ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোট দেওয়ার জন্য চালু হচ্ছে ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপ। আজ মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এ অ্যাপের উদ্বোধন করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন।
বাংলাদেশে এবারই প্রথম পোস্টাল ভোট দেওয়ার সুযোগ চালু হচ্ছে। এ জন্য অ্যাপে নিবন্ধনের পর সে অনুযায়ী শুধু প্রতীক দিয়ে ব্যালট পেপার পাঠানো হবে তাদের কাছে।
অ্যাপে নিবন্ধিত ভোটাররা টিক বা ক্রস চিহ্ন দিয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন। একই সঙ্গে ‘না’ ভোট যুক্ত থাকবে ওই ব্যালটে। যদি কোনো আসনে একজন মাত্র প্রার্থী থাকেন, শুধু সেসব আসনের ভোটাররাই এই ‘না’ ভোট দিতে পারবেন।
নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্ন দেশে থাকা বাংলাদেশি ভোটাররা নিবন্ধনের সুযোগ পাবেন।
বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঁচ দিন করে নিবন্ধনের সময় বেঁধে দিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। এর মধ্যে ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত নিবন্ধন করতে পারবেন পূর্ব এশিয়া, দক্ষিণ আমেরিকা ও আফ্রিকা অঞ্চলের ৫২টি দেশের প্রবাসী বাংলাদেশি ভোটাররা।
এ ছাড়া উত্তর আমেরিকার ১৪টি দেশ ও ওশানিয়া অঞ্চলের দুটি দেশের থাকা বাংলাদেশি ভোটাররা ২৪-২৮ নভেম্বরের মধ্যে নিবন্ধনের সুযোগ পাবেন।
এদিকে ইউরোপের ৪২টি দেশে নিবন্ধন করতে হবে ২৯ নভেম্বর থেকে ৩ ডিসেম্বরের মধ্যে। আর ৪ ডিসেম্বর মধ্যপ্রাচ্যের সৌদি আরবে নিবন্ধন শুরু হবে, যা চলবে ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ব্যালট পেপার যে খামে পাঠানো হবে তার সঙ্গে থাকবে একটি ঘোষণাপত্র। ব্যালট পেপারে ভোট দেওয়ার পাশাপাশি ওই ঘোষণাপত্রেও স্বাক্ষর করতে হবে ভোটারকে। ভোটার যে নিজে ভোট দিয়েছেন সেটি উনি ঘোষণাপত্রে উল্লেখ করবেন এবং সেটিতে স্বাক্ষর করবেন।
যদি কোনো ভোটার শুধু ভোট দিয়ে ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর ছাড়াই ব্যালট পেপার বাংলাদেশে পাঠান সেক্ষেত্রে ওই ভোটটি বাতিল ভোট হিসেবেই গণ্য করবেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।
প্রবাসী ভোটার বাদেও এবার পোস্টাল ব্যালটে ভোট দিতে পারবেন ভোটের দায়িত্বে নিয়োজিত সরকারি চাকরিজীবী ও দেশের ৭১টি কারাগারে বন্দি ও কয়েদিরা। তাদের জন্যও আলাদা নিবন্ধন ব্যবস্থা চালু করবে ইসি।
নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব ও প্রবাসী ভোটার প্রকল্পের পরিচালক কে এম আলী নেওয়াজ সম্প্রতি বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, ‘মনোনয়নপত্র দাখিল, বাছাই ও প্রত্যাহারের পর যখন চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে তারপরই অ্যাপ থেকে স্ব স্ব আসনের প্রার্থী তালিকা জানতে পারবেন প্রবাসী ভোটাররা।
ওই আসনে কোনো রাজনৈতিক দল বা তার পছন্দের প্রার্থীর প্রতীক ভোটার নিজেই দেখতে পারবেন অ্যাপে। সেখান থেকে প্রবাসী ভোটার ১১৯টি প্রতীকের মধ্যে তার পছন্দের প্রতীকের ব্যালটের পাশে টিক বা ক্রস চিহ্ন দেবেন।
প্রবাসী ভোটার প্রকল্পের টিম লিডার সালীম আহমাদ খান জানান, ‘পছন্দের প্রতীকে ভোট দেওয়ার পর ব্যালট রিটার্ন খামে ভরে তারপর কাছাকাছি পোস্ট অফিসে পাঠাবেন। আগে থেকেই ডাক মাসুল পে করা থাকবে। সে কারণে এটা চলে আসবে দেশে স্ব স্ব ঠিকানায়।’