ক্যাটাগরি: অর্থনীতি

ট্রাভেল এজেন্সি খাতে নতুন অধ্যাদেশ বাতিলের দাবি

ট্রাভেল এজেন্সি নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ বাতিলের দাবি জানিয়েছেন আটাব সদস্য কল্যাণ ঐক্য জোট। রোববার (২৩ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে মানববন্ধন করে তারা এই দাবি জানান।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় ২০১৩ সালের আইন ও ২০২১ সালের সংশোধনী আইনের পরিবর্তন করে নতুন যে অধ্যাদেশের খসড়া তৈরি করেছে তা বাস্তবায়িত হলে দেশের প্রায় পাঁচ হাজার ট্রাভেল এজেন্সি বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এতে মালিক, কর্মকর্তা এবং কর্মচারীরা কর্মহীন হয়ে পড়বেন, যা পুরো খাত এবং জাতীয় অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলবে।

আটাব সদস্য কল্যাণ ঐক্য জোটের আহ্বায়ক জালাল উদ্দিন টিপু বলেন, নতুন অধ্যাদেশে যেসব সংশোধনী প্রস্তাব করা হয়েছে তার অনেকগুলো বাস্তবতার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। বিশেষ করে ধারা ৫–এ অন্য এজেন্সির কাছ থেকে টিকিট ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ করলে সাধারণ ট্রাভেল এজেন্সিগুলো টিকে থাকতে পারবে না। দেশে যে ৫ হাজার এজেন্সি আছে, তাদের অধিকাংশেরই এয়ারলাইন্স থেকে সরাসরি টিকিট ইস্যুর সক্ষমতা নেই। আর অনলাইন ও অফলাইনের জন্য যে ১০ লাখ থেকে ১ কোটি টাকা জামানত রাখার কথা বলা হয়েছে, তা ছোট এজেন্সিগুলোর পক্ষে কোনোভাবেই সম্ভব নয়।

তিনি আরও বলেন, অধ্যাদেশের ধারা ৯-এ পরিবারের বাইরে ব্যবসা হস্তান্তর নিষিদ্ধ করা, এক ঠিকানায় রিক্রুটিং এজেন্টের কার্যক্রম সীমিত করা এবং বিনা শুনানিতে লাইসেন্স স্থগিত করার মতো বিধানগুলো খাতটিকে অকার্যকর করে দেবে। দেশের প্রচলিত আইনেই একই ঠিকানায় একাধিক ব্যবসার লাইসেন্স বৈধ। বহু রিক্রুটিং ও হজ এজেন্সি দীর্ঘদিন ধরে টিকিট সেবা দেওয়ার জন্য একই অফিস থেকে ট্রাভেল ব্যবসা পরিচালনা করছে।

সংগঠনের সদস্যসচিব জুমান চৌধুরী বলেন, এই অধ্যাদেশ বাস্তবায়িত হলে শুধু প্রতিষ্ঠান নয়, পরিবারের ভবিষ্যৎও অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। অনেক প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক গ্যারান্টি সীমিত থাকার কারণে তারা বড় এজেন্সি থেকে টিকিট সংগ্রহ করে গ্রাহকদের সেবা দেন। এটিকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ বানানো হলে সাধারণ ব্যবসায়ীদের পথ বন্ধ হয়ে যাবে।

তিনি জানান, ২০২১ সালের আইনে নির্ধারিত শাস্তি সংসদীয় যাচাই-বাছাই এর মাধ্যমে পাস হয়েছিল। সেটিকে হঠাৎ করে তিন বছর কারাদণ্ড ও ৫০ লাখ টাকা জরিমানা পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব অযৌক্তিক। যে কোনো অপরাধের বিচার দেশের প্রচলিত আইনের মাধ্যমেই সম্ভব। আলাদা করে অতিরিক্ত কঠোর শাস্তির প্রয়োজন নেই,—যোগ করেন তিনি।

বক্তারা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদে কোনো খাতে অধ্যাদেশ জারি করা হলে তা সাধারণত নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তাই নির্বাচিত সরকারের মাধ্যমে জাতীয় সংসদে আলোচনা করে আইন সংশোধন করা অধিক গ্রহণযোগ্য ও যৌক্তিক হবে।

৫ হাজার নিবন্ধিত ট্রাভেল এজেন্সির মালিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর ভবিষ্যৎ বিবেচনায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অধ্যাদেশটি বাতিলের আহ্বান জানান সংগঠনের নেতারা।

মানববন্ধন শেষে আটাব সদস্য কল্যাণ ঐক্য জোটের আহ্বায়ক মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন টিপুর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় ও আইন মন্ত্রণালয়ে কাছে স্মারকলিপি দেন।

শেয়ার করুন:-
শেয়ার