জাতীয়
শহীদ মিনারেই রাত কাটাবেন আন্দোলনরত শিক্ষকরা
মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া দেওয়ার প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়া পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা। এ দাবিতে রবিবার (১২ অক্টোবর) রাতেও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান করবেন তারা।
এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের ব্যানারে এদিন সকাল ৯টা থেকে এ কর্মসূচিতে অংশ নেন কয়েক হাজার শিক্ষক-কর্মচারী। দাবি আদায়ে আগামীকাল সোমবার (১৩ অক্টোবর) থেকে দেশের সব এমপিওভুক্ত বেসরকারি স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষকরা।
এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোটের সদস্যসচিব অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন আজিজী বলেন, রাতে শহীদ মিনারে আমাদের অবস্থান কর্মসূচি চলবে। আগামীকাল থেকে কর্মবিরতি চলবে।
তিনি আরো বলেন, আমরা রাতে একটা বৈঠকে বসব। সেখানে নতুন কোনো সিদ্ধান্ত হলে বা সরকারের পক্ষ থেকে দাবি মেনে নেওয়ার সুনির্দিষ্ট ঘোষণা এলে তখন বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।
দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে আটক ৬ শিক্ষককে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। রাত সোয়া ৭টার দিকে তাদের জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোটের আহ্বায়ক ও সদস্যসচিবের তত্ত্বাবধানে ছেড়ে দেওয়া হয়।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া ৫০০ টাকা বাড়িয়েছে সরকার; তবে গত ৫ অক্টোবর এই ঘোষণা প্রকাশ্যে এলে শিক্ষকরা তা প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন।
এরপর গত ৬ অক্টোবর এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া ভাতা অন্তত দুই হাজার বা তিন হাজার টাকা করার প্রস্তাব অর্থ বিভাগে পাঠায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা জাতীয় বেতনস্কেল অনুযায়ী বেতন পান। তারা মূল বেতনের সঙ্গে মাসে ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পান। আর ১ হাজার টাকা বাড়িভাড়া ভাতা পেতেন, যা বাড়িয়ে ৫০০ টাকা করা হয়েছে।
এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা আগে বছরে ২৫ শতাংশ হারে বছরে দুইটি উৎসব ভাতা পেলেও গত মে মাসে বাড়ানোর পর তারা ও এমপিওভুক্ত কর্মচারীরা মূল বেতনের ৫০ শতাংশ হারে উৎসব ভাতা পাচ্ছেন।
জাতীয়
ভোট দিতে ২ লাখ ২৩ হাজারের বেশি প্রবাসীর নিবন্ধন
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটে ভোট দিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপের মাধ্যমে এ পর্যন্ত ২ লাখ ২৩ হাজার ৪৭১ জন প্রবাসী বাংলাদেশি ভোটার নিবন্ধন করেছেন।
রবিবার (৭ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ওয়েবসাইটে প্রকাশিত পোস্টাল ভোটিং আপডেট থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
তথ্যানুযায়ী, ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপে নিবন্ধনকারীদের মধ্যে ২ লাখ ৩ হাজার ৩৬২ জন পুরুষ ভোটার ও ২০ হাজার ১০৯ জন নারী ভোটার রয়েছেন।
দেশভিত্তিক নিবন্ধনের মধ্যে রয়েছে সৌদি আরবে ৫১ হাজার ৫৭২ জন, যুক্তরাষ্ট্রে ১৯ হাজার ৫৭৮ জন, কাতারে ১৩ হাজার ৮৯ জন, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ১২ হাজার ৪৯২ জন, মালয়েশিয়ায় ১২ হাজার ১১৬ জন, সিঙ্গাপুরে ১২ হাজার ১০৬ জন, যুক্তরাজ্যে ১১ হাজার ১৯৬ জন, দক্ষিণ কোরিয়ায় ৯ হাজার ৫১০ জন, কানাডায় ৯ হাজার ২৬৯ জন, ওমানে ৮ হাজার ৭০৭ জন, অস্ট্রেলিয়ায় ৭ হাজার ৯২৩ জন, ইতালিতে ৭ হাজার ৬০৭ জন এবং জাপানে ৬ হাজার ৯৬৯ জন।
এ ছাড়া ইসির এক বার্তায় বলা হয়েছে, ‘ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে নির্বাচনি দায়িত্বে নিয়োজিত ভোটার, নিজ ভোটার এলাকার বাইরে অবস্থানরত সরকারি চাকরিজীবী এবং আইনি হেফাজতে থাকা ভোটারগণ পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপের মাধ্যমে ভোট দিতে নির্বাচনি তফসিল ঘোষণার তারিখ থেকে ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত নিবন্ধন করতে পারবেন। বিস্তারিত জানতে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট (www.ecs.gov.bd) ভিজিট করতে বলা হয়েছে।
আউট অব কান্ট্রি ভোটিং সিস্টেম অ্যান্ড ইমপ্লিমেন্টেশন (ওসিভি-এসডিআই) প্রকল্পের ‘টিম লিডার’ সালীম আহমাদ খান এ তথ্য জানিয়েছেন।
অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধনের সময় সঠিক ঠিকানা দেওয়ার জন্য প্রবাসী বাংলাদেশিদের অনুরোধে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
এ বিষয়ে ইসি এক বার্তায় জানায়, ‘পোস্টাল ব্যালট পেতে হলে অ্যাপে নিবন্ধনের সময় প্রবাসী ভোটারের অবস্থানকালীন দেশের প্রচলিত নিয়মানুযায়ী সঠিক ঠিকানা দিতে হবে। প্রয়োজনে কর্মস্থল বা পরিচিতজনের ঠিকানাও দিতে হবে। সঠিক ও পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা প্রদান করা ছাড়া পোস্টাল ব্যালট পেপার ভোটারগণের কাছে পাঠানো সম্ভব হবেনা।’
আগামী ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপের মাধ্যমে প্রবাসী ভোটারদের নিবন্ধনের সময় বাড়িয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এর আগে ১৮ ডিসেম্বর রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপের মাধ্যমে প্রবাসী ভোটারদের নিবন্ধন প্রক্রিয়া বিশ্বের সব দেশের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়।
এ বিষয়ে ইসি সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানান, ‘আউট অফ কান্ট্রি ভোটিং এর ব্যাপারে নিবন্ধনের সময়সীমা বাড়িয়ে ২৫ ডিসেম্বর মধ্যরাত পর্যন্ত করা হয়েছে। এখন সারা বিশ্বের যেকোন জায়গা থেকেই আমাদের এই অ্যাপ ডাউনলোড করে যে কেউ ভোট দেওয়ার জন্য ভোটার নিবন্ধন রেজিস্ট্রেশন করতে পারেন।’
গত ১৮ নভেম্বর প্রধান নির্বাচন কমিশনার ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপ উদ্বোধন করেন এবং ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য ১৪৮টি নির্দিষ্ট দেশে ভোটার নিবন্ধনের সময়সূচি ঘোষণা করেন।
পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দিতে প্রবাসী ভোটারকে অবশ্যই যে দেশ থেকে ভোট দেবেন সে দেশের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করতে হবে।
নিবন্ধনের জন্য প্রথমে গুগল প্লে স্টোর বা অ্যাপ স্টোর থেকে ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপ ডাউনলোড ও ইনস্টল করতে হবে।
জাতীয়
গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ১১৪ জনের মরদেহ তোলা হচ্ছে আজ
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ১১৪ জনের পরিচয় শনাক্তে মরদেহ তোলা হবে আজ (রোববার)। রাজধানীর রায়েরবাজার কবরস্থান থেকে মরদেহগুলো তোলার পর ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হবে।
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, রোববার সকাল থেকে সেখানে কাজ শুরু করবে সিআইডি। মরদেহগুলো তোলার পর ময়নাতদন্ত ও ডিএনএ নমুনা নিয়ে আবার যথাযথ প্রক্রিয়ায় দাফন করা হবে।
সিআইডি প্রধান মো. ছিবগাত উল্লাহ শহীদদের মরদেহ তোলার আগে রায়েরবাজার স্মৃতিসৌধ সংলগ্ন কবরস্থানে এ নিয়ে ব্রিফিং করবেন। সেখানে উপস্থিত থাকবেন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ লুয়িস ফনডিব্রাইডার, ফরেনসিক অ্যানথ্রোপোলজিস্ট ও ফরেনসিক কনসালট্যান্ট।
জানা গেছে, যে জায়গায় শহীদদের দাফন করা হয়েছে, সেই জায়গা সিটি করপোরেশনের বিশেষ উদ্যোগে মার্বেল পাথর, টাইলস দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। রায়েরবাজার কবরস্থানে জুলাই আন্দোলনে অজ্ঞাতনামা শহীদদের মরদেহ উদ্ধারে কবরস্থান এলাকায় তাঁবু স্থাপন করা হয়েছে।
গত ৪ আগস্ট ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পুলিশি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মরদেহ উত্তোলনের নির্দেশ দেন। পুলিশের পক্ষ থেকে আদালতে আবেদনটি করেন মোহাম্মদপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাহিদুল ইসলাম।
জাতীয়
প্রেস সচিবের ‘রহস্যময়’ ফেসবুক পোস্ট
নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে এক ‘রহস্যময়’ পোস্ট দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। শনিবার (৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা ২৪ মিনিটে তিনি ওই পোস্ট দেন। পোস্টে শফিকুল আলম লিখেছেন, ডরে আমার ভয় কাঁপতেছে!!।
ফেসবুকে তিনি এ কথা কেন লিখেছেন বা এর মর্মার্থ কী সে বিষয়ে কোনো তথ্য না পাওয়া গেলেও পোস্টটি নিয়ে আলোচনায় মেতেছেন নেটিজেনরা। এছাড়া পোস্ট করার পর তিন ঘণ্টার মধ্যে ১৫ হাজারের বেশি রি-অ্যাক্ট জমা পড়েছে।
মন্তব্যের তলায় জমা পড়ছে একের পর এক মন্তব্য। কেউ কেউ এর জন্য প্রেস সচিবের আলোচিত সেই মাফলারের প্রসঙ্গ টেনে আনছেন। কে এম সজীব নামের এক নেটিজেন মন্তব্য করেছেন, ‘মাফলার পেঁচিয়ে নেন, কাঁপাকাঁপি কমবে।’ সুইটি সাজিদা প্রশ্ন ছুড়েছেন, ‘আপনার মাফলারটা কই?’
বেশ কয়েকজন গণঅভ্যুত্থানে দেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে অবস্থান নেওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রসঙ্গ তুলছেন। কেউ কেউ মজার ছলে লিখেছেন, ‘আপা আসার আগে পালিয়ে যান।’
রিক রিদওয়ান নামের এক আইডি থেকে সম্প্রতির আতঙ্ক ভূমিকম্পের প্রসঙ্গ সামনে আনা হয়েছে। তিনি লিখেছেন, ‘ডরে ভাই গোটা দেশই কাঁপছে – দেখেন না সব কেমনে নড়েচড়ে উঠল।’
প্রেস সচিবের ওই পোস্ট নিয়ে রহস্য থেকে গেলেও তার পরবর্তী পোস্ট বেশ গুরুত্বপূর্ণ ও স্পষ্ট। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিষয়ে বার্তা দিয়েছেন তিন।
রাত ৮টা ২১ মিনিটে দেওয়া ওই পোস্টে শফিকুল আলম লিখেছেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিবের কাছে যখন জিজ্ঞেস করা হয়েছিল যে, অন্তর্বর্তী সরকার খালেদা জিয়া উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ পাঠাতে সাহায্য করছে কি না। উত্তরে তখন প্রেস সচিব বলেন, সরকার বেগম জিয়াকে বিদেশে পাঠানোসহ চিকিৎসা সংক্রান্ত তার পরিবারের সকল অনুরোধ সুবিধাজনকভাবে পূরণ করা অব্যাহত রাখছে।’
তিনি আরও লিখেন, ‘সরকার দেশবাসীকে বেগম জিয়ার সুস্থতার জন্য প্রার্থনা অব্যাহত যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেছে।’
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস ও চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন বিএনপি চেয়ারপারসন। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর তিনি মুক্তি পান। চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যান এবং ১১৭ দিন চিকিৎসার পর ৬ মে দেশে ফেরেন। এরপর নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন।
সিসিইউতে গত ১৩ দিন ধরে খালেদা জিয়া চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে দলের শীর্ষ নেতারা জানিয়েছেন। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, বিদেশ যাত্রা তার শারীরিক অবস্থার ওপর নির্ভর করছে।
জাতীয়
নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল নিয়ে ইসির বৈঠক আজ
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল পর্যালোচনায় বৈঠকে বসতে যাচ্ছে এ এম এম নাসির উদ্দিন নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
আজ রবিবার (৭ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় নির্বাচন কমিশনে এ বৈঠক হবে। বৈঠকে চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিব উপস্থিত থাকবেন। ভোটগ্রহণের সময় এক ঘণ্টা বাড়ানোসহ মনোনয়নপত্র জমা, বাছাই, প্রত্যাহারের শেষ সময় ও ভোটের তারিখ নিয়ে পর্যালোচনা হবে। ভোটের কাজের সার্বিক বিষয়ে অগ্রগতির পাশাপাশি পোস্টাল ভোটিংয়ের ব্যালট পেপার আনা-নেওয়ার সময়ও চূড়ান্ত হবে।
ভোট প্রস্তুতির সবকিছু গুছিয়ে এনে তফসিলের আগে আইনশৃঙ্খলা সভা ও আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা করেছে ইসি। প্রথা অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতির কাছে নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতির বিষয়ে অবহিত করতে ১০ ডিসেম্বর বঙ্গভবনে যাবেন নির্বাচন আয়োজনকারী সাংবিধানিক সংস্থাটির সদস্যরা। এরপর কয়েকদিনের মধ্যে তফসিল ঘোষণা করবেন সিইসি।
ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে তফসিল ঘোষণা করার কথা রয়েছে। ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে একই দিনে সংসদ নির্বাচন ও গণভোট অনুষ্ঠিত হবে।
এরই মধ্যে ডিসি, ইউএনওসহ মাঠ প্রশাসন ও এসপি, ওসিসহ পুলিশে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়েছে। তফসিল ঘোষণার পর পরিস্থিতি বিবেচনা করে রদবদলের দরকার হলে তাও করবে ইসি।
আজকের কমিশন সভার সিদ্ধান্ত ও রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে সব ধরনের প্রস্তুতি অবহিত করে দুই ভোটের তফসিল ঘোষণা করা হবে বলে জানায় ইসি।
নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, কমিশন সভায় তফসিলের সময়সূচি নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে। এরপর রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তফসিল চূড়ান্ত করা হবে।
তিনি জানান, তফসিল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে কারা রিটার্নিং অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসার হচ্ছেন তাও প্রজ্ঞাপনে জানিয়ে দেওয়া হবে।
আইন-বিধি-নীতিমালায় নানা ধরনের সংস্কার চাওয়া হয়েছে এবার। আইন-বিধি অনুসরণে ও শতভাগ প্রতিপালনে ইসির শক্ত অবস্থান থাকবে এবং সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে প্রার্থী, দল, ভোটারসহ সব অংশীজনের সহযোগিতা চান তিনি।
সবশেষ ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি ভোট হয় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের। এ বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাষ্ট্র সংস্কারের উদ্যোগ নেয় অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তবর্তী সরকার।
প্রথমবারের মতো প্রবাসী বাংলাদেশি ভোটারের জন্য পোস্টাল ভোটিংয়ের ব্যবস্থা নেওয়া হয়। প্রধান উপদেষ্টা ঘোষিত ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই হতে যাচ্ছে বহুল কাঙ্ক্ষিত ভোট। এরই ধারাবাহিকতায় নির্বাচন আয়োজনকারী সাংবিধানিক সংস্থাটি ভোটের তফসিল ঘোষণা করবে।
আবহাওয়া
শীতে শিশু ও বয়স্কদের জন্য বাড়তি যত্ন নেওয়ার আহ্বান
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তাপমাত্রা কমতে শুরু করায় শিশু ও বয়স্কদের ঠান্ডাজনিত রোগ থেকে সুরক্ষায় অতিরিক্ত সতর্কতা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও সরকারি কর্মকর্তারা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) প্রফেসর ডা. শেখ সাইদুল হক বলেন, ‘শীতকালে নিউমোনিয়া, ইনফ্লুয়েঞ্জা, হাঁপানির আক্রমণ ও সাধারণ সর্দি কাশির মতো শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে। এটি বিশেষ করে, ছোট শিশু ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে গুরুতর হতে পারে।
তিনি চলাফেরা ও খাদ্যাভ্যাসে সতর্কতা বজায় রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেন, শীতজনিত রোগ থেকে সুরক্ষায় এ সব সতর্কতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ডিজিএইচএস কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপ সম্পর্কে তিনি বলেন, শীতকালীন রোগ থেকে বাঁচতে, প্রয়োজনীয় সতর্কতা বিষয়ে জনগণকে সচেতন করতে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু, বয়স্ক নাগরিক এবং ডায়াবেটিস, হৃদরোগ ও সিওপিডি’র মতো দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্তরা শীত মৌসুমে বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ।
শিশু রোগ বিশেষজ্ঞরা জানান, কম প্রতিরোধ ক্ষমতা ও ঠান্ডা বাতাসের সংস্পর্শ শিশুদের জন্য স্বাস্থ্য জটিলতা তৈরি করতে পারে। অন্যদিকে বয়স্কদের ক্ষেত্রে শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জয়েন্টের ব্যথা, শ্বাসকষ্ট ও রক্তচাপের ওঠানামা বেড়ে যেতে পারে।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা পরামর্শ দিয়েছেন, বিশেষ করে ভোরবেলা বা সন্ধ্যায় শিশুদের বাইরে নিয়ে যাওয়ার সময় উষ্ণ পোশাক পরানো এবং নিয়মিত হাত ধোয়ার অভ্যাস বজায় রাখা জরুরি। কারণ এটি মৌসুমি ভাইরাস ছড়ানো কমাতে সহায়তা করে। এ ছাড়া অসুস্থ ব্যক্তিদের কাছ থেকে শিশুদের দূরে রাখতে হবে।
এর পাশাপাশি ফল, শাকসবজি ও উষ্ণ তরলসমৃদ্ধ পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। এই ধরনের পুষ্টিকর খাবার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে বলে জানান তারা।
চিকিৎসকরা নবজাতকদের ঠান্ডা বাতাসে না নেওয়ার এবং ঘরের ভেতর পরিবেশ উষ্ণ রাখার পাশাপাশি ঘরে যথাযথভাবে বায়ু চলাচলের জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখারও সুপারিশ করেছেন।
বয়স্কদের ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের পরামর্শ— উষ্ণ কাপড়, মোজা ও টুপি ব্যবহার করে ঠান্ডাজনিত জটিলতা এড়ানো উচিত।
এ ছাড়াও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা ভোর বেলার কুয়াশায় ঘরের বাইরে যাওয়া থেকে বিরত থাকতে, রাতে কম্বল বা গরম পানির ব্যাগ ব্যবহার করতে, শরীর গরম রাখতে, পর্যাপ্ত পানি পান করতে এবং উষ্ণ তরল, ভেষজ চা ও সুষম খাবার গ্রহণ করতে পরামর্শ দিয়েছেন।
চিকিৎসকরা দীর্ঘমেয়াদি রোগীদের ক্ষেত্রে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ এবং যথাসময়ে ওষুধ গ্রহণের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন।
এ দিকে স্থানীয় ক্লিনিক ও কমিউনিটি হেলথ সেন্টারগুলো বিশেষ করে, গ্রামীণ ও নিম্ন আয়ের এলাকাগুলোতে সচেতনতামূলক কার্যক্রম শুরু করেছে। এসব এলাকায় উষ্ণ পোশাক ও যথাযথ আবাসন সুবিধা সীমিত।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে দীর্ঘস্থায়ী জ্বর, শ্বাসকষ্ট বা পানি শূন্যতার মতো উপসর্গ দেখা দিলে, তাদের দ্রুত চিকিৎসা দেওয়া উচিত।



