ময়মনসিংহ-৫ (মুক্তাগাছা) আসনের এনসিপি মনোনীত প্রার্থী মিয়াজ মেহরাব তালুকদার মুক্তাগাছার সদ্য সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বিরুদ্ধে এতিমদের জন্য বরাদ্দকৃত গোশত আত্মসাতের গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন।
নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক পোস্টে মিয়াজ মেহরাব তালুকদার লিখেছেন, “এতিমের গোশত চুরি মুক্তাগাছা উপজেলা ইউএনওর।” তিনি দাবি করেন, জুলাই অভ্যুত্থানের পর থেকে মুক্তাগাছাবাসী উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দুর্নীতি সম্পর্কে তাঁকে নিয়মিত অবহিত করে আসছেন। তবে এলাকার পরিস্থিতি ও দলীয় নেতাকর্মীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে তিনি প্রকাশ্যে কোনো পদক্ষেপ নেননি।
মেহরাব তালুকদারের বক্তব্য অনুযায়ী, সৌদি আরব থেকে প্রতিবছর যে উট ও দুম্বার গোশত এতিমদের জন্য বাংলাদেশে পাঠানো হয়, তা উপজেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে স্থানীয় এতিমখানায় বিতরণ করার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু মুক্তাগাছার ইউএনও সেই গোশত বিতরণের পরিবর্তে নিজেরা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
তিনি আরও দাবি করেন, ইউএনও এবং তাঁর অধীন কয়েকজন কর্মকর্তা এতিমদের গোশত নিজেরা খেয়েছেন।
ইউএনও নাকি ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্যও গোশত নিয়ে গেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে আরও বিভিন্ন ধরনের দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ স্থানীয়দের কাছ থেকে তিনি পেয়েছেন।
এমনকি ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি পাওয়ার অভিযোগও স্থানীয়দের কেউ কেউ তুলেছেন। মেহরাব তালুকদার বলেন, “শত শত এতিমের হক নষ্টের ঘটনা শুনে আর চুপ থাকা গেল না। এতিমের হক নষ্টের মতো নিকৃষ্ট পাপ আর কিছু হতে পারে না।”
অভিযোগ প্রকাশের পর মুক্তাগাছার বহু মানুষ তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বলে জানান মেহরাব তালুকদার। তিনি বলেন, স্থানীয়রা যেকোনো মূল্যে এই ঘটনার বিচার চান এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার দাবি তুলেছেন। তিনি এই বিষয়ে সরকারিভাবে অবিলম্বে তদন্ত দাবি করে বলেন, “এতিমের হক আত্মসাৎকারী কাউকে রাষ্ট্রের দায়িত্বে রাখা যায় না। জনগণের সম্পত্তি আত্মসাৎকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।”
এছাড়া ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের সহযোদ্ধা ও জুলাই বিপ্লবের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, মুক্তাগাছার এসব এতিমের অধিকার রক্ষায় যেন দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হয়। পোস্টের শেষে তিনি পবিত্র কোরআনের উদ্ধৃতি দিয়ে এতিমের সম্পদ আত্মসাতের কঠিন শাস্তির কথাও উল্লেখ করেন। অভিযোগের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সাবেক ইউএনও বা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এমকে