সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, তার ভাই আনিসুজ্জামান চৌধুরী রনি এবং রনির স্ত্রী মেঘনা ব্যাংক পিএলসির সাবেক পরিচালক ইমরানা জামান চৌধুরীর নামে থাকা মেঘনা ব্যাংকের প্রায় সাড়ে চার কোটি শেয়ার জব্দ করেছে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
অবৈধ অর্থে শেয়ার ক্রয়ের সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়ায় আদালতের নির্দেশে এই জব্দের আদেশ কার্যকর করা হয়। বুধবার (১৯ নভেম্বর) সকালে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
অনুসন্ধানে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে তিনি বলেন, অভিযুক্তদের নিয়ন্ত্রণে থাকা বিভিন্ন ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট এবং তাদের কাগুজে প্রতিষ্ঠান স্টেডফাস্ট ম্যানেজমেন্ট ট্রেডিং লিমিটেড- এর নামে মোট ৪ কোটি ৫৩ লাখ ৩০ হাজার ২০০ শেয়ার কেনা হয়। যার তৎকালীন বাজারমূল্য ছিল প্রায় ৫৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। পরবর্তীতে স্টক ডিভিডেন্ড যোগে শেয়ার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৪ কোটি ৬৪ লাখ ৬৩ হাজার ৪৫৫।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে আরও জানা যায়, অভিযুক্তরা দীর্ঘদিন ধরে চাঁদাবাজি, জালিয়াতি ও সংঘবদ্ধ অপরাধের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অবৈধ অর্থ সংগ্রহ করে আসছিলেন। এই অর্থের একটি অংশ বিদেশে পাচার করা হয় এবং পরবর্তীতে দেশে এনে বৈধ সম্পদে রূপান্তরের চেষ্টা করা হয়।
সিআইডির তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সিঙ্গাপুর ও দুবাই থেকে ২ কোটি ২২ লাখ ৫ হাজার ৪৪৪ মার্কিন ডলার দেশে আনা হয়। এই অর্থ অভিযুক্তদের সহযোগী আবুল কাসেমের মাধ্যমে ইউসিবি ব্যাংক ও এনআরবিসি ব্যাংকের এফসি অ্যাকাউন্টে জমা হয়। পরে ইমরানা জামান চৌধুরী এবং স্টেডফাস্ট ম্যানেজমেন্ট ট্রেডিং লিমিটেড- এর নামে ৬০ কোটি টাকা জমা করে ওই টাকা কমিউনিটি ব্যাংকের একটি বিশেষ অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করা হয়। সেখান থেকেই ৫৯ দশমিক ৯৫ কোটি টাকা মেঘনা ব্যাংকের শেয়ার কিনতে ব্যবহার করা হয়।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন আরও জানান, স্টেডফাস্ট ম্যানেজমেন্ট ট্রেডিং লিমিটেড- এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর হিসেবে উৎপল পাল এবং পরিচালক হিসেবে নাসিম উদ্দিন মোহাম্মদ আদিলের নাম রয়েছে। দুজনই আরামিট গ্রুপের কর্মচারী এবং জাবেদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে তদন্তে উঠে এসেছে।
সিআইডির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালত চলতি মাসের ১৮ নভেম্বর অভিযুক্তদের এসব সম্পদ জব্দের আদেশ দেন। ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিটের তত্ত্বাবধানে এই তদন্ত চলমান রয়েছে। অপরাধের পূর্ণাঙ্গ তথ্য উদঘাটন, সংশ্লিষ্ট অজ্ঞাত ব্যক্তিদের শনাক্তকরণ এবং অন্যান্য আইনি প্রক্রিয়ার স্বার্থে তদন্ত অব্যাহত আছে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
এমকে