শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুরের উত্তর তারাবুনিয়ার গায়েন কান্দির সেলিম গায়েনের বয়স প্রায় ৬০ বছর। ছোটবেলায় বসন্ত রোগে আক্রান্ত হয়ে দৃষ্টি হারান তিনি। তবে চোখের আলো হারালেও, জীবন থেকে হারাননি আত্মবিশ্বাস আর কর্মের আলো।
প্রায় ৪৫ বছর ধরে গ্রামে দোকানদারি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন সেলিম গায়েন। গ্রামের মানুষ তাকে চেনে ‘অন্ধ সেলিম’ নামে, কিন্তু তার কর্মদক্ষতা ও সততায় আজও সবাই মুগ্ধ। অন্ধ হয়েও সৌরবিদ্যুতের লাইট ও ফ্যান মেরামত করতে পারেন তিনি। শুধু নিজের দোকানের জন্য নয়, এলাকার মসজিদেও বিনা পারিশ্রমিকে লাইট ও ফ্যান ঠিক করে দেন। পাশাপাশি নিয়মিত আজান দেন স্থানীয় মসজিদে।
তার ৯ সন্তানের মধ্যে ৪ছেলে প্রবাসে আছেন। তবে কারও কাছে সাহায্যের হাত না বাড়িয়ে নিজেই হালাল উপার্জনের পথে জীবন গড়েছেন তিনি। কিছুদিন আগে তার দোকান থেকে প্রায় ২০ হাজার টাকা চুরি হয়। জীবনের শেষ বয়সে এমন ঘটনায় মন ভেঙে গেলেও তিনি হাল ছাড়েননি। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত নিজের দোকানেই কাটান সময়।
চোখের আলো না থাকলেও, কর্ম আর সততার আলোয় আলোকিত হয়ে উঠেছেন সেলিম গায়েনের জীবন। অন্ধ হয়েও তিনি যেন সমাজের এক জ্বলজ্বলে দৃষ্টান্ত যে প্রমাণ করে, ইচ্ছা থাকলে অসম্ভব বলে কিছু নেই।
এলাকার মানুষ তাকে একজন ভালো ও সৎ মানুষ হিসেবে শ্রদ্ধা করেন। সমাজের সবাই তাকে সম্মান ও ভালোবাসেন। অনেকেই বলেন, সেলিম গায়েনের মতো মানুষ আজকাল বিরল। তার সততা, ধৈর্য ও পরিশ্রম দেখে গ্রামের তরুণরাও অনুপ্রাণিত হয়। স্থানীয়রা তার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনায় নিয়মিত দোয়া করেন, যেন তিনি আরও দীর্ঘদিন সমাজের জন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকেন।
অর্থসংবাদ/কাফি/তাহের