রাজধানীর পূর্বাচলে নতুন শহর প্রকল্পে ক্ষমতার অপব্যবহার করে সরকারি জমি বরাদ্দের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা বহুল আলোচিত তিন মামলার রায় ঘোষণা ঘিরে ঢাকার মহানগর দায়রা আদালতের সামনে নেয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, রায়ের আগেই আদালত এলাকায় বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আদালতের প্রধান ফটকগুলোতে বাড়তি সতর্কতা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
এজলাস এবং আশপাশের এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ ও বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া, গণমাধ্যমকর্মী এবং সাধারণ জনতার উপস্থিতিও বেশি দেখা গেছে।
মহানগর পুলিশের প্রসিকিউশন বিভাগের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ কমিশনার শহীদুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, নিয়মিত নিরাপত্তা ব্যবস্থার পাশাপাশি পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্টের দুই প্লাটুন পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন সঙ্গে রয়েছেন বিজিবির আরও দুই প্লাটুন সদস্য।
মামলাগুলোতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ মোট ৪৭ জন আসামি। তাদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, সরকারি প্লট অবৈধভাবে গ্রহণ, জালিয়াতি ও সরকারি সম্পত্তি আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।
প্রথম মামলাটি করা হয় গত ১৪ জানুয়ারি, যেখানে শেখ হাসিনাসহ আটজনকে অভিযুক্ত করা হয়। তদন্ত শেষে চার্জশিটে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১২ জনে। আসামিদের মধ্যে রয়েছেন পুরবী গোলদার, খুরশীদ আলম, নাসির উদ্দীন, মেজর (অব.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী, নায়েব আলী শরীফ, কাজী ওয়াছি উদ্দিন, শহিদ উল্লাহ খন্দকার ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ।
দ্বিতীয় মামলায় শেখ হাসিনা ও সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ১৭ জনকে চার্জশিটভুক্ত করা হয়। এই মামলার আসামিদের মধ্যে রয়েছেন সাইফুল ইসলাম সরকার, পুরবী গোলদার, কাজী ওয়াছি উদ্দিন, শহিদ উল্লাহ খন্দকার, আনিছুর রহমান মিঞা, নাসির উদ্দীন, মেজর (অব.) সামসুদ্দীন, নুরুল ইসলাম, মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ।
তৃতীয় মামলায় শেখ হাসিনা ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ ১৮ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে জাল রেকর্ডপত্র তৈরি, অবৈধভাবে প্লট বরাদ্দ নেওয়া ও সরকারি সম্পত্তি আত্মসাতের সুযোগ সৃষ্টি। মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন—কবির আল আসাদ, তন্ময় দাস, নাসির উদ্দীন, মেজর (অব.) সামসুদ্দীন, হাফিজুর রহমান, হাবিবুর রহমান এবং সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পাবলিক প্রসিকিউটর মঈনুল হাসান বলেন, গত ৩১ জুলাই আদালত তিন মামলারই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দেন। দীর্ঘ শুনানি ও যুক্তিতর্ক শেষে কিছুক্ষণ পরেই রায় ঘোষণা হবে। সারাদেশের মানুষ বিষয়টি নজরে রেখেছে।