খুলনায় রাজনীতির মাঠে এখন আলোচিত নাম কৃষ্ণ নন্দী। জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার পর তিনি আলোচনার তুঙ্গে। জামায়াতের বিভিন্ন সভা সমাবেশে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের পক্ষে ভোট চেয়ে বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছেন। খুলনা-১ আসনে জামায়াতের প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন পাচ্ছেন বলে এলাকা এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার চলছে। তবে এ বিষয়ে দলের পক্ষ থেকে কোনো নেতা বার্তা না দিলেও প্রার্থিতার বিষয়টি স্বীকার করেছেন কৃষ্ণ নন্দী।
খুলনা-৫ আসনে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার নির্বাচন করছেন। হিন্দু অধ্যুষিত এ আসনটি থেকে তিনি ২০০১ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছিলেন। আগামী সংসদ নির্বাচনেও তিনি এ আসন থেকে প্রার্থী হয়েছেন। অতীতের মতো এবারেও বিপুলসংখ্যক হিন্দু নারী-পুরুষ গোলাম পরওয়ারের নির্বাচনি সভা সমাবেশে অংশ নিচ্ছেন। ডুমুরিয়া উপজেলার বাসিন্দা ব্যবসায়ী কৃষ্ণ নন্দীও এসব সভা সমাবেশে উপস্থিত থেকে বক্তৃতা করছেন। তবে গত কয়েক দিন ধরেই খুলনা-১ (দাকোপ-বটিয়াঘাটা) আসনে জামায়াতের পক্ষ থেকে তাকে প্রার্থী করা হচ্ছে-এমন কথা শোনা যাচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ সংক্রান্ত তথ্য ছড়িয়ে পড়েছে।
তাকে সত্যিই এ আসন থেকে প্রার্থী করা হচ্ছে কি না সে বিষয়ে জামায়াতের স্থানীয় কোনো নেতাই কিছু বলতে পারেননি। তবে কৃষ্ণ নন্দী জানিয়েছেন, তিনি খুলনা-১ আসন থেকে জামায়াতে ইসলামীর মনোনয়নপ্রত্যাশী। দলের গ্রিন সিগন্যাল তিনি পেয়েছেন। তাকে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন দলের হাইকমান্ড। খুলনা জামায়াতের একাধিক নেতাকর্মীর সঙ্গে কথা বলেন জানা যায়, খুলনা-১ হিন্দু অধ্যুষিত হওয়ায় আসনটিতে হিন্দু প্রার্থী দেওয়ার প্রাথমিক আলাপ-আলোচনা চলছে। এছাড়াও খুলনা-১ আসনে বিএনপি এখনো পর্যন্ত কোনো প্রার্থী দেয়নি।
স্থানীয় মানুষের ধারণা বিএনপি আসনটিকে সম্ভাব্য জোটের প্রার্থীদের জন্য ছাড় দেবে। ওই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এ আসনে জামায়াতে ইসলামী হিন্দু প্রার্থী দিলে আসনটিতে জয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এখানে হিন্দু কোনো যোগ্য প্রার্থী জামায়াত ঘেঁষা না হওয়ায় খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলা থেকে তাকে দাকোপ-বটিয়াঘাটায় নির্বাচন করানো হতে পারে।
বিষয়টি নিয়ে খুলনা মহানগর জামায়াতের আমির অধ্যাপক মাহফুজুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, খুলনার ৬টি আসনে আগেই প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। খুলনা-১ আসনে দাঁড়িপাল্লার প্রার্থী মাওলানা আবু ইউসুফ। নতুন করে কোনো আসনে কাউকে প্রার্থী করা হচ্ছে-এমনটি আমার জানা নেই। কেন্দ্র থেকে এ ধরনের কোনো বার্তাও আমাদের কাছে আসেনি। ফলে নতুন করে কাউকে প্রার্থী করা হচ্ছে সেটি বলতে পারছি না।
কৃষ্ণ নন্দী একজন ব্যবসায়ী। ডুমুরিয়া উপজেলার চুকনগর বাণিজ্যিক এলাকায় তার বাড়ি। এখানে তারা একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর আগে তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি নারায়ণ চন্দ্র চন্দের ঘনিষ্ট হিসাবে পরিচিত ছিলেন। গত বছরের ৫ আগস্টের পর তিনি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলেন। একই সঙ্গে দাঁড়িপাল্লার পক্ষে নির্বাচনি কার্যক্রম চালাচ্ছেন।
সম্প্রতি এক সভায় কৃষ্ণ নন্দী বলেছেন, ‘আমি ২০০৭ সাল থেকে জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। গেল আওয়ামী লীগ সরকারের দমন-পীড়নের সময়ে নেতাকর্মীদের পাশে ছিলাম।’