দেশের রপ্তানিকারকদের সামনে এখন বিশ্বব্যাপী সুপরিচিত অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ও মার্কেটপ্লেসের মাধ্যমে পণ্য বিক্রির সুযোগ তৈরি হয়েছে। গতকাল অনলাইনভিত্তিক রপ্তানি বাড়াতে বিজনেস-টু-বিজনেস-টু-কনজিউমার (বি২বি২সি) কাঠামোর মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগ এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। নতুন নিয়মে রপ্তানিকারকেরা এখন বিশ্বের যেকোনো সুপরিচিত অনলাইন প্ল্যাটফর্ম, আন্তর্জাতিক মার্কেটপ্লেস, সাবসিডিয়ারি বা তৃতীয় পক্ষের ওয়্যারহাউসের মাধ্যমে পণ্য পাঠাতে পারবেন। অর্থাৎ দেশি উদ্যোক্তা বা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো এখন অ্যামাজন, আলিবাবা ও ফ্লিপকার্টের মতো বৈশ্বিক বিভিন্ন ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলোর মাধ্যমে সরাসরি পণ্য বিক্রি করতে পারবেন।
এ ক্ষেত্রে বিদেশি কনসাইনি (যার ঠিকানায় রপ্তানিকৃত পণ্য পাঠানো হয় ও যিনি পণ্যটি গ্রহণ করেন) চূড়ান্ত ক্রেতা না হয়ে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করবে।
নতুন সার্কুলার অনুযায়ী, পণ্য রপ্তানি করতে হলে উদ্যোক্তাদের ওই অনলাইন প্ল্যাটফর্ম বা আন্তর্জাতিক ওয়্যারহাউসে নিবন্ধনের প্রমাণ এডি (অনুমোদিত ডিলার) ব্যাংকের কাছে জমা দিতে হবে। যেহেতু বি২বি২সি মডেলে সাধারণ বিক্রয় চুক্তি থাকে না, তাই রপ্তানিকারকেরা প্রফর্মা ইনভয়েসের (প্রাথমিক বা অগ্রিম বিল) ভিত্তিতে পণ্যের ন্যায্যমূল্য ঘোষণা করতে পারবেন। ওয়্যারহাউজিং বা অন্যান্য সেবা প্রদানকারী কনসাইনির নামে শিপিং ডকুমেন্টও গ্রহণ করতে পারবে এডি ব্যাংক।
রপ্তানি আয়ের অর্থ এডি ব্যাংকের মাধ্যমে স্বাভাবিক ব্যাংকিং চ্যানেল ছাড়াও আন্তর্জাতিক পেমেন্ট সার্ভিস অপারেটরের মাধ্যমে আনতে পারবেন রপ্তানিকারকেরা। অনলাইন প্ল্যাটফর্মভিত্তিক রপ্তানিতে একাধিক চালানের অর্থ একত্রে আসতে পারে। এ ক্ষেত্রে এডি ব্যাংক ফার্স্ট-ইন, ফার্স্ট-আউট নীতিতে রপ্তানি আয় সমন্বয় করবে। অর্থাৎ আগের চালানগুলো আগে সমন্বয় হবে।
খাত–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মতে, বাংলাদেশ ব্যাংকের এই সিদ্ধান্তের ফলে আন্তসীমান্ত ই-কমার্স সহজ হবে এবং বৈশ্বিক অনলাইন বাজারে বাংলাদেশের উপস্থিতি বাড়বে। পাশাপাশি ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য নতুন বাজার তৈরি হবে। নতুন কাঠামোটি আন্তর্জাতিক ডিজিটাল খুচরা বিক্রিতে বাংলাদেশি পণ্যের অংশগ্রহণ বাড়িয়ে বহুমুখী রপ্তানিতে সহায়তা করবে।