাহজাহানপুর পশ্চিম থানা আমীর মো. সরোয়ার হোসেনসহ ঢাকা-৮ সংসদীয় এলাকার বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এমকে

শেয়ার করুন:-
শেয়ার