আইন-আদালত
জামায়াতের ৩৬ বছর আগের ফর্মুলা এখনও গ্রহণযোগ্য: শিশির মনির
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফেরাতে চূড়ান্ত আপিল শুনানি তৃতীয় দিনের মতো শেষ হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) তৃতীয় দিনের শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে সাত বিচারপতির আপিল বেঞ্চে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করা হয়েছে।
আদালতে ইন্টারভেনার হিসেবে শুনানি করছেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এহসান এ সিদ্দিক। আর জামায়াতে ইসলামী সেক্রেটারির পক্ষে আইনজীবী শিশির মনির।
শুনানি শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আজ থেকে ৩৬ বছর আগে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের গণতন্ত্রের জন্য একটি নিরপেক্ষ নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ফর্মুলা দিয়েছিল। এ ফর্মুলায় তিনটি নির্বাচন হয়েছিল। এরপর এ ফর্মুলা বাদ দেওয়া হয়। এতদিন পরে এসে আজও সবাই মনে করছে, এটাই বাংলাদেশের গণতন্ত্রের জন্য সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য ফর্মুলা। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করলেই বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব। যে প্রক্রিয়ায় এই তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাদ দেওয়া হয়েছে, তা ছিল সম্পূর্ণভাবে পূর্বপরিকল্পিত নকশার আলোকে। এ-সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটিও তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাদ দিতে চায়নি। এক ব্যক্তির ইচ্ছায় তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাদ দিয়ে দেশে একনায়কতান্ত্রিক শাসন কায়েম করা হয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, এর ফলে রাজনীতি, অর্থনীতি ও সমাজনীতিসহ সব ক্ষেত্রে বড় ধ্বংসের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ গেছে। আবার আমরা এখন আলোচনা করে এর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছি। যদি নির্বাচন ব্যবস্থাকে সঠিক নিয়মে দাঁড় করাতে হয়, তাহলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ফর্মুলার মধ্যেই যদি আমরা যেতে পারি— এটি হবে আমাদের জন্য জাতিগতভাবে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য মাধ্যম। ইতোমধ্যে ঐকমত্য কমিশন ও সংস্কার প্রক্রিয়ার মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান নিয়ে জুলাই সনদে একটি নতুন বিধানের প্রস্তাব করা হয়েছে। আগামীতে আদালত যে আদেশই দিক না কেন, তা যেন জুলাই সনদের সঙ্গে বা তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে জুলাই সনদে যে আলোচনা হয়েছে, তার সঙ্গে মিল রেখে হয়। নইলে সংস্কার প্রক্রিয়া অনেকটাই ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী জাতীয় সংসদে গৃহীত হয় ১৯৯৬ সালে। এ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে অ্যাডভোকেট এম. সলিম উল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন। ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট হাইকোর্ট বিভাগ এ রিট খারিজ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থাকে বৈধ ঘোষণা করে।
এই সংশোধনীর বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এম. সলিম উল্লাহসহ অন্যরা ১৯৯৮ সালে হাইকোর্টে রিট করেন। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল দেন। হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট রায় দেন।
এ রায়ের বিরুদ্ধে সরাসরি আপিলের অনুমতি দেওয়া হয়। এর ধারাবাহিকতায় ২০০৫ সালে আপিল করে রিট আবেদনকারী পক্ষ। এই আপিল মঞ্জুর করে আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ ২০১১ সালের ১০ মে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন।
ঘোষিত রায়ের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার বিলোপসহ বেশ কিছু বিষয়ে আনা পঞ্চদশ সংশোধনী আইন ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পাস হয়। ২০১১ সালের ৩ জুলাই এ–সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়।
৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর এ রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন করেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি। অন্য চারজন হলেন-তোফায়েল আহমেদ, এম. হাফিজউদ্দিন খান, জোবাইরুল হক ভূঁইয়া ও জাহরা রহমান।
আপিল বিভাগের ওই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে ১৬ অক্টোবর একটি আবেদন করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এছাড়া রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে গত বছরের ২৩ অক্টোবর আরেকটি আবেদন করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।
পরবর্তীতে নওগাঁর রানীনগরের নারায়ণপাড়ার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেন আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে গত বছর একটি আবেদন করেন।
আইন-আদালত
ইসির সিদ্ধান্ত অবৈধ, বাগেরহাটে ৪ সংসদীয় আসন থাকবে: হাইকোর্ট
বাগেরহাটের চারটি আসন থেকে একটি কমিয়ে তিনটি আসন করে নির্বাচন কমিশনের গেজেট অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে বাগেরহাটের চারটি সংসদীয় আসন বহাল করতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (১০ নভেম্বর) বিচারপতি শশাঙ্ক শেখর সরকার ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে আদালত এ আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার শেখ মোহাম্মদ জাকির হোসেন।
গত ১৬ সেপ্টেম্বর বাগেরহাটের চারটি সংসদীয় আসন বহাল করতে কেন নির্দেশনা দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে বাগেরহাটের চারটি আসন থেকে একটি কমিয়ে তিনটি আসন করে নির্বাচন কমিশনের গেজেট কেন অবৈধ হবে না, রুলে তাও জানতে চাওয়া হয় নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্টদের আগামী ১০ দিনের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
সেদিন বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার শেখ মুহাম্মদ জাকির হোসেন। তাকে সহযোগিতা করেন অ্যাডভোকেট বিপ্লব কুমার পোদ্দার, অ্যাডভোকেট ফয়সাল মোস্তফা, অ্যাডভোকেট রাজিয়া সুলতানা, ব্যারিস্টার কাজী সামান্তা এনাম, অ্যাডভোকেট আমিনুজ্জামান সোহাগ, অ্যাডভোকেট এনামুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান, অ্যাডভোকেট তানভীর আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. ইকরামুল কবির।
এর আগে বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন বহালের দাবিতে হাইকোর্টে দুটি রিট দায়ের করা হয়।
বাগেরহাট প্রেসক্লাব, জেলা আইনজীবী সমিতি, জেলা বিএনপি, জেলা জামায়াতে ইসলামী, জেলা ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, জেলা ট্রাক মালিক সমিতি এ রিট দুটি দায়ের করে। রিটে বাংলাদেশ সরকার, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশন সচিব ও অ্যাটর্নি জেনারেলকে বিবাদী করা হয়।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে গত ৩০ জুলাই নির্বাচন কমিশন প্রাথমিকভাবে বাগেরহাটের চারটি আসন থেকে একটি কমিয়ে তিনটি করার প্রস্তাব দেয়। ওই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলনে নামে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। তারা গড়ে তোলে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি এবং হরতাল-অবরোধসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে। চারটি আসন বহাল রাখার দাবিতে কমিশনের শুনানিতেও অংশ নেন।
কিন্তু নির্বাচন কমিশন গত ৪ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করে। এতে চারটি আসন থেকে একটি কমিয়ে বাগেরহাটকে তিন আসনে ভাগ করা হয়। আগের প্রস্তাবের তুলনায় শুধু সীমানা পরিবর্তন করা হয়। এর পর থেকেই সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি আসন কমানোর সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে হরতাল, অবরোধ, অবস্থান, বিক্ষোভসহ নানা কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের অভিযোগ, ইসির আসন পুনর্বিন্যাস গণমানুষের দাবিকে উপেক্ষা করেছে।
চূড়ান্ত গেজেট অনুযায়ী, বাগেরহাট সদর, চিতলমারী ও মোল্লাহাট নিয়ে বাগেরহাট-১; ফকিরহাট, রামপাল ও মোংলা নিয়ে বাগেরহাট-২ এবং কচুয়া, মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলা নিয়ে বাগেরহাট-৩ গঠিত হয়েছে।
১৯৬৯ সাল থেকে বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসনে নির্বাচন হয়ে আসছিল। সে অনুযায়ী বাগেরহাট-১ ছিল চিতলমারী-মোল্লাহাট-ফকিরহাট; বাগেরহাট-২ ছিল বাগেরহাট সদর-কচুয়া; বাগেরহাট-৩ ছিল রামপাল-মোংলা এবং বাগেরহাট-৪ ছিল মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা।
আইন-আদালত
১৯৩ নন-ক্যাডারকে সহকারী সমাজসেবা কর্মকর্তা পদে নিয়োগের নির্দেশ
৪১তম বিসিএসে উত্তীর্ণ ১৯৩ জন নন-ক্যাডার প্রার্থীকে সহকারী সমাজসেবা কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। বাংলাদেশ কর্ম কমিশনকে (পিএসসি) রায়ের কপি হাতে পাওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে এ নিয়োগের জন্য সুপারিশ দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে করা রিটের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি শশাঙ্ক শেখর সরকার ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সরোয়ারের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। আদালতে রিটকারীদের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব। তাকে সহযোগিতা করেন অ্যাডভোকেট বায়েজীদ হোসাইন, অ্যাডভোকেট নাঈম সরদার, ব্যারিস্টার সোলায়মান তুষার ও অ্যাডভোকেট লোকমান হাকিম।
গত বছরের ১৯ মার্চ হুমায়ন কবির পল্লব নন-ক্যাডার প্রার্থী সানজানা কবীর ঈশা, মো. তারেকুর রহমানসহ ১৯০ জনের পক্ষে সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি করেন। পরবর্তীতে আরও তিনজন ওই রিট মামলায় আবেদনকারী হিসেবে সংযুক্ত হন। ২০ মার্চ হাইকোর্ট রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে রুল জারি করেন। সেই রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে আজ রায় দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে হুমায়ন কবির পল্লব বলেন, হাইকোর্ট ৪১তম বিসিএস নন-ক্যাডারের অপেক্ষমাণ প্রার্থীদের মধ্য থেকে ১৯৩ জনকে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন সহকারী সমাজসেবা কর্মকর্তা পদে নিয়োগের সুপারিশ করতে রায় দিয়েছেন। আশা করছি তিন নম্বর বিবাদী তথা বাংলাদেশ কর্ম কমিশন রায়ের কপি প্রাপ্তির ৬০ দিনের মধ্যেই আবেদনকারীদের উক্ত পদে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করবে এবং আবেদনকারী চাকরিপ্রার্থীরা ন্যায়বিচার পাবেন।
আবেদনকারীদের নিয়োগের সুপারিশ করতে গত বছরের ১৪ মার্চ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং পিএসসির চেয়ারম্যান, সচিব ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে ইমেইলে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়। নোটিশে অপেক্ষমাণ প্রার্থীদের নন-ক্যাডার দ্বিতীয় শ্রেণির ‘সহকারী সমাজসেবা অফিসার’ পদে সুপারিশের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করা হয়। কিন্তু নোটিশ পাওয়ার পরও কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় রিট করা হয়।
রিটে বলা হয়, ৪১তম বিসিএস পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর প্রকাশিত হয়। ওই বিসিএসে সর্বমোট ১২ হাজার ৩৪১ জন পরীক্ষার্থী প্রিলিমিনারি, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী শূন্যপদে ক্যাডার সার্ভিসে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পদ স্বল্পতার কারণে ৯ হাজার ৮২১ জন প্রার্থীকে ক্যাডার পদের সুপারিশ করা সম্ভব হয়নি। প্রিলিমিনারি, লিখিত, মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ কিন্তু পদ স্বল্পতার কারণে বঞ্চিত এসব নন-ক্যাডার প্রার্থীকে পিএসসি সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে চাহিদার ভিত্তিতে সুপারিশ করে থাকে।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ২০২৩ সালের ২৫ জুন ৪১তম বিসিএস নন-ক্যাডার থেকে সহকারী সমাজসেবা কর্মকর্তার (দশম গ্রেড) ১৯৫টি পদে সুপারিশের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে জানায়। পরবর্তীতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় পদগুলোতে সুপারিশ করতে বাংলাদেশ কর্ম কমিশনকে অনুরোধ জানায়। কিন্তু পিএসসি উক্ত পদে ৪১তম বিসিএস নন-ক্যাডার থেকে সুপারিশ করেনি। অথচ সুপারিশ পেতে নোটিশদাতাদের প্রয়োজনীয় যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা বিদ্যমান ছিল। কিন্তু পদগুলোতে তাদের সুপারিশ করা হয়নি।
এতে আরও বলা হয়েছে, সমাজসেবা অধিদপ্তর (গেজেটেড এবং নন গেজেটেড কর্মকর্তা) নিয়োগ বিধিমালা ২০১৩, (সংশোধিত বিধিমালা, ২০২০) মতে, সহকারী সমাজসেবা কর্মকর্তা পদে নিয়োগ পেতে হলে একজন প্রার্থীকে নির্দিষ্ট শিক্ষাগত যোগ্যতার পাশাপাশি কোনো স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান হতে কম্পিউটার চালনায় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হতে হবে। রিট আবেদনকারীদের প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতার পাশাপাশি বিধিতে উল্লিখিত কম্পিউটার চালনায় প্রশিক্ষণ থাকা সত্ত্বেও পিএসসি তাদের উক্ত পদে আবেদনেরই কোনো সুযোগ দেয়নি। ফলে সুপারিশ করেনি যা আইনের দৃষ্টিতে অন্যায় এবং ন্যায়বিচার-বহির্ভূত। অথচ বিধি পাস হওয়ার আরও পরে ২০২২ সালের ২৯ মার্চ, ৩৮তম বিসিএস নন-ক্যাডার প্রার্থীদের উক্ত পদে সাধারণভাবে সুপারিশ ও নিয়োগ দেওয়া হয়। এর দ্বারা রিট আবেদনকারীদের প্রতি চরম বৈষম্য করা হয়।
রিটে আরও বলা হয়েছে, ‘নন-ক্যাডার পদে নিয়োগ (বিশেষ) বিধিমালা ২০১০, সংশোধিত বিধিমালা ২০১৪’ অনুযায়ী ৪১তম বিসিএস নন-ক্যাডার সুপারিশের জন্য অপেক্ষমাণ প্রার্থীরা ওসব পদে সুপারিশ ও নিয়োগ পেতে আইনগতভাবে উপযুক্ত।
আইন-আদালত
সংসদ নির্বাচন অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে হবে: অ্যার্টনি জেনারেল
আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে হবে এমন মত তুলে ধরে অ্যার্টনি জেনারেল আসাদুজ্জামান, চতুর্দশ নির্বাচন থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা কার্যকরের পক্ষে মতামত দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (০৬ নভেম্বর) নির্বাচনকালীন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরাতে ৯ম দিনের আপিল শুনানিতে এ সব কথা বলেন তিনি।
এদিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানি আজ শেষ হয়।
এদিন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে দ্বিতীয় দিনের মতো শুনানি হয়। এদিন শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।
এর আগে বুধবারও প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে শুনানি করেন তিনি।
ওইদিন শুনানিতে অ্যার্টনি জেনারেল বলেন, সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে দেয়া রায় বহাল থাকা উচিৎ হবে না। রায় পরিবর্তন করে সাবেক প্রধান বিচারপতির খায়রুল হক দণ্ডনীয় অপরাধ করেছেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
গত ২৭ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদন মঞ্জুর করেন সর্বোচ্চ আদালত। দেয়া হয় আপিলের অনুমতি।
এরপর ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ ৫ জন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল গোলাম পরওয়ার আপিল করেন।
এর আগে ২০১১ সালে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করে রায় দেন সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের আপিল বিভাগ।
আইন-আদালত
বিচারপতি খুরশীদ আলমকে অপসারণ
সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারকে অপসারণ করা হয়েছে। সংবিধানে পুনর্বহাল করা অনুচ্ছেদ ৯৬-এর দফা (৬) অনুযায়ী তাকে অপসারণ করেন রাষ্ট্রপতি।
বুধবার (৫ নভেম্বর) আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলের তদন্তে বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার তার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে অযোগ্য হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন। এ কারণে রাষ্ট্রপতি সংবিধানের পুনর্বহাল করা অনুচ্ছেদ ৯৬-এর দফা (৬) অনুযায়ী তাকে অপসারণ করা হয়েছে।
এর আগে অনিয়মের অভিযোগের ব্যাখ্যা দিতে ছুটিতে পাঠানো বিচারপতিকে ডেকে ছিলেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল। গত ২ সেপ্টেম্বর তার বিষয়ে সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলে চূড়ান্ত শুনানি হয়।
এর আগে গত ২১ মে আইন ও বিচার বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানকে অপসারণের কথা জানানো হয়।
আইন-আদালত
তিন শতাধিক বিচারককে পদোন্নতির সিদ্ধান্ত
সারাদেশের অধস্তন আদালতের তিন শতাধিক বিচারককে জেলা জজ পদে পদোন্নতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের ফুলকোর্ট সভা।
মঙ্গলবার বিকেলে সুপ্রিম কোর্টের সব বিচারপতিদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত ফুলকোর্ট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এছাড়া দুই শতাধিক বিচারককে অতিরিক্ত জেলা জজ পদে পদোন্নতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ফুলকোর্ট সভার একাধিক সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
সূত্র জানায়, ফুলকোর্ট সভায় আলোচিত রেইনট্রি মামলায় আপিল বিভাগের নিষেধ থাকা সত্ত্বেও এক আসামিকে জামিন দেওয়ার ঘটনায় বিচারিক ক্ষমতা হারানো জেলা জজ কামরুন্নাহার ক্ষমতা ফিরে পাবেন কি না, এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে জিএ কমিটিকে দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে।
প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের সভাপতিত্বে বিকেল ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত ফুলকোর্ট সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ২০টির অধিক অ্যাজেন্ডা নিয়ে আলোচনা হয়। তবে, সময় স্বল্পতার কারণে সুপ্রিম কোর্টের বার্ষিক ক্যালেন্ডার অনুমোদনের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি ফুলকোর্ট সভায়।
সভায় আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের অধিকাংশ বিচারপতি উপস্থিত ছিলেন।



