ক্যাটাগরি: জাতীয়

শর্ত বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছে মালয়েশিয়া: আসিফ নজরুল

বৈশ্বিক শ্রমবাজারে বাংলাদেশের সুযোগ তৈরি এবং তা সব রিক্রুটিং এজেন্সির জন্য অবারিত করাই বর্তমান সরকারের প্রধান লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন প্রবাসীকল্যাণ উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।

বুধবার (১৯ নভেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট প্ল্যাটফর্মের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানান তিনি।

প্রবাসীকল্যাণ উপদেষ্টা জানান, মালয়েশিয়া থেকে কর্মী নিয়োগের বিষয়ে সম্প্রতি যে ১০টি শর্ত দেয়া হয়েছে, তার মধ্যে কয়েকটি শর্তের বিষয়ে বাংলাদেশ শক্ত আপত্তি জানিয়েছে। একই সঙ্গে শর্তগুলো পূরণের সময়সীমা বাড়ানোর দাবি করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা রিক্রুটিং এজেন্সির সঙ্গে কথা বলে জানিয়েছি যে বেশিরভাগ শর্ত পূরণ করা সম্ভব নয়। এগুলো পূরণ করতে গেলে সিন্ডিকেট হবে আবার।

ড. আসিফ নজরুল জানান, বাংলাদেশ চায় সুযোগ যত বেশি সম্ভব যেন অবারিত করা হয় এবং এ জন্য শর্তগুলো শিথিল করা জরুরি। মালয়েশিয়ার কর্তৃপক্ষ এই বিষয়গুলো বিবেচনা করার আশ্বাস দিয়েছে। তবে শর্ত শিথিল না করা পর্যন্ত এবং শ্রমবাজার যথাসম্ভব সব এজেন্সির জন্য উন্মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত মালয়েশিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ ও কূটনৈতিক আদান-প্রদান অব্যাহত থাকবে।

মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার অতীতে বহুবার জটিলতা এবং সিন্ডিকেটের কারণে বন্ধ হয়েছে। ২০১৮ সালে দুর্নীতির অভিযোগে বাজারটি বন্ধ হওয়ার পর, ২০২১ সালের ডিসেম্বরে নতুন সমঝোতা চুক্তির মাধ্যমে ২০২২ সালে এটি পুনরায় চালু হয়। কিন্তু সম্প্রতি মালয়েশিয়া সরকার বাংলাদেশসহ অন্যান্য কর্মী প্রেরণকারী দেশ (যেমন: ভারত, নেপাল, মিয়ানমার) থেকে কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে নতুন করে কড়াকড়ি আরোপ করেছে।

গত অক্টোবরের শেষের দিকে মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি চিঠি দিয়ে রিক্রুটিং এজেন্সির সংখ্যা যৌক্তিক করার জন্য ১০টি বাধ্যতামূলক মানদণ্ড নির্ধারণ করে। তাদের দাবি, এতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে।

এই শর্তগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো: কমপক্ষে ৫ বছর কর্মী পাঠানোর অভিজ্ঞতা থাকতে হবে; বিগত ৫ বছরে কমপক্ষে ৩ হাজার কর্মী পাঠানোর রেকর্ড থাকতে হবে; অন্তত ৩টি ভিন্ন দেশে কর্মী পাঠানোর অভিজ্ঞতা থাকতে হবে; কমপক্ষে ১০ হাজার বর্গফুটের নিজস্ব স্থায়ী অফিস থাকতে হবে; নিজস্ব প্রশিক্ষণ সুবিধা থাকতে হবে; মানবপাচার, জোরপূর্বক শ্রম, মানি লন্ডারিং বা অন্য কোনো অপরাধে সংশ্লিষ্ট না থাকার রেকর্ড থাকতে হবে।

বাংলাদেশের রিক্রুটিং এজেন্সির মালিকদের সংগঠনসহ অনেকেই এই শর্তগুলোকে ‘অযৌক্তিক, অবাস্তব ও বৈষম্যমূলক’ বলে মনে করছেন। তাদের আশঙ্কা, এত কঠোর মানদণ্ড পূরণ করা অধিকাংশ এজেন্সির পক্ষেই সম্ভব নয়, যার ফলে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার পুনরায় হাতেগোনা কয়েকটি এজেন্সির (সিন্ডিকেট) নিয়ন্ত্রণে চলে যেতে পারে এবং অভিবাসন ব্যয় বাড়তে পারে।

শেয়ার করুন:-
শেয়ার