দীর্ঘ শিক্ষাজীবন ও কঠোর পরিশ্রম শেষে একজন চিকিৎসকের মাসিক বেতন ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা হওয়াকে পেশার প্রতি ‘চরম অবমাননা’ ও ‘অযৌক্তিক’ বলে অভিহিত করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি একে দেশের সামগ্রিক কর্মসংস্থান কাঠামোর ‘আন্ডার এমপ্লয়মেন্ট’ বা যোগ্যতার তুলনায় নিম্নমানের কর্মসংস্থান সংকট হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
রোববার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক ঘোষিত ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা’র আলোকে স্বাস্থ্যখাতের ভবিষ্যৎ নিয়ে এই সভার আয়োজন করা হয়।
আমীর খসরু ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বছরের পর বছর পড়াশোনা করে ডাক্তারি পাস করার পর ক্লিনিকগুলোতে ১৫-২০ হাজার টাকা বেতনে চাকরি করা হতাশাজনক। এটি কেবল বেতনের অঙ্ক নয়, বরং একজন চিকিৎসকের যোগ্যতা, শ্রম ও শিক্ষার খরচের সঙ্গে পুরোপুরি অসামঞ্জস্যপূর্ণ।
তিনি উল্লেখ করেন, দেশে ডিগ্রি ও প্রশিক্ষণ থাকা সত্ত্বেও অনেক চিকিৎসক বাধ্য হয়ে নামমাত্র বেতনে কাজ করছেন। এটি কেবল স্বাস্থ্যখাতের সমস্যা নয়, বরং পুরো দেশের ভঙ্গুর কর্মসংস্থান ব্যবস্থার প্রতিচ্ছবি।
এই অচলায়তন ভাঙতে বিএনপি স্বাস্থ্যখাত নিয়ে বিশেষ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে বলে জানান আমীর খসরু। তিনি জানান, নতুন এই কর্মসূচিতে তিনটি বিষয়ের ওপর জোর দেওয়া হবে: ১. চিকিৎসকদের আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি। ২. দেশের অভ্যন্তরে কর্মসংস্থানের পরিধি বৃদ্ধি। ৩. দক্ষ স্বাস্থ্যকর্মীদের বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা।
আমীর খসরু বলেন, বিশ্ববাজারে স্বাস্থ্যখাত অন্যতম সম্ভাবনাময় একটি সেক্টর। সঠিক পরিকল্পনা ও দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে এই খাতকে ঢেলে সাজাতে পারলে দেশ ও বিদেশে বিপুল কর্মসংস্থান তৈরি সম্ভব। অন্যথায়, শিক্ষিত তরুণ সমাজের মধ্যে হতাশা বাড়বে এবং দেশের মূল্যবান মানবসম্পদ অপচয় হবে। তাই চিকিৎসকদের জন্য সম্মানজনক ও যোগ্যতা অনুযায়ী কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার ওপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন।