ক্যাটাগরি: রাজনীতি

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সাংবাদিকদের অবদান চিরস্মরণীয়: ড. হেলাল

মুক্ত গণমাধ্যম মঞ্চের উদ্যোগে ‘গণমাধ্যমের জুলাই আত্মদান’ মোড়ক উম্মোচন ও জুলাই সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (২৯ অক্টোবর) রাজধানীর বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রে ‘গণমাধ্যমের জুলাই আত্মদান’ মোড়ক উম্মোচন ও জুলাই সংলাপে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন (ঢাকা-৮ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী)। এছাড়াও অনুষ্ঠানে জুলাই ফাউন্ডেশনের সিইও লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) কামাল আকবরসহ শহীদ সাংবাদিক পরিবারের সদস্য এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, গণমাধ্যম কর্মী, মানবাধিকার কর্মী, বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ বলেন, জুলাই জাতীয় সনদ নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ৬ জন সাংবাদিকের অবদান তুলে ধরে তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সাংবাদিক সমাজ প্রশংসনীয় ভূমিকা রেখেছে। বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার গণমাধ্যমের স্বাধীনতা লুন্ঠন করার ফলে সাংবাদিকেরা শোষণের শিকার হয়েছে। গণমাধ্যমের বৈষম্য দূর করে সাংবাদিকদের শোষণমুক্ত করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন গঠন করেছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব পালনে জুলাইয়ের সকল স্টেকহোল্ডাদের জন্য কাজ করছে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সাংবাদিকদের অবদান চিরস্মরণীয়। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ৬ জন সাংবাদিক শহীদ হয়েছে এবং বহু সাংবাদিক আহত হয়েছে। তারা দেশ ও জাতির জন্য আত্মদানে পিছ পা হয়নি। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের গণহত্যার চিত্র তারা দেশ-বিদেশে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ করে বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরেছে। এতে করে আন্দোলনে ছাত্র-জনতার পক্ষে বিশ্ব সম্প্রদায়ের সমর্থন বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে ছাত্র-জনতার বিজয় সহজ হয়েছে। স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও সাংবাদিকদের অধিকার এবং সুরক্ষা রাষ্ট্র নিশ্চিত করতে পারেনি। রবং যখন যারা ক্ষমতায় বসেছে তারা সাংবাদিকদের কন্ঠরোধ করার চেষ্টা করেছে। কালো আইন তৈরি করে সাংবাদিকদের মামলা দিয়ে হয়রানি ও নির্যাতন চালানো হয়েছে। সাগর-রুনি হত্যা মামলা সহ কোনো সাংবাদিক হত্যার ন্যায় বিচার তাদের পরিবার পায়নি। জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে গণমাধ্যম কর্মীদের অধিকার ও সুরক্ষা নিশ্চিত করার পাশাপাশি সাগর-রুনি হত্যা মামলা সহ সাংবাদিক হত্যার সকল মামলার ন্যায় বিচার সম্পন্ন করবে।

তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন বাঁধাগ্রস্ত করতে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী যেমন নৈরাজ্য সৃষ্টি করবে তেমনি নব্য চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসীরাও ক্ষমতা দখলের জন্য ভোট চুরি, কেন্দ্র দখল, ব্যালট বক্স লুটের চেষ্টা করবে। একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন জাতিকে উপহার দিতে সরকারকে সহযোগিতা করতে তিনি সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানান।

জুলাই সনদ প্রসঙ্গে ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, জুলাই সনদের আদেশ জারি করে নভেম্বরের মধ্যে গণভোট সম্পন্ন করতে হবে এবং জুলাই সনদের ভিত্তিতেই জাতীয় নির্বাচন হতে হবে। যারা গণভোট এবং জাতীয় নির্বাচন একদিন চায় তারা মূলত জুলাই সনদ মেনে নিতে পারছে না। কোন অবস্থাতেই গণভোট এবং জাতীয় নির্বাচন একই দিনে হতে পারে না। কারণ মাত্র ৫২ সেকেন্ডে একজন ভোটারকে গণভোটরে সব প্রস্তাব পড়ে বুঝে ভোট দেওয়া সম্ভব নয়। তবে নভেম্বরের যেকোন সময় গণভোট সম্পন্ন হয়ে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দেওয়া হলে একদিকে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব হবে। অপরদিকে পুরোনো ব্যবস্থায় অনেক পরিবর্তন আসবে। পরিবর্তনের ভয়েই একটি দল নভেম্বরে গণভোট মেনে নিতে পারছে না। কোনো দলের প্রতি অনুগত না হয়ে জনগণের আশা-আকাঙ্খা বাস্তবায়নে নভেম্বরের মধ্যেই গণভোট আয়োজন করতে তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

শেয়ার করুন:-
শেয়ার