সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র আক্তার হোসেনের দলীয় বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করার দিনের ফের প্রত্যাহার করা হয়েছে। বহিষ্কারাদেশ একই দিনে প্রত্যাহার এবং তা পুনর্বহাল নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে আলোচনা-সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে তৈরি হয়েছে ‘আক্তার ইস্যু’।
বিএনপি নেতাকর্মীরা জানান, গত বুধবার (২৬ নভেম্বর) বিকেলে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে আক্তার হোসেনের বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার করে তাঁর প্রাথমিক সদস্য পদ ফিরিয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়। কয়েক ঘণ্টা যেতে না যেতেই রাতে রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত অপর চিঠিতে ভুলবশত আক্তার হোসেনের বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহারের কথা বলা হয়। ওই চিঠিতে আক্তার হোসেনের বহিষ্কার আদেশ পুনর্বহালের কথাও জানানো হয়। বিএনপির মিডিয়া সেলে ওই চিঠি পোস্ট করা হলে আক্তারবিরোধী নেতাকর্মীরা সামাজিক মাধ্যমে তা ছড়িয়ে দেন।
দীর্ঘদিন ধরে জগন্নাথপুর উপজেলা বিএনপির দুই ধারায় বিভক্ত। একপক্ষের নেতৃত্বে আছেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু হোরায়রা সাদ মাস্টার। অপর পক্ষের নেতৃত্ব দিচ্ছেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আক্তার হোসেন।
আক্তার ২০২১ সালের জানুয়ারিতে দলীয় শৃঙ্খলা অমান্য করে জগন্নাথপুর পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে দলের বিদ্রোহী প্রার্থী হন। এ কারণে তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয় এবং প্রাথমিক সদস্যপদও বাতিল করা হয়। ওই নির্বাচনে তিনি জয়লাভ করে মেয়র নির্বাচিত হলে দলীয় রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েন। তবে তাঁর অনুসারী স্থানীয় বিএনপির একটি অংশ সক্রিয় রাজনৈতিক কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলেন।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে মনোনয়নপ্রত্যাশী যুক্তরাজ্য বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কয়ছর এম আহমেদকে ঠেকাতে আক্তার হোসেন বলয়ের নেতাকর্মীদের নিয়ে একমঞ্চে উঠে ঐক্যের ডাক দেন জেলা বিএনপির কয়েকজন নেতা। কিন্তু বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন পান কয়ছর এম আহমেদ। এতে আক্তার অনুসারী বিএনপি নেতাকর্মীরা হতাশ হন। বুধবার আক্তার হোসেনের বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার হওয়ায় নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত হয়েছিলেন। তবে কয়েক ঘণ্টা পর আবার বহিষ্কার আদেশ বহালের চিঠিতে তাদের মধ্যে হতাশা দেখা দেয়।
আক্তার হোসেন জানান, নেতাকর্মীদের চাপে তিনি বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহারের জন্য আবেদন করেছিলেন। বুধবার দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহারের চিঠি পেয়েছিলেন। তবে বহিষ্কার আদেশ পুনর্বহালের বিষয়ে তাঁকে কোনো চিঠি দেওয়া হয়নি।