বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর, ঢাকা-৮ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন বলেছেন, যারা দল নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না; তারা কখনো দেশ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না।
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) বিকেলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা-৮ আসনের উদ্যোগে মতিঝিলে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের পক্ষে গণসংযোগ অভিযান পূর্বক পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, চাঁদাবাজ-সন্ত্রাসীরা ব্যবসা প্রতিষ্ঠা-ফুটপাত শেষ করে এবার মানুষের বাসা-বাড়িতে, ফ্ল্যাটে-ফ্ল্যাটে গিয়ে চাঁদা দাবি করছে। এমনকি তারা নিজ দলের সাবেক মহাসচিবের পরিবারের কাছ থেকেও গভীর রাতে গিয়ে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে জোরপূর্বক চাঁদা আদায় করেছে। ৫ আগস্ট পরবর্তী তাদের দলীয় নেতাকর্মী সারাদেশে দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী, লুটপাট, দখল, খুন, ধর্ষণের মহোৎসবে মেতে উঠেছে।
দুর্নীতিগ্রস্ত নেতৃত্ব দিয়ে নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য সৎ, যোগ্য, দক্ষ, আদর্শিক ও নৈতিক নেতৃত্ব নির্বাচিত করতে হবে। জামায়াতে ইসলামীতে রয়েছে সৎ, যোগ্য, দক্ষ, আদর্শিক ও নৈতিক, দুর্নীতি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ মুক্ত নেতৃত্ব রয়েছে। জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে ৫ বছরে নয় এক বছরেই দেশকে দুর্নীতি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজমুক্ত করে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জন করবে। ক্ষুধা, দারিদ্র, বেকারত্ব দূরীকরণের মাধ্যমে বৈষম্যহীন কল্যাণ ও মানবিক বাংলাদেশ গড়ে তোলা হবে। অন্যরা ক্ষমতায় বসতে পারলে দেশকে দেউলিয়া করবে।
এসময় তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী যারাই ক্ষমতায় বসেছে তারাই চেয়েছে নিজস্ব মতবাদ প্রতিষ্ঠিত করে ইসলামের বিধান মুছে দিতে। জামায়াতে ইসলামীসহ এদেশের আলেম-ওলামা সমাজে ইসলামের আদর্শিক সৌন্দর্য পৌঁছাতে চেষ্টা করেছে। কিন্তু ক্ষমতাসীনরা আলেমদের প্রতিহত করেছে। জামায়াতে ইসলামী এদেশের প্রতিটি ঘরে-ঘরে দ্বীনের দাওয়াত পৌঁছানোর মহান দায়িত্ব পালন অব্যাহত রেখেছে।
লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড প্রসঙ্গে ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে একটি দলের নেতাকর্মীরা মতিঝিল, শাহজাহানপুর, গুলিস্তান সহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বাসা-বাড়িতে গিয়ে হুমকি দিচ্ছে দাঁড়িপাল্লার পক্ষে কোনো সভা-সমাবেশে যেতে পারবে না। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত না করে নির্বাচন দিলে সেটি হবে জাতির সাথে তামাশা। জাতি তামাশার নির্বাচন মেনে নেবে না। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য অনতিবিলম্বে প্রশাসনে দলীয়করণ বন্ধ করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি করতে এবং সর্বস্তরে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
ঢাকা-৮ সংসদীয় এলাকার জনসাধারণের উদ্দেশ্যে ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশের হৃৎপিন্ড হচ্ছে ঢাকা-৮ সংসদীয় এলাকা। এখানেই রয়েছে পিজি হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল, সচিবালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, বাংলাদেশ ব্যাংক, ইসলামিক ফাউন্ডেশনসহ বহু রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে দলীয়করণের মাধ্যমে অতীতে জনসাধারণকে শোষন করা হয়েছে। আগামী জনগণকে শোষনমুক্ত করতে বৈষম্যহীন রাষ্ট্র গঠনের বিকল্প নেই। অতীতে যারা বৈষম্যের সৃষ্টি করেছে তাদের দ্বারা বৈষম্যহীন দেশ গড়া সম্ভব হবে না। বৈষম্যহীন দেশ গড়তে নতুন নেতৃত্বে নির্বাচতি করতে তিনি জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।
আগামীতে ঢাকা-৮ আসনের জনগণ তাকে নির্বাচিত করলে তিনি জনসাধারণকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে ঢাকা-৮ সংসদীয় এলাকাকে দুর্নীতি, সন্ত্রাস-চাঁদাবাজ, মাদক মুক্ত করে শান্তির নীড় হিসেবে গড়ে তুলবেন জানিয়ে তিনি স্থানীয়দের সহযোগিতা ও সমর্থন কামনা করেন।
জামায়াতের ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিসে শুরা সদস্য ও মতিঝিল দক্ষিণ থানা আমীর মাওলানা মোতাছিম বিল্লাহ’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পথা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি, ঢাকা-৮ আসনে জামায়াতে ইসলামীর নির্বাচন পরিচালক শামছুর রহমান। আরও উপস্থিত ছিলেন মহানগরীর কর্মপরিষদ সদস্য ও পল্টন থানা আমীর শাহীন আহমেদ খান, মহানগরীর কর্মপরিষদ সদস্য ও শাহজাহানপুর পূর্ব থানা আমীর মাওলানা শরিফুল ইসলাম, মতিঝিল উত্তর থানা আমীর মো. শামছুল বারি, রমনা থানা আমীর মো. আতিকুর রহমান, পল্টন থানা সেক্রেটারি মঞ্জুরুল ইসলাম, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা মিঠু সহ ঢাকা-৮ সংসদীয় এলাকার বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ।
সভা শেষে ড. হেলাল উদ্দিনের নেতৃত্বে, নেতৃবৃন্দ মতিঝিল-আরামবাগ এলাকায় ব্যাপক গণসংযোগ অভিযান পরিচালনা করেন। এসময় নেতৃবৃন্দ স্থানীদের মাঝে জামায়াতে ইসলামীর লিফলেট বিতরণ করে দাঁড়িপাল্লার পক্ষে সমর্থন কামনা করেন।