রাজনীতি
জাতীয় পার্টির সমাবেশে পুলিশের বাধা, সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ
জাতীয় পার্টির (জাপা) সমাবেশ ঘিরে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশের সঙ্গেও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় দলটির নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করতে বেশ কয়েকটি সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে পুলিশ।
শনিবার (১১ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৩টায় রাজধানীর কাকরাইলে অবস্থিত জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, ককটেল বিস্ফোরণ ছাড়াও পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেছে।
তবে ককটেল বিস্ফোরণের পেছনে কারা জড়িত সে বিষয়ে এবং কোনও হতাহতের তথ্য পাওয়া যায়নি। বর্তমানে সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অবস্থান করছে।
জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের অভিযোগ, বারবার অনুরোধ করার পরও পুলিশ তাদের সমাবেশ করতে দেয়নি। সমাবেশে বক্তব্য চলাকালীন হঠাৎ করে পুলিশ জলকামান থেকে পানি নিক্ষেপ করে। এ সময় কয়েকটি সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয়েছে বলে নেতাকর্মীদের অভিযোগ।
এ বিষয়ে রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম বলেন, ‘আমরা তাদের সমাবেশ করতে নিষেধ করেছিলাম। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে তারা সমাবেশ শুরু করে। সমাবেশ ঘিরে যেন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্য আমরা তাদের ছত্রভঙ্গ করে দিচ্ছি।’
রাজনীতি
ধর্মের নামে বিভাজনের পথ তৈরি করতে চায় একটি গোষ্ঠী: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, একটি গোষ্ঠী ধর্মের নামে বিভাজনের পথ তৈরি করতে চায়, ধর্মকে দিয়ে রাষ্ট্র আর সমাজে বিভাজন আমরা বিশ্বাস করি না।
রবিবার (৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর খামারবাড়িতে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে বিএনপির ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক সাতদিনব্যাপী কর্মসূচির উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য রাখবেন বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সভাপতিত্ব করছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের সবসময় মনে রাখতে হবে, ২৪-এর জুলাই গোটা বাংলাদেশের মানুষের মন-মানসিকতায় এবং তরুণ সমাজের মন-মানসিকতায় অনেক পরিবর্তন এনে দিয়েছে। এখন সবাই পরিবর্তন চায়। পরিবর্তন সর্বক্ষেত্রে চায়। রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে চায়, আমাদের চিন্তাভাবনার মধ্যে চায়। আমরা একটি নতুন বাংলাদেশ দেখতে চাই। এই চিন্তাটি সবার মধ্যে এসেছে এবং এসেছে এই উপলব্ধি থেকেও যে, সেই পুরোনো রাষ্ট্রকাঠামো আর উপযোগী থাকছে না। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা উপযোগী থাকছে না, বিচারব্যবস্থা উপযোগী থাকছে না। রাষ্ট্রের উন্নয়নের যে বিষয়গুলো আমরা এতদিন যেভাবে চিন্তা করেছি, সেগুলো পিছিয়ে পড়েছে। সেগুলো দিয়ে কাজ হচ্ছে না।
তিনি বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার গত ১৫ বছরে তার দুঃশাসনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের সব প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে আবার নতুন করে গড়ে তোলা, দেশকে গড়ে তোলা- এই চিন্তা আমাদের নেতা তারেক রহমানকে আলোড়িত করেছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের ছেলেরা অনুভব করে- পাস করে চাকরি নেই। এই ১৫ বছরে তো চাকরি পাওয়াই যায়নি। সব জায়গায় ভরাট আওয়ামী লীগের দুঃশাসন। কিন্তু নতুন বাংলাদেশে আমরা কীভাবে এই সমস্যার সমাধান করবো?
১৮ মাসে এক কোটি কর্মসংস্থান তৈরি করা হবে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, শুধু চাকরি নয়, ব্যবসা, কৃষিকাজ, শ্রম- সব মিলিয়ে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হবে। কীভাবে করা হবে তা এরইমধ্যে চূড়ান্ত হয়েছে। এই পরিকল্পনা প্রমাণ করে বিএনপি একটি অ্যাডভান্স রাজনৈতিক দল। বাংলাদেশের যা কিছু ভালো অর্জন হয়েছে তা অতীতে বিএনপিই করেছে। আবার নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলার ব্যাপারেও বিএনপি নতুন চিন্তাভাবনা সামনে নিয়ে আসছে। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষক। দুর্ভিক্ষপীড়িত দেশ, একদলীয় শাসন থেকে তিনি বহুদলীয় ব্যবস্থা চালু করেছিলেন। আধুনিক রাজনৈতিক দল গঠনের ভিত্তি তৈরি করেছিলেন। তার বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের দর্শন বাংলাদেশের মূল ভিত্তি রচনা করে।
বিএনপি মহাসচিব মন্তব্য করেন, গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেওয়া, ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়া, মিডিয়ার স্বাধীনতা, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা- সবই জিয়াউর রহমান শুরু করেছিলেন। আজকের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ভিত্তিও তিনি নির্মাণ করেছিলেন। প্রবাসী শ্রমিকের রেমিট্যান্সের পথও তিনিই খুলেছিলেন।
বিএনপির শীর্ষ এই রাজনীতিবিদ বলেন, আমরা কেউই খুব আনন্দিত থাকতে পারছি না। আমরা ভারাক্রান্ত। কারণ আমাদের নেত্রী, বাংলাদেশের অভিভাবক, গার্ডিয়ান অব ডেমোক্রেসি, সেই মহান নেত্রী যিনি কখনো অন্যায়ের কাছে মাথানত করেননি, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব-গণতন্ত্রের প্রশ্নে কোনো আপস করেননি সেই নেত্রী আজ গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার চিকিৎসার জন্য সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নিজে মনিটর করছেন। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা তার চিকিৎসা করছেন। সারাদেশের মানুষ তার জন্য দোয়া করছে। আমরা বিশ্বাস করি আল্লাহ নিশ্চয়ই এত মানুষের দোয়া কবুল করবেন।
রাজনীতি
‘সরকারে গেলে প্রাইভেট সেক্টরেও শুক্র-শনিবার ছুটি ঘোষণা করব’
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেছেন, ‘এনসিপি সরকার গঠন করলে বা সরকারের অংশ হলে প্রাইভেট সেক্টরে শুক্র-শনিবার ছুটি ঘোষণা করব।’
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে জুলাই স্পিরিটে আলোকিত পেশাজীবীদের সংগঠন ‘ন্যাশনাল প্রফেশনাল অ্যালায়েন্সের’ আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘পাবলিক এবং প্রাইভেট উভয় সেক্টরে দলীয় দাস, পরিবারতন্ত্র, তৈলমর্দন—এসব ছিল চাকরি পাওয়ার মূল ক্রাইটেরিয়া।’
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসন ভাগাভাগি নিয়ে পাটওয়ারী বলেন, ‘আমরা কোনো দলের কাছে সিট নেগোসিয়েশনে যাব না।
সিট বণ্টনের পলিটিকস বাংলাদেশে আর চলবে না।’
ছোট দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বড় দলগুলোর কাছে মাথা নত করবেন না। মেরুদণ্ড বিক্রি করবেন না। পরিবারতন্ত্র, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, ধর্মের রাজনীতি এগুলো আর চলবে না।
ভাঙা দিয়ে শুরু করেছি, এখন গড়ার সময়।’
ভারতকে উদ্দেশ করে পাটওয়ারী বলেন, ‘ভারতকে বলতে চাই, নির্বাচনে ডিস্টার্ব করতে আসবেন না। অনেক ব্যবসা আছে এখানে, পরে লেজ গুটিয়ে পালাতে হবে। দক্ষিণ এশিয়ার বিজেপির সন্ত্রাস রুখে দিতে আমরা প্রস্তুত।
রাজনীতি
একদল অপকর্ম করে চলে গেছে, আরেক দল দায়িত্ব নিয়েছে: জামায়াত আমির
গণভোটসহ পাঁচ দফা দাবিতে সিলেটে সমমনা আট দলের বিভাগীয় সমাবেশে বিএনপিকে কৌশলে তুলাধুনা করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, একদল অপকর্ম করে চলে গেছে, আরেক দল বাংলাদেশে অপকর্মের দায়িত্ব নিয়েছে। একদল চাঁদাবাজি করে জনগণের ব্যানার পুড়িয়েছে, আরেকদল আবার তার চাইতে পেশিশক্তিতে চাঁদাবাজিতে নেমে পড়েছে। একদল দখলদার বনতে গিয়ে জনগণ তাদের প্রত্যাখান করেছে, আরেকদল বেপরোয়া দখলদার হয়ে পড়েছে। কেউ বাঁকাপথে ক্ষমতায় যাওয়ার চেষ্টা করলে তাদের বলব- সেই সূর্য আর উঠবে না।
আজ শনিবার বিকেলে সিলেট সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে অনুষ্ঠিত বিভাগীয় সমাবেশে জামায়াত আমির এসব কথা বলেন।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ৫৪ বছরে দেশের মানুষ মাথা উচু করে দাঁড়াতে পারেনি। কারণ, বর্গীরা চলে যাওয়ার পর দেশের ভেতরে যারা ছিলো তারা জনগণের সম্পদ ছু’ মেরে চলে গেছে। দেশে দেশে বেগমপাড়া তৈরি করেছে। এভাবে অপকর্মের দায় নিয়ে ফ্যাসিস্টরা পালিয়েছে। কিন্তু ফ্যাসিজমের কালো ছায়া বাংলাদেশ থেকে যায়নি।
জামায়াত আমির বলেন, দেশবাসী আশা করেছিল, অতীতে অপকর্মের অপরিণতি থেকে শিক্ষা নিয়ে রাজনীতিবিদরা নতুন রাজনীতি শুরু করবেন। কিন্তু তারা পুরোনো ধারায় পড়ে আছে। তারা সংস্কারে রাজি না, তারা সনদ বাস্তবায়নে রাজি না। গণভোটেও রাজি ছিল না। তার পরে ধাক্কাইয়া রাজি হয়।
আগামী নির্বাচন নিয়ে সম্প্রতি বিএনপির এক নেতার বক্তব্য প্রসঙ্গে বলেন, তারা নির্বাচন বলে চিৎকার করে জনগণকে বেহুঁশ করে ফেলেছিল। এখন ভিন্ন সুরে কেউ কেউ বলছেন। এসব ভালো নয়, বাংলাদেশের জনগণ তাদেরকে আগামীতে তাকে লাল র্কাড দেখাবে। এই লাল কার্ড থেকে যদি বাঁচতে গিয়ে নির্বাচনে প্রহসন করে তাদের সব ষড়যন্ত্র ভন্ডুল করে দেবে। কেউ যদি আবার চিন্তা করে বাকাপথে ক্যু করে ক্ষমতায় যাবে; তাদের বলবো- বন্ধু সেই সূয আর উঠবে না। নতুন সূর্য কোরআন হাতে নিয়ে উঠবে। আগামী দেশ হবে দেশপ্রেমিক জনতার।
ইসলামী অন্যদলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আপনাদের ঘর সেখানে নয়। ঘরে ফিরে আসুন। আপনারা আমাদের ভাই। দেশের মুক্তিপাগল মানুষ জানে আগামীতে তারা কোথায় ভোট দেবে। এখন কেউ রক্ত চক্ষুকে ভয় পায় না, অমুক দেশ, তমুক দেশকে ভয় পায় না। আল্লাহর নির্দেশ মোতাবেক এই দেশ জনগণের সম্পত্তি।
খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় আমির মাওলানা আবদুল বাছিত আজাদের সভাপতিত্বে ও মহানগর জামায়াতের নায়বে আমির নুরুল ইসলাম বাবুলের পরিচালনায় বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলনের আমির সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম (চরমোনাই পীর), বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক, নেজামে ইসলাম পার্টির নায়বে আমির আব্দুল মজিত আতহারী, খেলাফত আন্দোলনের নায়বে আমির মুজিবুর রহমান আজাদ, ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা মোসাদ্দেক বিল্লাহ জালানী, খেলাফত মজলিসের রেজাউল করিম জালালী, নেজামে ইসলামের আব্দুল মাজেদ আতহারীসহ বিভিন্ন দলের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয়রা নেতারা।
চরমোনাই পীর তার বক্তব্যে বলেন, যারা ৫৩ বছর আমাদের জিম্মি করে রেখেছিল তারাই আজ নিরাপদ নয়। আজ চাঁদাবাজদের পক্ষে জনগণ নেই। যারা যতই পরিকল্পনা করুক জনগণ থেকে তারা বিচ্ছিন্ন হবেই। আগামীতে ইসলামী শক্তির উত্থান ঘটবে।
মাওলানা মামুনুল হক বলেন, যারা জুলাই যুদ্ধে রক্ত দিয়েছে তাদের রক্ষের উপর নতুন করে ফ্যাসিজম জন্ম দেওয়া যাবে না। জুলাই সনদ ও গণভোটে যাদের আপত্তি তারাই লুটপাটের পথ খোঁজছে। কিন্তু এ দেশে ইসলাম ও দেশপ্রেমিক জনতা তা কখনো হতে দেবে না।
সমাবেশে বিভাগের জেলা ও উপজেলার নেতাকর্মীরা মিছিল সহকারে যোগ দেন।
রাজনীতি
খালেদা জিয়াকে নিয়ে আসিফ মাহমুদের ফেসবুক পোস্ট, যা লিখলেন
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্ব ও প্রজ্ঞাকে মূল্যবান সম্পদ হিসেবে দেখে দেশ- এমন মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
উপদেষ্টার ভেরিফায়েড অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে গতকাল (৫ ডিসেম্বর) দেওয়া এক পোস্টে এ মন্তব্য করেন।
আসিফ মাহমুদ লিখেছেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া দেশের গণতন্ত্র, নাগরিক অধিকার ও রাজনৈতিক স্বাধীনতার প্রশ্নে এক আপসহীন ও সর্বজন শ্রদ্ধেয় নেতৃত্ব। এরশাদবিরোধী আন্দোলন থেকে হাসিনার স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে তার সংগ্রাম, সাহসী ভূমিকা আমাদের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।’
তিনি আরও লেখেন, ‘দেশ তার নেতৃত্ব ও প্রজ্ঞাকে মূল্যবান সম্পদ হিসেবে দেখে। আমরা তাকে হারাতে চাই না। গণতান্ত্রিক ধারার অভিভাবকসুলভ এই নেত্রীর সুস্বাস্থ্য ও দ্রুত আরোগ্যের জন্য দেশবাসীর দোয়া কামনা করছি।’
উল্লেখ্য, প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন খালেদা জিয়া। তার শারীরিক অবস্থা এখনো অপরিবর্তিত বলে চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে জানিয়েছেন বিএনপির নেতারা।
বিএনপির মিডিয়া সেল জানিয়েছে, এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে কারিগরি ত্রুটি দেখা দেওয়ায় শুক্রবার নির্ধারিত সময়ে বিমানটি ঢাকায় পৌঁছাতে পারেনি। কাতারের আমিরের পক্ষ থেকে জার্মাানির তৈরি আরেকটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স আসতে পারে বলে জানা গেছে।
এদিকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান ইতোমধ্যে লন্ডন থেকে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেন। বিমানবন্দর থেকে সরাসরি তিনি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে গিয়ে খালেদা জিয়াকে দেখেছেন।
৮০ বছর বয়সি তিনবারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, লিভার সিরোসিস ও কিডনির জটিলতাসহ নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন। গত ২৩ নভেম্বর রাতে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হলে ফুসফুসে সংক্রমণ ধরা পড়ে। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে করোনারি কেয়ার ইউনিটে স্থানান্তর করা হয়, এবং এরপর থেকে তিনি হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন।
অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১২ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড খালেদা জিয়ার চিকিৎসা তদারক করছে। চীন ও যুক্তরাজ্য থেকেও কয়েকজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দলটির সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন।
রাজনীতি
টাকা নয়, স্বেচ্ছাসেবক দিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা করবেন তাসনিম জারা
মনোনয়ন পেলে আগামী জাতীয় নির্বাচনে প্রচারণা চালানোর ব্যতিক্রমী এক ঘোষণা দিয়েছেন এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা। শনিবার (৬ ডিসেম্বর) নিজের ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি জানিয়েছেন, প্রচলিত নির্বাচনী সংস্কৃতির বিপরীতে দাঁড়িয়ে তিনি অর্থনির্ভর রাজনীতি নয়, বরং স্বেচ্ছাসেবক টিম গড়ে নির্বাচনী প্রচারণা পরিচালনা করবেন।
তাসনিম জারা বলেন, ‘আমাদের দেশে নির্বাচনে একজন প্রার্থী আইনগতভাবে সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকা খরচ করতে পারেন। কিন্তু বাস্তবে আমরা দেখি, প্রায় কেউই এই আইন মানেন না।
শোনা যায়, একজন প্রার্থী ২০, ৫০, এমনকি ১০০ কোটি টাকা পর্যন্ত খরচ করেন। অথচ নির্বাচন কমিশনের কাছে গিয়ে বলেন, মাত্র ২৫ লাখ টাকা ব্যয় করেছেন তিনি। ফলে প্রায় সবারই সংসদে যাওয়ার যাত্রাটা শুরু হয় আইন ভাঙা ও মিথ্যা বলার মাধ্যমে। আমি এই অসততা ও মিথ্যার রাজনীতি করব না।
আমি এনসিপি থেকে ঢাকা-৯ আসনে মনোনয়নের জন্য আবেদন করেছি এবং প্রতিজ্ঞা করছি, আইনে অনুমোদিত টাকার বাইরে আমি ১ টাকাও খরচ করব না।’
অল্প বাজেটে নির্বাচনী প্রচার চালানোর বিষয়ে তাসনিম জারা বলেন, ‘অনেকে বলেছেন, এত অল্প বাজেটে নির্বাচন করা অসম্ভব। আমি তাদের বলেছি, আমরা প্রমাণ করব—এটা সম্ভব। শুধু নির্বাচনের পর নয়, নির্বাচনের আগেই নিয়মিত জানাব, কত টাকা পেয়েছি এবং কত টাকা খরচ করেছি।
সবকিছু করব স্বচ্ছভাবে। আমরা একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করব—সততার সঙ্গে অর্থ আর পেশিশক্তির বৃত্তের বাইরে এসে নির্বাচন করা যায়। তবে এ পথচলায় আপনাদের সাহায্য প্রয়োজন। যে কাজগুলো অন্য প্রার্থীরা টাকা দিয়ে করান, আমাদের সেগুলো করতে হবে আপনাদের সময়, শ্রম এবং অংশগ্রহণ দিয়ে। স্বেচ্ছাসেবক টিম গড়ার মাধ্যমে।’
নির্বাচনে সবার সহযোগিতা চেয়ে তিনি বলেন, ‘আপনি ঢাকা-৯ (খিলগাঁও, সবুজবাগ, মুগদা, মান্ডা), দেশের অন্য যেকোনো জায়গা বা প্রবাসী হোন, আপনি এই ক্যাম্পেইনে সাহায্য করতে পারবেন। সাহায্য করার অসংখ্য উপায় আছে। এ জন্য আমরা একটি ছোট ফরম তৈরি করেছি। সেখানে জানাতে পারবেন আপনি কিভাবে সাহায্য করতে চান। কেউ গ্রাফিক ডিজাইন করতে পারেন, কেউ ভিডিও শুট বা এডিট করতে পারেন, কেউ উঠান বৈঠকের আয়োজন করতে পারেন, কেউ ফান্ড সংগ্রহে সাহায্য করতে পারেন, কেউ আমাদের সঙ্গে বাসায় বাসায় গিয়ে মানুষের কাছে আমাদের মেসেজ পৌঁছে দিতে পারেন—আরো অনেক ভূমিকা আছে। আবার আপনি নিজেও জানাতে পারেন, কিভাবে সাহায্য করতে চান।’



