আন্তর্জাতিক
বাংলাদেশে এলপিজি নিয়ে আসা জাহাজের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা
ইরানের পেট্রোলিয়াম ও তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) রপ্তানিতে সহায়তা করার অভিযোগে ৫০টিরও বেশি প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তি এবং জাহাজের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। নতুন এই নিষেধাজ্ঞার তালিকায় আছে বাংলাদেশে এলপিজি নিয়ে আসা আরব আমিরাতভিত্তিক একটি নেটওয়ার্ক এবং জাহাজও।
মার্কিন কর্তৃপক্ষের দাবি, আন্তর্জাতিক বিধি লঙ্ঘন করে আরব আমিরাতভিত্তিক এই নেটওয়ার্কটি বাংলাদেশের পাশাপাশি শ্রীলঙ্কায়ও জ্বালানি পণ্য সরবরাহ করেছিল।
মার্কিন অর্থ বিভাগীয় সংস্থা অফিস অব ফরেন অ্যাসেটস কন্ট্রোল (ওএফএসি) বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) এই নতুন পদক্ষেপ ঘোষণা করে।
ওএফএসি’র দাবি, ইরানের ‘আর্থিক প্রবাহ কমানো’ এবং যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃক সন্ত্রাসী হিসেবে মনোনীত গোষ্ঠীগুলোর অর্থায়ন বন্ধ করার নীতির অংশ হিসেবে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসা জাহাজ ও প্রতিষ্ঠানগুলো ইরানের এলপিজির দুটি চালান বাংলাদেশে সরবরাহ করেছে। এছাড়া, বর্তমানে চলমান অন্যান্য পরিবহন কার্যক্রমের বিষয়টিও জানানো হয়েছে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, এই চক্রের সহায়তায় বিলিয়ন ডলারের পেট্রোলিয়াম ও পেট্রোলিয়ামজাত পণ্য রপ্তানি করছে ইরান, যা দেশটির সরকারের জন্য একটি বড় রাজস্ব উৎস।
মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট জানান, এই নতুন নিষেধাজ্ঞাগুলো ইরানের ‘জ্বালানি রপ্তানি কার্যক্রমকে দুর্বল করার’ উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়েছে। এটি ওয়াশিংটনের ‘সর্বোচ্চ অর্থনৈতিক চাপ প্রয়োগের নীতির একটি ধারাবাহিক সিদ্ধান্ত।
নতুনভাবে নিষেধাজ্ঞার তালিকায় যুক্ত হয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতভিত্তিক দুটি প্রতিষ্ঠান—স্লোগাল এনার্জি ডিএমসিসি এবং মারকান হোয়াইট ট্রেডিং ক্রুড অয়েল অ্যাবরোড কোম্পানি এলএলসি। এই দুটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ২০২৪ সাল থেকে দক্ষিণ এশিয়ায় ইরানি এলপিজি চালান পাঠানোর অভিযোগ রয়েছে। ওএফএসি জানিয়েছে, এদের মাধ্যমে একাধিক চালান বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কায় পৌঁছেছে।
মার্কিন অর্থ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের প্রথম দিকে পানামার পতাকাবাহী জাহাজ ‘গ্যাস ডিওর’ ১৭ হাজার টনেরও বেশি ইরানি এলপিজি সরবরাহ করেছিল বাংলাদেশে।
এছাড়া, ২০২৪ সালের শেষ দিকে কোমোরোসের পতাকাবাহী জাহাজ ‘আদা’ (আগের নাম ক্যাপ্টেন নিকোলাস) বাংলাদেশের কিছু আমদানিকারকের কাছে ইরানি এলপিজি পৌঁছে দেয়। সংযুক্ত আরব আমিরাতভিত্তিক সি শিপ ম্যানেজমেন্ট এলএলসি-এর মালিকানাধীন এই জাহাজটিকে সর্বশেষ মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
‘বিএলপিজি’ সোফিয়া নামের একটি ছোট জাহাজে এলপিজি খালাসের সময় গত বছরের ১৩ অক্টোবর চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে ‘ক্যাপ্টেন নিকোলাসে’ আগুন লাগে। প্রায় ৩৪ হাজার টন এলপিজি বহনকারী এই জাহাজটি আইনি জটিলতার কারণে কয়েক মাস আটকে থাকার পর চলতি বছরের ৫ সেপ্টেম্বর পুনরায় গ্যাস স্থানান্তরের অনুমতি পায়। ভেসেল-ট্র্যাকিং তথ্য বলছে, জাহাজটি এখনও চট্টগ্রাম বন্দরে নোঙর করা আছে।
যদিও নিষেধাজ্ঞার তালিকায় কোনো বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান বা সরকারি সংস্থার নাম নেই, তবে এই চালানের উল্লেখের কারণে বাংলাদেশকে এখন যুক্তরাষ্ট্রের নজরদারির আওতায় দেখা হচ্ছে। মার্কিন আইন অনুসারে, নিষিদ্ধ লেনদেনে জড়িত বিদেশি কোম্পানিগুলো ‘সেকেন্ডারি স্যাংশন’-এর ঝুঁকিতে থাকে, যার ফলে যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক ব্যবস্থায় প্রবেশাধিকার হারানোর মতো কঠিন পরিণতি হতে পারে।
আন্তর্জাতিক
খাবারের অভাবে মারা গেল ৬০ হাজার পেঙ্গুইন
দক্ষিণ আফ্রিকার উপকূলে খাদ্যের অভাবে ৬০ হাজারের বেশি পেঙ্গুইন মারা গেছে। সম্প্রতি এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। আফ্রিকান পেঙ্গুইনদের অন্যতম প্রধান খাদ্য সার্ডিন মাছ কমে যাওয়ায় এ বিপর্যয় ঘটেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
গবেষণায় বলা হয়েছে, ২০০৪ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে আফ্রিকান পেঙ্গুইনের দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রজননস্থল ডাসেন দ্বীপ ও রবিন আইল্যান্ডে ৯৫ শতাংশেরও বেশি পেঙ্গুইন বিলুপ্ত হয়ে যায়। মোল্টিং বা পালক পরিবর্তনের সময় প্রয়োজনীয় খাদ্যের অভাবে তারা মারা গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। জলবায়ু সংকট ও অতিমাত্রায় মাছ শিকারকে এই হ্রাসের প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
ওস্ট্রিচ: জার্নাল অব আফ্রিকান ওরনিথোলজি-এ প্রকাশিত গবেষণাপত্রে বলা হয়, এ বিপর্যয় বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়। ইউনিভার্সিটি অব এক্সেটারের সেন্টার ফর ইকোলজি অ্যান্ড কনজারভেশনের শিক্ষক ড. রিচার্ড শার্লি জানান, ‘অন্যান্য স্থানেও একইভাবে পেঙ্গুইন কমে যাচ্ছে।’
গত ৩০ বছরে আফ্রিকান পেঙ্গুইন প্রজাতির সংখ্যা প্রায় ৮০ শতাংশ কমে গেছে। আফ্রিকান পেঙ্গুইনরা প্রতিবছর পুরনো পালক ফেলে নতুন পালক গজায়, যাতে তাদের শরীরের তাপরোধ ও জলরোধী ক্ষমতা বজায় থাকে। তবে প্রায় ২১ দিনের এই মোল্টিং পর্বে তাদের স্থলে অবস্থান করতে হয় এবং এ প্রক্রিয়ার জন্য আগে থেকেই শরীরে পর্যাপ্ত চর্বির মজুদ থাকা জরুরি।
ড. শার্লি জানান, ‘মোল্টিংয়ের আগে বা পরে যদি পর্যাপ্ত খাদ্য না পায়, তাহলে তারা উপবাসের সময়টায় টিকতে পারে না। আমরা হয়ত অনেক পেঙ্গুইনের মৃতদেহ ভেসে থাকতে দেখি না, কারণ তারা সমুদ্রেই মারা যায়।’
গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, ২০০৪ সালের পর থেকে দক্ষিণ আফ্রিকার পশ্চিম উপকূলে সার্ডিন মাছের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে কমে যাচ্ছে। এই সার্ডিনই আফ্রিকান পেঙ্গুইনের প্রধান খাদ্য। উপকূলীয় পানির তাপমাত্রা ও লবণাক্ততার পরিবর্তনে মাছের ডিম ছাড়া কমে গেছে, কিন্তু মাছ শিকার বেড়েছে।
২০২৪ সালে আফ্রিকান পেঙ্গুইনকে ‘অতিসংকটাপন্ন’ প্রজাতি হিসেবে ঘোষণা করা হয়, এবং বর্তমানে প্রজননক্ষম জোড়ার সংখ্যা ১০ হাজারেরও কম।
আন্তর্জাতিক
হাসিনা ভারতে থাকবেন কি না, সিদ্ধান্ত একান্তই তাঁর: জয়শঙ্কর
বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থান সম্পূর্ণভাবে তাঁর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তিনি বলেন, ‘একটা বিশেষ পরিস্থিতিতে তিনি এখানে (ভারতে) এসেছিলেন। সেই পরিস্থিতির স্পষ্ট প্রভাব এই ঘটনার (ভারতে আশ্রয় নেওয়া) ওপর ছিল। এ ব্যাপারে শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্তটা তাঁকে নিজেকেই নিতে হবে।’ শনিবার নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত এইচটি লিডারশিপ সামিটে এনডিটিভির সিইও ও এডিটর-ইন-চিফ রাহুল কানওয়ালের সঙ্গে এক আলোচনায় তিনি এমন মন্তব্য করেন।
শেখ হাসিনা যতদিন ইচ্ছা ভারতে থাকতে পারবেন কি? এমন প্রশ্নে জয়শঙ্কর বলেন, ‘দেখুন, এটি একটি ভিন্ন বিষয়, তাই না? তিনি (শেখ হাসিনা) একটা বিশেষ পরিস্থিতিতে এখানে এসেছিলেন। আমি মনে করি, সেই পরিস্থিতির স্পষ্ট প্রভাব এই ঘটনার (ভারতে আশ্রয় নেওয়া) ওপর ছিল। আবার শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্তটা তাঁকে নিজেকেই নিতে হবে।’
এরপর আলোচনায় ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের বর্তমান প্রেক্ষাপট নিয়ে কথা বলেন জয়শঙ্কর। তিনি বাংলাদেশে একটি বিশ্বাসযোগ্য ও গ্রহণযোগ্য গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া নিশ্চিতের প্রতি ভারতের চাওয়ার ওপর জোর দেন।
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি প্রসঙ্গে জয়শঙ্কর বলেন, ‘আমরা শুনেছি, বাংলাদেশের মানুষ বিশেষ করে বর্তমান শাসকগোষ্ঠীর অভিযোগ, আগের নির্বাচনের প্রক্রিয়ায় সমস্যা ছিল। যদি নির্বাচন নিয়েই আপত্তি থাকে, তাহলে প্রথম কাজ হওয়া উচিত একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করা।’
প্রতিবেশীর প্রতি ভারতের গণতান্ত্রিক অগ্রাধিকারের ওপর জোর দিয়ে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের মঙ্গল কামনা করি। ভারত একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে সব সময় চায় প্রতিবেশী দেশেও জনগণের প্রকৃত মতামত গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে প্রতিফলিত হোক।’
বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপাক্ষিক ভবিষ্যৎ সম্পর্ক নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন জয়শঙ্কর। তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের মঙ্গল কামনা করি। আমি নিশ্চিত, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া থেকে যে সরকারই আসুক না কেন, তাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিষয়ে ভারসাম্যপূর্ণ ও পরিপক্ব দৃষ্টিভঙ্গি থাকবে এবং আশা করি পরিস্থিতির উন্নতি হবে।’
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। শত শত মানুষের প্রাণহানি ও হাজার হাজার মানুষ আহত হওয়ার পর তার টানা ১৫ বছরের শাসনের অবসান ঘটে। এরই প্রেক্ষিতে মানবতাবিরোধী অপরাধে গত মাসে ৭৮ বছর বয়সী শেখ হাসিনাকে তার অনুপস্থিতিতে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেন ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
আন্তর্জাতিক
৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে কাঁপলো আলাস্কা ও কানাডা
যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কার ইয়াকুতাতের আশপাশে শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। স্থানীয় সময় শনিবার (৬ ডিসেম্বর) রাতে মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭ দশমিক শূন্য।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, আলাস্কা ও কানাডার ইউকন সীমান্তের একটি প্রত্যন্ত অঞ্চলে ৭ দশমিক শূন্য মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষয়ক্ষতি বা আহত হওয়ার কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
গার্ডিয়ান বলছে, ভূমিকম্পটি ভূপৃষ্ঠ থেকে ৬ মাইল (১০ কিলোমিটার) ভূগর্ভে উৎপত্তি হয়েছে। এর পরে আরও কয়েকটি ছোট ছোট আফটারশক অনুভূত হয়।
ইউএসজিএস জানিয়েছে, ভূমিকম্পটি আলাস্কার জুনো থেকে প্রায় ২৩০ মাইল (৩৭০ কিলোমিটার) উত্তর-পশ্চিমে এবং ইউকনের হোয়াইটহর্স থেকে ১৫৫ মাইল (২৫০) পশ্চিমে আঘাত হেনেছে।
মার্কিন সুনামি সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, ভূমিকম্পের পরে আপাতত কোনো সুনামির আশঙ্কা নেই।
হোয়াইটহর্সের রয়্যাল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশ সার্জেন্ট ক্যালিস্টা ম্যাকলিওড জানান, ভূমিকম্প সম্পর্কে তারা পৃথক দুটি ৯১১ নম্বরে কল পেয়েছেন।
কানাডার ভূকম্পবিদ অ্যালিসন বার্ড বলেন, ইউকনের যে অংশে ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে এটি ছিল পাহাড়ি এলাকা। সেখানে খুব পরিমাণ মানুষ বসবাস করে।
আন্তর্জাতিক
ভারত বাদ, বাংলাদেশ-চীনকে নিয়ে জোট করতে চায় পাকিস্তান
দক্ষিণ এশিয়ার অকার্যকর সার্ক জোটকে পাশ কাটিয়ে বাংলাদেশ–চীন–পাকিস্তানকে নিয়ে নতুন আঞ্চলিক সহযোগিতা গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে পাকিস্তান। দেশটির উপপ্রধানমন্ত্রী ইশহাক দার গত বুধবার (৩ ডিসেম্বর) ইসলামাবাদ কনক্লেভ ফোরামে বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার উন্নয়ন ভারতের অনমনীয় অবস্থানের কারণে আটকে থাকা উচিত নয়। তাই বাংলাদেশ ও চীনের সঙ্গে মিলে নতুন আঞ্চলিক জোট গঠনের সুযোগ রয়েছে।
তিনি জানান, প্রয়োজন হলে এশিয়ার বাইরের দেশগুলোকেও এই সহযোগিতা কাঠামোয় যুক্ত করা যেতে পারে। চলতি বছরের জুনে বাংলাদেশ–চীন–পাকিস্তানের কূটনীতিকদের ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা, অর্থনীতি ও জীবনমান উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা হয়, যা এই উদ্যোগের ভিত্তি তৈরি করেছে।
সার্ক কার্যত অচল হয়ে আছে ২০১৬ সালে ভারত–পাকিস্তান উত্তেজনার পর থেকে। দক্ষিণ এশিয়ার ২০০ কোটির বেশি মানুষের বাজার থাকলেও সদস্য দেশগুলোর পারস্পরিক বাণিজ্য মাত্র ৫ শতাংশে সীমাবদ্ধ। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সার্কের এই স্থবিরতা পাকিস্তানকে বিকল্প জোট ভাবনায় এগিয়ে দিয়েছে।
এদিকে সাম্প্রতিক উত্তেজনা ও যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ভারত–পাকিস্তান সম্পর্ক আরও খারাপ হয়েছে, আর গণআন্দোলনের পর বাংলাদেশ–ভারত সম্পর্কেও অস্বস্তি বেড়েছে। শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ার পর দুই দেশের সম্পর্ক তলানিতে নেমেছে। ফলে ঢাকার সঙ্গে ইসলামাবাদের যোগাযোগ তুলনামূলকভাবে ইতিবাচক অবস্থানে আছে।
বিশ্লেষকদের মতে, নতুন জোটের ধারণা উচ্চাকাঙ্ক্ষী হলেও বাস্তবতা জটিল। দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক বাস্তবতা, ভারতের প্রতিক্রিয়া এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তা-সংকট এ ধরনের জোটকে প্রতিষ্ঠা করতে বড় বাধা সৃষ্টি করবে। তবে বাংলাদেশ–ভারত সম্পর্কের টানাপোড়েন এবং চীন–পাকিস্তান ঘনিষ্ঠতা আঞ্চলিক রাজনীতিতে নতুন ভারসাম্য তৈরি করতে পারে। সার্ক অচল হয়ে পড়ায় পাকিস্তানের এই নতুন উদ্যোগ দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতিতে নতুন সমীকরণ আনতে পারে। যদিও তা সফল হওয়ার সম্ভাবনা এখনও সীমিত। তথ্যসূত্র : আল জাজিরা।
এমকে
আন্তর্জাতিক
ভারতে শেখ হাসিনার অবস্থান তার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত: জয়শঙ্কর
বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থান সম্পূর্ণই তার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তিনি বলেন, তিনি (হাসিনা) যে পরিস্থিতির মুখে দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন, সেটিই এখন তার ভবিষ্যৎ সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করছে।
হিন্দুস্তান টাইমস লিডারশিপ সামিটে এনডিটিভির প্রধান নির্বাহী রাহুল কানওয়ালের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি। রোববার (০৬ ডিসেম্বর) এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
গত বছরের আগস্টে শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নেন। এ সময়ে দেশে বিক্ষোভে শত শত মানুষের মৃত্যু হয় এবং হাজারো মানুষ আহত হন। ৭৮ বছর বয়সী হাসিনাকে গত মাসে ঢাকার একটি বিশেষ ট্রাইব্যুনাল অনুপস্থিত অবস্থায় ‘মানবতাবিরোধী অপরাধের’ অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। এ মামলাটি ছিল তার সরকারের গত বছরের ছাত্র আন্দোলন দমনের সঙ্গে সম্পর্কিত। সামিটে এক প্রশ্নের জবাবে জয়শঙ্কর বলেন, তিনি যে পরিস্থিতিতে এখানে এসেছেন, সেটিই এখন মূল বিষয়। তার সিদ্ধান্ত তাকেই নিতে হবে।
বাংলাদেশের নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতার প্রেক্ষাপটে জয়শঙ্কর জোর দিয়ে বলেন, ভারত তার প্রতিবেশী দেশে একটি ‘বিশ্বাসযোগ্য গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া’ দেখতে চায়। তিনি বলেন, বাংলাদেশে যারা এখন ক্ষমতায় আছেন, তারা অতীতের নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে আপত্তি তুলেছেন। যদি সমস্যা নির্বাচন হয়, তবে প্রথম কাজ হবে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করা।
জয়শঙ্কর আরও বলেন, ভারত বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আশাবাদী এবং দুই দেশের সম্পর্ক গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের ভিত্তিতেই সবচেয়ে ভালো অবস্থায় পৌঁছাতে পারে। তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশের মঙ্গল কামনা করি। গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে আমরা চাই জনগণের ইচ্ছা একটি স্বচ্ছ ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রতিফলিত হোক।
এমকে



