ক্যাটাগরি: রাজধানী

ফ্ল্যাট বিক্রির নামে প্রতারণা: সংঘবদ্ধ চক্রের ৩ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি

ঢাকার হাজারীবাগ এলাকায় ফ্ল্যাট বিক্রির নামে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা চালিয়ে আসা একটি সংঘবদ্ধ চক্রের তিন সদস্য ১। শাহানা শিকদার (৪৫), পিতা- আ: মান্নান শিকদার, স্বামী: হানিফ বেপারী, ২। সামীর (২৩), পিতা: হানিফ বেপারী, মাতা: শাহানা শিকদার, ৩। হানিফ বেপারী (৫৮), পিতা মৃত মালেক বেপারী, মাতা: সর্ব সাং- ৩/৪৩/এ (২য় তলা, ফ্ল্যাট-সি-১), ষড়কুঞ্জ আবাসিক এলাকা, থানা- হাজারীবাগ, ডিএমপি, ঢাকাকে গত ২৬ নভেম্বর দিবাগত রাত ১২টা ১৫ মিনিটে অর্থাৎ অদ্য ২৭ নভেম্বর ২০২৫ খ্রি. প্রথম প্রহরে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের সুমিলপাড়া এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে গ্রেফতার করেছে সিআইডির ঢাকা-মেট্রো দক্ষিন ইউনিট।

সিআইডির প্রথমিক তদন্তে জানা যায়, প্রতারক চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে একই ফ্ল্যাট বিক্রয়ের কথা বলে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে আসছিল। তারা প্রথমে ফ্ল্যাটটি বিক্রির প্রস্তাব দিত। পরে বলত—ফ্ল্যাটটি মর্টগেজ রাখা আছে, মালিক জরুরি টাকার প্রয়োজন, বা দ্রুত টাকা দিলে রেজিস্ট্রি করে দেবে। এভাবে তারা ধাপে ধাপে অগ্রিম টাকা নিত, আবার সময়ক্ষেপণ করে আরও টাকা দাবি করত।

চক্রটি বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ ও প্রলোভন দেখিয়ে একজন ভুক্তভোগী রুপা(ছদ্মনাম)-কে ফ্ল্যাট কেনার জন্য আকৃষ্ট করে। পরবর্তীতে রুপা ফ্যাট কেনার আগ্রহ জানালে উল্লিখিত কৌশলে চক্রিটি গত ২০২৫ সালের আগস্ট মাসজুড়ে তারা তার কাছ থেকে বায়নানামার মাধ্যমে ৪১ লাখ ৪০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে রেজিস্ট্রি না দিয়ে তারা গড়িমসি শুরু করে। এরপর ২৭ আগস্ট, ২০২৫ তারিখে ধানমন্ডিতে অবস্থিত একটি ব্যাংকের সামনে আসামিরা রূপা ও তার সহকারীকে মারধর করে রূপার হাতে থাকা মর্টগেজ টোকেন ছিনিয়ে নেয়।

ঘটনার পর রূপা হাজারীবাগ থানায় মামলা দায়ের করেন (মামলা নং-০৯, তারিখ-০৬/১০/২০২৫ খ্রি., ধারা ৪০৬/৪২০ পেনাল কোড)। মামলাটির তদন্তভার গ্রহণের পর সিআইডি ব্যাংক লেনদেন যাচাই, আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে তথ্য বিশ্লেষণ এবং ভুক্তভোগীর বর্ণনার ভিত্তিতে উক্ত তিন আসামিকে গ্রেফতার করে।

প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, চক্রটি একই ফ্ল্যাট দেখিয়ে আগে আরও কয়েকজনের কাছ থেকেও অর্থ হাতিয়েছে। এর মধ্যে মো. শাহাদাৎ হোসেনের কাছ থেকে ১২ লাখ, মো. মাহবুবুর রহমানের কাছ থেকে ৯ লাখ ৪০ হাজার এবং মো. নান্নু মিয়া ইমনের কাছ থেকে ৫ লাখ ৩০ হাজার টাকা নেওয়ার তথ্য পেয়েছে সিআইডি । শুধু তাই নয়, সিআইডির তদন্তে দেখা গেছে, ২৮ আগস্ট ২০২৫ তারিখে চক্রটি একই ফ্ল্যাট ২৬ লাখ ২৫ হাজার টাকায় রওশন আরা নামে একজন মহিলার কাছে রেজিস্ট্রি করে দিয়েছে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত আসামীরা প্রতারণার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছে। আসামীরদেকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। মামলার পূর্ণাঙ্গ রহস্য উদঘাটন এবং চক্রের অন্যান্য সদস্য ও সহযোগীদের শনাক্তের জন্য মামলাটির তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

শেয়ার করুন:-
শেয়ার