ক্যাটাগরি: জাতীয়

উত্তরবঙ্গকে এগিয়ে নিতে সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

পিছিয়ে পড়া উত্তরবঙ্গকে এগিয়ে নিতে সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেছেন, উত্তরবঙ্গ বহুদিন ধরেই উন্নয়নের ক্ষেত্রে উপেক্ষিত ছিল। বর্তমান সরকার সেই অবস্থার পরিবর্তনে বদ্ধপরিকর। ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়ানো, শিল্পায়ন এগিয়ে নেওয়া এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি-এই তিনটি বিষয়কে কেন্দ্র করেই আমরা সমন্বিত পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি।

‍বৃহস্পতিবার (৫ নভেম্বর) রাতে রংপুরে ৪ দিনের সফরে আসেন তিনি। আগামী রবিবার (৭ ডিসেম্বর) নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে যাবেন তিনি। বৃহস্পতিবার সকালে রংপুর নগরীর তাজহাট জমিদার বাড়ি পরিদশনে যান তিনি। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে রংপুর নগরীর সাকিট হাউজে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে ভারতের অবস্থানের বিষয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘এই বিষয়ে ভারত এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক সাড়া দেয়নি। আমরা তাদের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করছি। রাষ্ট্রীয় কূটনীতি সময় সাপেক্ষ বিষয়। কাজটি সতর্কতা ও সম্মানজনক পদ্ধতিতে সম্পন্ন করতে হয়।

বাংলাদেশ সরকার বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে তদারকি করছে।’

তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উভয় দেশের সংলাপ ও সহযোগিতা অব্যাহত রয়েছে। সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, বাণিজ্য সম্প্রসারণ, পানি বণ্টন ও আঞ্চলিক যোগাযোগ- এসব ক্ষেত্রেই আলোচনার অগ্রগতি হচ্ছে। আমরা চাইলেই সব সিদ্ধান্ত সঙ্গে সঙ্গে হবে না।

কূটনৈতিকভাবে ধৈর্য ধরে এগোতে হয়। তবে বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় সরকার কখনোই আপস করবে না।’

দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে উত্তরাঞ্চলের অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কৃষি, পশুপালন, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, মৎস্য ও হালকা শিল্প-সবক্ষেত্রেই এই অঞ্চলের অসীম সম্ভাবনা রয়েছে। সরকার সেই সম্ভাবনাকে বাস্তবায়ন করতে নীতি সহায়তা, অবকাঠামো উন্নয়ন, রাস্তা-রেল যোগাযোগ বাড়ানোসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে উত্তরবঙ্গের পণ্য সহজে পৌঁছে দিতে লজিস্টিকস ও পরিবহন ব্যবস্থার আধুনিকায়নেও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়াতে সরকার স্থানীয় উদ্যোক্তাদের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করছে। বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি, কর সুবিধা এবং রপ্তানি প্রণোদনা-সবগুলো বিষয়েই এখন বাস্তব অগ্রগতি রয়েছে। আমরা চাই উত্তরবঙ্গের তরুণেরা এখানেই কর্মসংস্থানের সুযোগ পাক। তাদের ঢাকায় বা অন্য কোথাও ছুটে যেতে না হয়।’

কর্মসংস্থান সৃষ্টির বিষয়ে তিনি বলেন, দক্ষতা উন্নয়ন কার্যক্রম আরো জোরদার করা হচ্ছে। আইসিটি, কৃষিভিত্তিক শিল্প, টেক্সটাইল, সিরামিক ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পে প্রশিক্ষণ সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নতুন শিল্প স্থাপিত হলে ব্যাপক কর্মসংস্থান ঘটবে, আর এর ফলে অঞ্চলটির সামগ্রিক অর্থনীতি প্রাণ ফিরে পাবে। উন্নয়ন শুধু ঢাকার নয়, সারা দেশের। বিশেষ করে উত্তরবঙ্গকে উন্নয়নের মূলধারায় আনাই এখন আমাদের অগ্রাধিকার। সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রমের সুফল খুব দ্রুতই জনগণ অনুভব করবে।

অনুষ্ঠানে সরকারি কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। তারা অঞ্চলভিত্তিক উন্নয়ন পরিকল্পনা, বিনিয়োগ সুযোগ এবং সীমান্ত বাণিজ্য সম্প্রসারণ সংক্রান্ত নানা প্রস্তাব তুলে ধরেন। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এসব প্রস্তাব গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নেওয়ার আশ্বাস দেন।

শেয়ার করুন:-
শেয়ার