ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা বলেছেন, সীমিত সক্ষমতা সত্ত্বেও বিজনেস ভিসা ইস্যু আবার শুরু হয়েছে এবং জরুরি প্রয়োজনের আবেদনগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর বারিধারায় ভারতের হাইকমিশন প্রাঙ্গণে নেটওয়ার্কিং ও জ্ঞান–বিনিময়মূলক ‘ফার্মা কানেক্ট’ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
সেখানে বাংলাদেশের শীর্ষ ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের মালিকরা অংশ নিয়ে ভারতীয় ভিসা প্রাপ্তিতে দীর্ঘদিনের জটিলতা দূর করতে আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে ভারত থেকে পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে সড়কপথে যাতায়াত আরও সহজ করার বিষয়টিও বিবেচনায় নিতে বলেন তাঁরা।
বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ফার্মাসিউটিক্যাল প্রদর্শনী সিপিএইচআই–পিএমইসি ইন্ডিয়া ২০২৫–এ বাংলাদেশের অংশগ্রহণের প্রস্তুতি হিসেবে এ আয়োজন করা হয়। আগামী সোমবার থেকে বুধবার পর্যন্ত নয়া দিল্লিতে এ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা বলেন, আইন–শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও সক্ষমতা সীমিত হয়ে পড়ায় কিছু ভিসা আবেদন কেন্দ্র সাময়িকভাবে বন্ধ রাখতে হয়েছিল। তবু সীমিত কর্মী নিয়েই প্রতিদিন বিপুল ভিসা দেওয়ার কাজ পুনরায় শুরু করা হয়েছে। ‘বিজনেস ভিসা ইস্যু আবার শুরু হয়েছে,’ যোগ করেন তিনি।
প্রণয় ভার্মা আরও বলেন, ‘আমরা বর্তমানে জরুরি প্রয়োজনের আবেদনগুলো অগ্রাধিকার দিয়ে দেখছি এবং চেষ্টা করছি দ্রুত প্রক্রিয়া করতে। আপনাদের যদি ব্যবসায়িক ভিসার প্রয়োজন হয়, দয়া করে আমাদের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সচিবের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। তিনি আপনাদের ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করতে সহায়তা করবেন।’
বাংলাদেশ ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল মুক্তাদির বলেন, ফার্মা কানেক্টের মাধ্যমে প্রযুক্তি হস্তান্তর, গবেষণা ও উন্নয়ন এবং সরবরাহ চেইন সংযুক্তিকরণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভারত–বাংলাদেশ সহযোগিতা বাড়বে। এতে প্রযুক্তি সহজলভ্যতা বাড়বে, সরবরাহ–চেইনের সক্ষমতা উন্নত হবে এবং নতুন বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি হবে। তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে কাঁচামাল শিল্পের প্রসার ঘটছে। ভারত এ খাতে অনেক এগিয়ে। স্থল সীমান্ত থাকার কারণে আমরা ভারত থেকে কাঁচামাল আমদানি করে আরও উপকৃত হতে পারি।’
অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব ডা. মো. জাকির হোসেন বলেন, সিপিএইচআই–পিএমইসি–তে অংশ নেওয়ার জন্য আগে কয়েক মাস আগে থেকেই হোটেল বুক করতে হতো; কারণ বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর ৫০০–৭০০ পেশাজীবী যেতেন। কিন্তু ভিসা জটিলতার কারণে এবার মাত্র আটটি প্রতিষ্ঠানের ৮৩ জন আবেদন করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমার ১৬ বছরের কর্মজীবনে আট–নয়বার সিপিএইচআইতে গেছি। এটি শুধু পেশাদার অনুষ্ঠান নয়, বিশ্ব ফার্মা শিল্প বোঝার অন্যতম প্ল্যাটফর্ম।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের চাওয়া বিজনেস ভিসা প্রক্রিয়া আরও সহজীকরণ, জটিলতা নিরসন। বিশেষ করে বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতি থেকে যারা ভারতীয় ভিসার আবেদন করবে। তাদের বিষয়টি বিশেষভাবে বিবেচনায় নেবেন।’