ক্যাটাগরি: রাজধানী

দেশের অর্থনৈতিক চালিকাশক্তির প্রায় অর্ধেক এখন রাজধানী-কেন্দ্রিক

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ‘ঢাকা-প্রভাব’ এখন প্রায় দ্বিগুণ শক্তি নিয়ে হাজির। ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) এর সাম্প্রতিক ‘ইকোনমিক পজিশন ইনডেক্স’ (ইপিআই) জরিপ বলছে, দেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৪৬ শতাংশই এখন ঢাকাকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হচ্ছে। শুধু তাই নয়, জাতীয় কর্মসংস্থানের ৪০ শতাংশও রাজধানীতেই সীমিত।

২৫ অক্টোবর শনিবার ডিসিসিআই-এর এক অনুষ্ঠানে প্রকাশিত এই প্রতিবেদনটি দেশের অর্থনৈতিক বৈষম্যেরও একটি স্পষ্ট চিত্র তুলে ধরে। জরিপ অনুসারে, যেখানে বাংলাদেশের গড় মাথাপিছু আয় $২,৮২০ ডলার, সেখানে শুধুমাত্র ঢাকাবাসীর গড় মাথাপিছু আয় প্রায় দ্বিগুণ, যা $৫,১৬৩ ডলার। এর অর্থ হলো, জাতীয় আয়ের সিংহভাগই এখন রাজধানীর মানুষের হাতে।

ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে পরিচালিত এই ইপিআই জরিপটি উৎপাদন, বাণিজ্য, রপ্তানি, কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ খাত বিশ্লেষণ করেছে। প্রতিবেদনে উঠে এসেছে যে, এশিয়ার অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ এই নগরীতে দেশের মোট জনসংখ্যার ১১.২ শতাংশ ও শহুরে জনসংখ্যার ৩২ শতাংশের বসবাস।

অর্থনৈতিক আধিপত্যের দিক থেকে, দেশের মোট রপ্তানির ৪০ শতাংশই আসে ঢাকা-নির্ভর শিল্প ও প্রতিষ্ঠান থেকে। এমনকি, উৎপাদন, সেবা ও পোশাক খাতের মতো মূল শিল্পগুলো মুষ্টিমেয় কিছু প্রতিষ্ঠানের হাতে (যথাক্রমে ৩৬৫টি, ২৮৯টি এবং ২১৪টি) নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে, যা অর্থনীতির কেন্দ্রীভূত চিত্রকে আরও স্পষ্ট করে।

অনুষ্ঠানে বক্তারা অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের ওপর দেশের মোট অর্থনীতির প্রায় ৮০ শতাংশ নির্ভরশীলতার বিষয়টি তুলে ধরে নীতিনির্ধারণের জন্য আরও সুনির্দিষ্ট তথ্যের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। যদিও ঢাকাকেন্দ্রিক এই অর্থনৈতিক উত্থান দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের চালিকাশক্তি, তবুও বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, আঞ্চলিক বৈষম্য হ্রাস, অবকাঠামোগত চাপ সামাল দেওয়া এবং সুষম উন্নয়ন নিশ্চিত করা সরকারের জন্য এখন অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ। ডিসিসিআইকে পরবর্তী জরিপে কৃষিখাত অন্তর্ভুক্ত করারও পরামর্শ দেওয়া হয়।

শেয়ার করুন:-
শেয়ার