জাতীয়
নির্বাচনে বড় চ্যালেঞ্জ নিরাপত্তা, সমস্যা হলে ভোট বন্ধ: সিইসি
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বড় চ্যালেঞ্জ হবে নিরাপত্তা, তবে সমস্যা হলে ভোট বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ. এম. এম. নাসির উদ্দিন।
শনিবার (১১ অক্টোবর) চট্টগ্রামে ‘নির্বাচন প্রক্রিয়ায় ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তাদের দায়িত্ব পালনে চ্যালেঞ্জ নিরূপণ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
সিইসি নাসির উদ্দিন বলেন, নির্বাচনে নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই হবে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ এবং কোনো কেন্দ্রে সামান্যতম সমস্যা বা অনিয়ম দেখা গেলে সঙ্গে সঙ্গে সেখানকার ভোটগ্রহণ বন্ধ করে দেওয়া হবে। ভোটের দিন মাঠপর্যায়ে আইন ও প্রশাসনিক ক্ষমতার সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা হবে। প্রিজাইডিং কর্মকর্তাদের হাতে দেওয়া হবে পূর্ণ দায়িত্ব ও ক্ষমতা, যাতে তারা তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
তিনি আরও বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে, প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ, বিশেষ করে স্কুলের শিক্ষকরা। সবাই নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তা না হলেও, প্রশিক্ষণ কার্যক্রম এমনভাবে পরিচালনা করতে হবে যেন যারা দায়িত্ব নেবেন, তারা সুপরিকল্পিতভাবে কাজ সম্পন্ন করতে পারেন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে মাঠপর্যায়ে কার্যক্রম নির্বিঘ্ন রাখতে নির্বাচন কমিশন একটি জরুরি সেল (ইমার্জেন্সি সেল) গঠন করবে। এই সেল তাৎক্ষণিকভাবে নির্বাচনসংক্রান্ত যে-কোনো অভিযোগ বা ঘটনার বিষয়ে পদক্ষেপ নেবে।
কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, অতিরিক্ত সচিব (ইসি সচিবালয়) কে এম আলী নেওয়াজ, বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. জিয়াউদ্দিন, ডিআইজি (চট্টগ্রাম রেঞ্জ) মো. আহসান হাবীব পলাশ এবং ইউএনডিপি বাংলাদেশের সহকারী আবাসিক প্রতিনিধি আনোয়ারুল হক। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রামের সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ বসির আহমেদ।
ইসির রোডম্যাপ অনুযায়ী আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমভাগে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। এই লক্ষ্যে চট্টগ্রামে চলছে প্রস্তুতি জোরেশোরে। ইতোমধ্যে ১৬ সংসদীয় আসনের সীমানা চূড়ান্ত করা হয়েছে। প্রকাশিত খসড়া অনুযায়ী এবার চট্টগ্রামে ভোটকেন্দ্র কমেছে ৬৪টি এবং ভোটকক্ষ (বুথ) কমেছে ১ হাজার ৭৬টি। চট্টগ্রামের ১৬ আসনে মোট ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ৯৫৯টি এবং ভোটকক্ষ ১২ হাজার ৬৫৬টি। এর মধ্যে পুরুষ বুথ ৫ হাজার ৭৬৪টি এবং মহিলা বুথ ৬ হাজার ৮৯২টি।
চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ১৬ আসনে ভোটগ্রহণের জন্য ১৪ হাজার ৬১৫টি স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সের প্রয়োজন, অথচ বর্তমানে মজুত রয়েছে ১৫ হাজার ৯৪৪টি ব্যালট বাক্স—অর্থাৎ চাহিদার চেয়েও বেশি।
অন্যদিকে, ভোটগ্রহণের জন্য গঠন করা হচ্ছে প্রায় ৪৪ হাজার কর্মকর্তার একটি প্যানেল। এর মধ্যে থাকবেন ১ হাজার ৯৫৯ জন প্রিজাইডিং অফিসার, ১২ হাজার ৬৫৬ জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার এবং ২৫ হাজার ৩১২ জন পোলিং অফিসার। অতিরিক্ত ১০ শতাংশ কর্মকর্তার নামও সংরক্ষণে রাখা হবে, যাতে প্রয়োজন হলে বিকল্প কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া যায়।
চট্টগ্রাম জেলার সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মো. বশির আহমেদ বলেন, ‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্যানেল তৈরির কাজ আমরা শুরু করেছি। সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে নামের তালিকা ইতোমধ্যে জমা পড়েছে।’
উল্লেখ্য, হালনাগাদ ভোটার তালিকা অনুযায়ী চট্টগ্রামে নতুন ভোটার যুক্ত হয়েছেন ৩ লাখ ৪ হাজার ২৮৩ জন। এর মধ্যে মহানগরে ৫২ হাজার এবং ১৫ উপজেলায় ২ লাখ ৫২ হাজার ২৮৩ জন। খসড়া তালিকায় মোট ভোটার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৬ লাখ ৬৮ হাজার ৫১৮ জন, এর মধ্যে পুরুষ ৩৪ লাখ ৪৮ হাজার ৫৪৮ জন ও মহিলা ৩২ লাখ ১৯ হাজার ৯১৭ জন।
আবহাওয়া
শীতে শিশু ও বয়স্কদের জন্য বাড়তি যত্ন নেওয়ার আহ্বান
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তাপমাত্রা কমতে শুরু করায় শিশু ও বয়স্কদের ঠান্ডাজনিত রোগ থেকে সুরক্ষায় অতিরিক্ত সতর্কতা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও সরকারি কর্মকর্তারা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) প্রফেসর ডা. শেখ সাইদুল হক বলেন, ‘শীতকালে নিউমোনিয়া, ইনফ্লুয়েঞ্জা, হাঁপানির আক্রমণ ও সাধারণ সর্দি কাশির মতো শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে। এটি বিশেষ করে, ছোট শিশু ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে গুরুতর হতে পারে।
তিনি চলাফেরা ও খাদ্যাভ্যাসে সতর্কতা বজায় রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেন, শীতজনিত রোগ থেকে সুরক্ষায় এ সব সতর্কতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ডিজিএইচএস কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপ সম্পর্কে তিনি বলেন, শীতকালীন রোগ থেকে বাঁচতে, প্রয়োজনীয় সতর্কতা বিষয়ে জনগণকে সচেতন করতে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু, বয়স্ক নাগরিক এবং ডায়াবেটিস, হৃদরোগ ও সিওপিডি’র মতো দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্তরা শীত মৌসুমে বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ।
শিশু রোগ বিশেষজ্ঞরা জানান, কম প্রতিরোধ ক্ষমতা ও ঠান্ডা বাতাসের সংস্পর্শ শিশুদের জন্য স্বাস্থ্য জটিলতা তৈরি করতে পারে। অন্যদিকে বয়স্কদের ক্ষেত্রে শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জয়েন্টের ব্যথা, শ্বাসকষ্ট ও রক্তচাপের ওঠানামা বেড়ে যেতে পারে।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা পরামর্শ দিয়েছেন, বিশেষ করে ভোরবেলা বা সন্ধ্যায় শিশুদের বাইরে নিয়ে যাওয়ার সময় উষ্ণ পোশাক পরানো এবং নিয়মিত হাত ধোয়ার অভ্যাস বজায় রাখা জরুরি। কারণ এটি মৌসুমি ভাইরাস ছড়ানো কমাতে সহায়তা করে। এ ছাড়া অসুস্থ ব্যক্তিদের কাছ থেকে শিশুদের দূরে রাখতে হবে।
এর পাশাপাশি ফল, শাকসবজি ও উষ্ণ তরলসমৃদ্ধ পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। এই ধরনের পুষ্টিকর খাবার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে বলে জানান তারা।
চিকিৎসকরা নবজাতকদের ঠান্ডা বাতাসে না নেওয়ার এবং ঘরের ভেতর পরিবেশ উষ্ণ রাখার পাশাপাশি ঘরে যথাযথভাবে বায়ু চলাচলের জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখারও সুপারিশ করেছেন।
বয়স্কদের ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের পরামর্শ— উষ্ণ কাপড়, মোজা ও টুপি ব্যবহার করে ঠান্ডাজনিত জটিলতা এড়ানো উচিত।
এ ছাড়াও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা ভোর বেলার কুয়াশায় ঘরের বাইরে যাওয়া থেকে বিরত থাকতে, রাতে কম্বল বা গরম পানির ব্যাগ ব্যবহার করতে, শরীর গরম রাখতে, পর্যাপ্ত পানি পান করতে এবং উষ্ণ তরল, ভেষজ চা ও সুষম খাবার গ্রহণ করতে পরামর্শ দিয়েছেন।
চিকিৎসকরা দীর্ঘমেয়াদি রোগীদের ক্ষেত্রে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ এবং যথাসময়ে ওষুধ গ্রহণের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন।
এ দিকে স্থানীয় ক্লিনিক ও কমিউনিটি হেলথ সেন্টারগুলো বিশেষ করে, গ্রামীণ ও নিম্ন আয়ের এলাকাগুলোতে সচেতনতামূলক কার্যক্রম শুরু করেছে। এসব এলাকায় উষ্ণ পোশাক ও যথাযথ আবাসন সুবিধা সীমিত।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে দীর্ঘস্থায়ী জ্বর, শ্বাসকষ্ট বা পানি শূন্যতার মতো উপসর্গ দেখা দিলে, তাদের দ্রুত চিকিৎসা দেওয়া উচিত।
আইন-আদালত
সুপ্রিম কোর্ট পূর্ণ প্রশাসনিক ও আর্থিক স্বায়ত্তশাসন লাভ করেছে : প্রধান বিচারপতি
সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় অধ্যাদেশ, ২০২৫ প্রণয়নের মাধ্যমে বহুদিনের দ্বৈত প্রশাসনিক সীমাবদ্ধতা দূর হয়েছে এবং সুপ্রিম কোর্ট প্রথমবারের মতো পূর্ণ প্রশাসনিক ও আর্থিক স্বায়ত্তশাসন অর্জন করেছে।
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) সকালে রেডিসন ব্লু চট্টগ্রাম বে হোটেলের কনফারেন্স কক্ষে বাণিজ্যিক আদালত নিয়ে এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ এ কথা বলেন।
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট এবং ইউএনডিপির যৌথ উদ্যোগে ‘অপারেশনালাইজিং কমার্শিয়াল কোর্ট’ শীর্ষক এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান বিচারপতি বলেন, গত দেড় বছরে সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও সাংবিধানিক স্বচ্ছতার ভিত্তিতে বিচার ব্যবস্থায় যে মৌলিক রূপান্তর সাধিত হয়েছে, তা দেশের বিচারিক ইতিহাসে এক মাইলফলক।
এর মাধ্যমে বাংলাদেশের বিচার বিভাগ এক নতুন প্রাতিষ্ঠানিক যুগে প্রবেশ করেছে।
তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় অধ্যাদেশ, ২০২৫ প্রণয়নের মাধ্যমে বহুদিনের দ্বৈত প্রশাসনিক সীমাবদ্ধতা দূর হয়েছে এবং সুপ্রিম কোর্ট প্রথমবারের মতো পূর্ণ প্রশাসনিক ও আর্থিক স্বায়ত্তশাসন লাভ করেছে। এর ফলে বিচার বিভাগ এখন নিজস্বভাবে পদসৃজন, বাজেট বরাদ্দ, প্রশিক্ষণ উন্নয়ন, নীতিমালা প্রণয়নসহ বিচার সংস্কারকে দীর্ঘমেয়াদি ও টেকসই ধারা হিসেবে এগিয়ে নেওয়ার সক্ষমতা অর্জন করেছে।
প্রধান বিচারপতি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রশংসা করে বলেন, সুপ্রিম কোর্টের প্রস্তাবসমূহ সরকার দ্রুততার সঙ্গে অনুমোদন করেছে, যা শক্তিশালী ও স্বাধীন বিচারব্যবস্থা নির্মাণে জাতীয় ঐকমত্যকে প্রতিফলিত করে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ইউএনডিপির আবাসিক প্রধান. স্টেফান লিলার। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইইউর রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার, সুইডেনের রাষ্ট্রদূত নিকোলাস উইকস, কানাডার রাষ্ট্রদূত অজিত সিং, অস্ট্রেলিয়ান দূতাবাসের ডেপুটি হাইকমিশনার ক্লিন্টন পুকি এবং সুইডেন দূতাবাসের কর্মকর্তা অলি লুন্ডিন।
জাতীয়
সামনের নির্বাচন আমাদের জন্য বড় পরীক্ষা: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
সামনের নির্বাচন আমাদের জন্য বড় পরীক্ষা বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেন, সব কিছুর ভিত্তি হলো আইনশৃঙ্খলা। এটি ভালো না থাকলে কোন কিছুই অর্জন করা যাবে না। আমরা জানি, এ নিয়ে খুব খারাপ সময় আমাদের গেছে। আশার কথা হলো, পুলিশ শেষ পর্যন্ত তাদের অবস্থানটা সংহত করতে পেরেছে।
শনিবার রংপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় সভা শেষে তিনি সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন। বক্তব্যে নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সতর্ক করে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, যে প্রার্থীর হারার সম্ভাবনা আছে তারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারে। ফলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
যথেষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, গণ্ডগোলের চেষ্টা হতে পারে। সেটা মাথায় রেখেই আমি মনে করি যথেষ্ট ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার মিটিং করেছেন। এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও যথেষ্ট সজাগ।
উপদেষ্টা বলেন, আমরা আশা করি, একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে একটা সরকার গঠন হবে এবং আমরা আমাদের দায়িত্ব তাদের বুঝিয়ে দিয়ে চলে যেতে পারবো।
এসময় উত্তরবঙ্গ থেকে বৈদেশিক কর্মসংস্থানের নিম্নমুখী হার প্রসঙ্গেও কথা বলেন তিনি। উপদেষ্টা বলেন, কোনো বিদেশি নিয়োগদাতা যদি কর্মীদের দক্ষতা উন্নয়নের জন্য প্রশিক্ষণ দিতে চায়, তাহলে বাংলাদেশের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র তাদের জন্য ছেড়ে দেয়া হবে।
এসময় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল আহসান, মহানগর উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) তোফায়েল আহমেদ, পুলিশ সুপার মারুফাত হোসাইনসহ জেলার বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এমকে
জাতীয়
জুলাই আন্দোলনের শহীদ স্কাউটরা নতুন দেশ গড়ার প্রেরণা: শিক্ষা উপদেষ্টা
দেশের সংকট ও রূপান্তরের প্রতিটি মুহূর্তে স্কাউটদের মানবিক মূল্যবোধ, দায়িত্ববোধ ও সাহসিকতা আমাদের সামনে নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। জুলাই আন্দোলনে শহীদ হওয়া ১১ স্কাউটের আত্মত্যাগ জাতিকে নতুন বাংলাদেশ নির্মাণের অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে বল মন্তব্য করেছেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সি. আর. আবরার।
তাদের ত্যাগ স্মরণ করে তিনি বলেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সততা, নৈতিকতা ও দেশগড়ার চেতনায় এগিয়ে আসতে হবে।
শনিবার রাজধানীতে বাংলাদেশ স্কাউটসের জাতীয় পর্যায়ের বিভিন্ন অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. আবরার বলেন, স্কাউটিং শুধু ব্যাজ অর্জনের বিষয় নয়। এটি চরিত্র গঠন, মানবিক মূল্যবোধ, দলগত নেতৃত্ব, দায়িত্ববোধ ও সমাজসেবায় দক্ষতা অর্জনের অনন্য প্রশিক্ষণ। দুর্যোগ মোকাবিলায় স্কাউটদের ভূমিকা অনন্য। ঘূর্ণিঝড়, বন্যা বা অগ্নিকাণ্ডসহ যেকোনো দুর্যোগ মুহূর্তে দেশের সর্বত্র মানুষের পাশে দাঁড়ায় স্কাউট সদস্যরা। আত্মনির্ভরশীল ও সেবামুখী নাগরিক তৈরিতে স্কাউটিংয়ের বিস্তার আরও বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর তিনি জোর দেন।
জুলাই আন্দোলনে ১১ স্কাউট সদস্যের আত্মত্যাগ স্মরণ করে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, জুলাই আন্দোলনে শহীদ ১১ জন স্কাউট ও আহতদের আত্মত্যাগ আমাদের নতুন বাংলাদেশ নির্মাণের প্রেরণা হয়ে আছে। তাদের ত্যাগ ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সাহস ও অনুপ্রেরণা জোগায়। বিশ্বের ১৭৬টি স্কাউট দেশের মধ্যে বাংলাদেশ বর্তমানে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে। এটি গৌরবের। এশিয়া–প্যাসিফিক অঞ্চলের বিভিন্ন কমিটি ও সাবকমিটিতে বাংলাদেশি স্কাউটদের নেতৃত্বও দেশের সক্ষমতার স্বীকৃতি।
বাংলাদেশ স্কাউটসে নারীদের অংশগ্রহণে সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, তোমরাই জাতির আগামী নেতৃত্ব। সততা, সাহস, দৃঢ়তা ও মানবিকতার মাধ্যমে নিজেদের শ্রেষ্ঠ নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলাই দেশের প্রত্যাশা।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ স্কাউটসে অন্তর্বর্তীকালীন জাতীয় নির্বাহী কমিটির উপদেষ্টা ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. এহছানুল হক। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ স্কাউটসের সভাপতি ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি।
এসময় দেশের বিভিন্ন জেলার স্কাউট সদস্যদের হাতে শাপলা কাব অ্যাওয়ার্ড, প্রেসিডেন্ট স্কাউট অ্যাওয়ার্ড এবং প্রেসিডেন্টস রোভার স্কাউট অ্যাওয়ার্ড তুলে দেওয়া হয়।
এমকে
জাতীয়
আইজিপি বাহারুলের বরখাস্ত চেয়ে প্রধান উপদেষ্টার কাছে আবেদন
২০০৯ সালের বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গঠিত জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে নাম আসায় পুলিশের মহাপরিদর্শকের পদ থেকে মো. বাহারুল আলমের বরখাস্ত চেয়ে প্রধান উপদেষ্টার কাছে আবেদন করা হয়েছে।
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) ন্যাশনাল লইয়ার্স কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এসএম জুলফিকার আলী জুনু ডাকযোগে চিঠি পাঠিয়েছেন।
আবেদনে বলা হয়, জাতীয় জীবনের এক করুণতম অধ্যায় ২০০৯ সালের বিডিআর হত্যাকাণ্ড, যেখানে দেশের ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ অসংখ্য সদস্য নির্মমভাবে শহীদ হন, এখনও জাতীয় বেদনা ও বিচার প্রত্যাশার এক অমলিন স্মৃতি হয়ে আছে। সম্প্রতি জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের দাখিলকৃত রিপোর্টে বর্তমান বাংলাদেশ পুলিশ মহাপরিদর্শক মো. বাহারুল আলমের নাম উত্থাপিত হওয়ায় দেশের ন্যায়বিচার, জনআস্থা এবং বিচার প্রতিষ্ঠার প্রশ্ন নতুন করে আলোচনায় উঠে এসেছে।
রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সর্বোচ্চ পদে দায়িত্ব পালনরত একজন কর্মকর্তার নাম এমন একটি রাষ্ট্রদ্রোহী ও ব্যাপক হত্যাকাণ্ডের তদন্তে উল্লেখ হওয়া, ঘটনাটিকে অত্যন্ত সংবেদনশীল ও গুরুতর করে তুলেছে। জাতির রক্তাক্ত স্মৃতি-বহনকারী এই ঘটনায় যেকোনো অভিযোগ, সংশ্লিষ্টতা, গাফিলতি বা দায়িত্বে ব্যর্থতা বিষয়ে পদে বহাল অবস্থায় থাকা ব্যক্তি অপরাধ বিচারের স্বচ্ছতা, নিরপেক্ষতা ও জনবিশ্বাসের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে।
আপনার নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, ন্যায়বিচার নিশ্চিতকরণ, দুর্নীতি-দমন এবং রাষ্ট্রের আস্থা পুনঃনির্মাণ। সেই পরিপ্রেক্ষিতে একজন উচ্চপদস্থ পুলিশ প্রধানের বিরুদ্ধে তদন্ত রিপোর্টে নাম আসা সত্ত্বেও তার দায়িত্বে বহাল থাকা, রাষ্ট্রব্যবস্থা ও বিচার ব্যবস্থার ওপর জনমনে সন্দেহ তৈরি করছে।
ন্যায়বিচারের স্বীকৃতি শুধু আদালতের রায়ে নয় বরং সরকারের যথাযথ পদক্ষেপে প্রতিফলিত হওয়াও জরুরি, আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
এসএম জুলফিকার আলী বলেন, ২০০৯ সালের বিডিআর হত্যাকাণ্ড তদন্ত রিপোর্টে নাম আসায় বর্তমান আইজিপি বাহারুল আলমকে অবিলম্বে আইজিপি পদ থেকে অব্যাহতি বা বরখাস্ত করা করা হোক। মামলার পূর্ণাঙ্গ ন্যায়বিচার ও তদন্তের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সব কর্মকর্তার ভূমিকা ও দায় নির্ণয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
এছাড়া, স্বাধীন তদন্ত কমিশনের সুপারিশসমূহ বাস্তবায়নে সরকারের তাৎক্ষণিক হস্তক্ষেপ কামনা করছি, যাতে রাষ্ট্র ও জনগণ উভয়ে ন্যায়বিচারের বাস্তব প্রতিফলন অনুভব করতে পারে।
এমকে



