ক্যাটাগরি: আবহাওয়াজাতীয়

শীতে শিশু ও বয়স্কদের জন্য বাড়তি যত্ন নেওয়ার আহ্বান

দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তাপমাত্রা কমতে শুরু করায় শিশু ও বয়স্কদের ঠান্ডাজনিত রোগ থেকে সুরক্ষায় অতিরিক্ত সতর্কতা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও সরকারি কর্মকর্তারা।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) প্রফেসর ডা. শেখ সাইদুল হক বলেন, ‘শীতকালে নিউমোনিয়া, ইনফ্লুয়েঞ্জা, হাঁপানির আক্রমণ ও সাধারণ সর্দি কাশির মতো শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে। এটি বিশেষ করে, ছোট শিশু ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে গুরুতর হতে পারে।

তিনি চলাফেরা ও খাদ্যাভ্যাসে সতর্কতা বজায় রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেন, শীতজনিত রোগ থেকে সুরক্ষায় এ সব সতর্কতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ডিজিএইচএস কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপ সম্পর্কে তিনি বলেন, শীতকালীন রোগ থেকে বাঁচতে, প্রয়োজনীয় সতর্কতা বিষয়ে জনগণকে সচেতন করতে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু, বয়স্ক নাগরিক এবং ডায়াবেটিস, হৃদরোগ ও সিওপিডি’র মতো দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্তরা শীত মৌসুমে বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ।

শিশু রোগ বিশেষজ্ঞরা জানান, কম প্রতিরোধ ক্ষমতা ও ঠান্ডা বাতাসের সংস্পর্শ শিশুদের জন্য স্বাস্থ্য জটিলতা তৈরি করতে পারে। অন্যদিকে বয়স্কদের ক্ষেত্রে শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জয়েন্টের ব্যথা, শ্বাসকষ্ট ও রক্তচাপের ওঠানামা বেড়ে যেতে পারে।

স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা পরামর্শ দিয়েছেন, বিশেষ করে ভোরবেলা বা সন্ধ্যায় শিশুদের বাইরে নিয়ে যাওয়ার সময় উষ্ণ পোশাক পরানো এবং নিয়মিত হাত ধোয়ার অভ্যাস বজায় রাখা জরুরি। কারণ এটি মৌসুমি ভাইরাস ছড়ানো কমাতে সহায়তা করে। এ ছাড়া অসুস্থ ব্যক্তিদের কাছ থেকে শিশুদের দূরে রাখতে হবে।

এর পাশাপাশি ফল, শাকসবজি ও উষ্ণ তরলসমৃদ্ধ পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। এই ধরনের পুষ্টিকর খাবার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে বলে জানান তারা।

চিকিৎসকরা নবজাতকদের ঠান্ডা বাতাসে না নেওয়ার এবং ঘরের ভেতর পরিবেশ উষ্ণ রাখার পাশাপাশি ঘরে যথাযথভাবে বায়ু চলাচলের জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখারও সুপারিশ করেছেন।

বয়স্কদের ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের পরামর্শ— উষ্ণ কাপড়, মোজা ও টুপি ব্যবহার করে ঠান্ডাজনিত জটিলতা এড়ানো উচিত।

এ ছাড়াও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা ভোর বেলার কুয়াশায় ঘরের বাইরে যাওয়া থেকে বিরত থাকতে, রাতে কম্বল বা গরম পানির ব্যাগ ব্যবহার করতে, শরীর গরম রাখতে, পর্যাপ্ত পানি পান করতে এবং উষ্ণ তরল, ভেষজ চা ও সুষম খাবার গ্রহণ করতে পরামর্শ দিয়েছেন।

চিকিৎসকরা দীর্ঘমেয়াদি রোগীদের ক্ষেত্রে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ এবং যথাসময়ে ওষুধ গ্রহণের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন।

এ দিকে স্থানীয় ক্লিনিক ও কমিউনিটি হেলথ সেন্টারগুলো বিশেষ করে, গ্রামীণ ও নিম্ন আয়ের এলাকাগুলোতে সচেতনতামূলক কার্যক্রম শুরু করেছে। এসব এলাকায় উষ্ণ পোশাক ও যথাযথ আবাসন সুবিধা সীমিত।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে দীর্ঘস্থায়ী জ্বর, শ্বাসকষ্ট বা পানি শূন্যতার মতো উপসর্গ দেখা দিলে, তাদের দ্রুত চিকিৎসা দেওয়া উচিত।

শেয়ার করুন:-
শেয়ার