ক্যাটাগরি: জাতীয়

৬৭৮ কোটি মানিলন্ডারিং: ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের মালিকের বিরুদ্ধে মামলা

চোরাচালানের মাধ্যমে স্বর্ণ ও হীরা সংগ্রহ করে অবৈধ পন্থায় অর্জিত ৬৭৮ কোটি টাকা মানিলন্ডারিংয়ের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের মালিক দিলীপ কুমার আগরওয়ালার বিরুদ্ধে মামলা করেছে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) গুলশান থানায় মামলাটি দায়ের করে সিআইডি।

সিআইডির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গতবছরের ২৯ সেপ্টেম্বর সিআইডি ঢাকার ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড লিমিটেডের আর্থিক লেনদেন, নথিপত্র ও ব্যাংক হিসাব পর্যালোচনা করে অনুসন্ধান শুরু করে। অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি স্থানীয় বাজার থেকে চোরাচালানের মাধ্যমে স্বর্ণ ও হীরা সংগ্রহ করে অবৈধ পন্থায় অর্থ উপার্জন করেছে। প্রাথমিক তথ্য–প্রমাণে চোরাচালান ও উৎসহীন অর্থ উপার্জনের সত্যতা মেলায় গত তাং- ১৭/১১/২০২৫ খ্রি. দিলীপ কুমার আগরওয়ালার বিরুদ্ধে ৬,৭৮,১৯,১৪,০১৪ (ছয়শত আটাত্তর কোটি উনিশ লক্ষ চৌদ্দ হাজার চৌদ্দ) টাকার মানিলন্ডারিং মামলা (গুলশান থানার মামলা নং-৩০, তাং- ১৭/১১/২০২৫, ধারা ৪(২) (৪) মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২, সংশোধনী-১৫) রুজু করে সিআইডি। অনুসন্ধানে জানা যায়, দিলীপ কুমার আগরওয়ালা ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড ও ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড লিমিটেডের স্বত্বাধিকারী হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে দেশে-বিদেশে স্বর্ণ ও হীরা ব্যবসা পরিচালনার আড়ালে অর্থ পাচার ও চোরাকারবারি করে আসছিলেন।

অনুসন্ধানে আরও দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি ২০০৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৪ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এলসির মাধ্যমে বিদেশ থেকে মোট ৩৮,৪৭,৪৮,০১১.৫২ (আটত্রিশ কোটি সাতচল্লিশ লাখ আটচল্লিশ হাজার এগার টাকা বায়ান্ন পয়সা) টাকার স্বর্ণবার, অলংকার, লুজ ডায়মন্ড ও অন্যান্য দ্রব্য বৈধভাবে আমদানি করে। একই সময়ে স্থানীয় বাজার থেকে ক্রয়/বিনিময়/পরিবর্তন পদ্ধতিতে মোট ৬,৭৮,১৯,১৪,০১৪ (ছয়শত আটাত্তর কোটি উনিশ লাখ চৌদ্দ হাজার চৌদ্দ) টাকার স্বর্ণ ও হীরা সংগ্রহ করে, কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি সিআইডিকে এর উৎস বা সরবরাহকারী সংক্রান্তে বৈধ কাগজপত্র প্রদর্শন করতে ব্যর্থ হয়। বৈধ নথি না থাকায় এসব বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ ও হীরা অবৈধ চোরাচালানের মাধ্যমে দেশে আনা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়।

চোরাচালানের মাধ্যমে অর্জিত সম্পদ ও অপরাধলব্ধ অর্থ রূপান্তর, হস্তান্তর বা ব্যবহার সংক্রান্ত তথ্য ও নথিপত্র পর্যবেক্ষণে মানিলন্ডারিংয়ের প্রাথমিক সত্যতা প্রতীয়মান হলে অনুসন্ধান প্রতিবেদন অতিরিক্ত আইজিপি, সিআইডি বরাবর দাখিল করা হয়। পরবর্তীতে গত ১৬ নভেম্বর তারিখে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট মামলা দায়েরের অনুমোদন পায়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড ও ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড লিমিটেডের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় দায়েরকৃত মানিলন্ডারিং মামলা সিআইডির তফসিলভুক্ত হওয়ায় এর তদন্ত সিআইডিই পরিচালনা করবে। প্রয়োজনীয় নথি, ব্যাংক লেনদেন এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের তথ্য যাচাই করে আইনানুযায়ী নিবিড় তদন্তের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে সিআইডি।

রাষ্ট্রের অর্থপাচারে জড়িত বিভিন্ন ব্যক্তি ও গোষ্ঠিদের আইনের আওতায় আনা এবং রাষ্ট্রের আর্থিক স্বার্থ সংরক্ষণে সিআইডির এ ধরনের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

এমকে

শেয়ার করুন:-
শেয়ার