রাজনীতি
জুলাই সনদের ভিত্তিতেই ফেব্রুয়ারিতে হবে জাতীয় নির্বাচন: ড. হেলাল উদ্দিন
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর, ঢাকা-৮ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন বলেছেন, জুলাই সনদের ভিত্তিতেই ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করতে হবে।
মঙ্গলবার (০৭ অক্টোবর) বিকেলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী পল্টন থানার উদ্যোগে ঢাকা-৮ নির্বাচনী এলাকায় দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের পক্ষে গণসংযোগ অভিযান পূর্বক বক্স কালভার্ট রোডে অনুষ্ঠিত পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই জুলাই সনদ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গণভোটের আয়োজনের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, জনগণ জুলাই সনদের পক্ষে ভোট দিলে সনদ বাস্তবায়ন হবে, বিপক্ষে ভোট দিলে জামায়াতে ইসলামীর কোনো আপত্তি থাকবে না। কারণ জামায়াতে ইসলামীর সকল আন্দোলন সংগ্রাম জনগণের জন্য, জনগণের যেকোনো মতামত জামায়াতে ইসলামী মেনে নেয় এবং নিবে।
এসময় তিনি আরো বলেন, ‘জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি’, ‘পিআর পদ্ধতিতে সংসদের উভয় কক্ষের নির্বাচন’, ‘অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহনযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সকলের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চতকরণ’, ‘ফ্যাসিস্ট সরকারের জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা’, এবং ‘স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ’ করার ৫ দফা দাবি জামায়াতে ইসলামীর একক দাবি নয়, পুরো জাতি ৫ দফা দাবি বাস্তবায়ন চায়। ৫ দফা দাবি বাস্তবায়নের মাধ্যমে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহন মূলক নির্বাচন জাতিকে উপহার দেওয়া সম্ভব। জাতি এমন একটি নির্বাচনের জন্য উম্মুখ হয়ে আছে। নতুন বাংলাদেশ গড়তে ইনসাফ ও ন্যায়ের প্রতীক দাঁড়িপাল্লায় সমর্থন দিতে তিনি ঢাকা-৮ সংসদীয় এলাকার জনসাধারণের প্রতি আহ্বান জানান।
পল্টন থানা আমীর শাহীন আহমেদ খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পথসভায় ঢাকা-৮ সংসদীয় এলাকায় জামায়াতে ইসলামীর দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ ও কয়েকশ জনশক্তি উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষে নেতৃবৃন্দ ঢাকা-৮ সংসদীয় এলাকার বিভিন্ন মার্কেট ও দোকান মালিক-কর্মচারী এবং পথচারীদের মাঝে জামায়াতে ইসলামীর লিফলেট বিতরণ করেন।
এর আগে শহীদ আবরার ফাহাদ হত্যা দিবস উপলক্ষে আধিপত্য প্রতিরোধ আন্দোলনের উদ্যোগে “ভারতীয় আধিপত্যবাদ মুক্ত বাংলাদেশ চাই, পানির আগ্রাসন ও সীমান্তে হত্যা বন্ধের দাবিতে” – জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, আবরার ফাহাদের হত্যাকারীরা চতুষ্পদ প্রাণীর চেয়েও নিকৃষ্ট।
হত্যাকারীরা যখন আবরার ফাহাদের পুরো শরীর পিটিয়ে পিটিয়ে থেঁতলে দেয় তখন পিপাসায় কাতর আবরার ফাহাদ মৃত্যুর আগে একটু পানি খেতে চাইলে মানুষরূপী ঐ চতুষ্পদ প্রাণীরা তাকে পানির পরিবর্তে প্রস্রাব খেতে দিয়েছিল! আবরার ফাহাদের অপরাধ কী ছিল প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, শেখ হাসিনা লালিত নিষিদ্ধ ঘোষিত সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগের দৃষ্টিতে আবরার ফাহাদের অপরাধ ছিল সে ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদেরকে নামাজের দিকে আহ্বান করতো।
একারণে হত্যাকারী ছাত্রলীগের নেতারা আবরার ফাহাদকে শিবির উপাধি দিয়ে হত্যা করে। শুধু আবরার ফাহাদকেই নয় বিগত ১৫ বছরে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা সারাদেশে অসংখ্যা মায়ের বুক খালি করেছে। অসংখ্যা বোনকে বিধবা বানিয়েছে। যারাই তাদের মতের বিরুদ্ধে কথা বলেছে তাদেরকেই খুন, গুমের শিকার হতে হয়েছে। পুরো বাংলাদেশকে আওয়ামী লীগ জাহান্নামে পরিণত করেছে। আওয়ামী লীগের সকল অপকর্মের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মতদ ছিল আধিপত্যবাদী গোষ্ঠী।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের পতন হলে আওয়ামী লীগের চেয়েও বেশি হতাশ হয়েছে আধিপত্যবাদী গোষ্ঠী। খুনি হাসিনাকে আশ্রয় দিয়ে তারা আন্তর্জাতিক আইন লংঘন করেছে। খুনি হাসিনা সেখানে বসে ভারতীয় সরকারের সহযোগিতায় বাংলাদেশে আওয়ামী দোসরদের মাধ্যমে সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে। তিনি দেশবাসীকে আধিপত্যবাদের সকল চক্রান্ত-ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সজাগ থাকার জানান।
আধিপত্য প্রতিরোধ আন্দোলনের চেয়ারম্যান মো. মাসুদ হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মো. এরশাদুর রহমানের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় ঐক্য জোটের প্রধান সমন্বয়কারী আলহাজ্ব মাওলানা আলতাফ হুসাইন মোল্লা এবং বীরমুক্তিযোদ্ধা মাওলানা শওকত আমীন।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) প্রেসিডিয়াম সদস্য আসাদুর রহমান খান, মুভমেন্ট ফর প্যালস্টাইন বাংলাদেশ’র চিফ কো-অর্ডিনেটর হারুনুর রশিদ খান, বাংলাদেশ নেজামে পার্টির সভাপতি মাওলানা ওবায়দুল হক, জুলাই যোদ্ধা নজরুল ইসলাম মজুমদার ও আল আমিন রাসেল। এছাড়াও মানববন্ধনে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
কাফি
রাজনীতি
খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স আসছে মঙ্গলবার সকালে
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নিতে আগামী মঙ্গলবার সকালে ঢাকা পৌঁছাতে পারে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স। রোববার রাতে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন।
তারা বলছেন, বিএনপি চেয়ারপাসনের জন্য যে এয়ার অ্যাম্বুলেসের ব্যবস্থা করা হয়েছে, সেটি মঙ্গলবার সকাল ৮টায় ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি ইতোমধ্যে ওই সময়ে ঢাকায় অবতরণের অনুমতি পেয়েছে বলে জানিয়েছে বেবিচক সূত্র। এক কর্মকর্তা বলেন, খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্তের পর তাকে বিদেশে নেওয়া হবে।
প্রাথমিকভাবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে কাতারের আমিরের বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে নেওয়ার কথা থাকলেও ‘কারিগরি ত্রুটি’ দেখা দেওয়ায় কাতার বিকল্প এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করেছে।
কাতার সরকার যে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করেছে সেটি হলো বোম্বার্ডিয়ার চ্যালেঞ্জার ৬০৪ (সিএল৬০)। জার্মানির শীর্ষস্থানীয় এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ও মিশন-ক্রিটিক্যাল এভিয়েশন সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান এফএআই এভিয়েশন গ্রুপ এটি পরিচালনা করে।
প্রতিষ্ঠানটি বোম্বার্ডিয়ার বিজনেস জেটের বহর পরিচালনা করে, যা রোগীদের জন্য চিকিৎসা পরিবহন ও ভিআইপি পরিবহন উভয় ক্ষেত্রেই ব্যবসা পরিচালনা করে।
চ্যালেঞ্জার ৬০৪ দীর্ঘপাল্লার আন্তঃমহাদেশীয় সক্ষমতার জন্য পরিচিত। এটি আন্তর্জাতিক চিকিৎসা ফ্লাইটের জন্য উপযোগী। বিএনপি চেয়ারপারসন গত ২৩ ডিসেম্বর থেকে এভার কেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
গত শুক্রবার বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, কারিগরি সমস্যার কারণে কাতারের মূল উড়োজাহাজটি ঢাকায় পৌঁছাতে না পারায় খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য পূর্বপরিকল্পিত স্থানান্তর বিলম্বিত হচ্ছে। সমস্যার সমাধান হলে শনিবার উড়োজাহাজটি পৌঁছাতে পারে।
রাজনীতি
ফেব্রুয়ারিতেই জাতীয় নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে: নূরুল ইসলাম বুলবুল
ফেব্রুয়ারিতেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে, জাতি কোনো তামাশা মেনে নেবে না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল।
রোববার (৭ ডিসেম্বর) বিকেলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মহানগরী দক্ষিণ কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে ঢাকা-৮ আসনের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির এক জরুরী সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারী (ঢাকা-৮ আসন কমিটির পরিচালক) মুহাম্মদ শামছুর রহমানের সভাপতিত্বে মহানগরীর কর্মপরিষদ সদস্য ও আসন কমিটির সদস্য সচিব শাহীন আহমেদ খানের পরিচালনায় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর আব্দুস সবুর ফকির, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর (ঢাকা-৮ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী) এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, মহানগরীর কর্মপরিষদ সদস্য যথাক্রমে অধ্যাপক মোকাররম হোসাইন খান, মুহাম্মদ শরিফুল ইসলামসহ ঢাকা-৮ সংসদীয় এলাকার সাংগঠনিক সকল থানা আমীর, নায়েবে আমীর, সেক্রেটারী ও সহকারী সেক্রেটারিবৃন্দ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন সম্পন্ন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সেই অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। কমিশন যথা সময়ে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। ডিসেম্বরের ১০ বা ১১ তারিখ কমিশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু একটি দল সংঘবদ্ধভাবে নির্বাচন ভণ্ডলের চক্রান্ত আর ষড়যন্ত্র করছে। কোনো চক্রান্ত বা ষড়যন্ত্রে নির্বাচনের রোডম্যাপ পরিবর্তন করা যাবে না। ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে জনগণ সজাগ ও সতর্ক রয়েছে। প্রশাসনে দলীয়করণ বন্ধ এবং লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিতকরণ সহ গণমানুষের ৫ দফা দাবি মেনে নিয়ে ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ঘোষিত রোডম্যাপে জাতীয় নির্বাচন সম্পন্ন করতে তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
এসময় তিনি উপস্থিত দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দের উদ্দেশ্যে বলেন, নির্বাচন বানচাল করার ষড়যন্ত্রকারীরা নানারকম অপপ্রচার চালাচ্ছে। সকল অপপ্রচার জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রুঁখে দিতে তিনি সর্বস্তরের জনশক্তির প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, দুর্নীতিমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত, চাঁদাবাজমুক্ত নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। জামায়াতে ইসলামীর প্রতি যেভাবে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে এই দ্বারা বজায় রাখতে দাঁড়িপাল্লার বিজয় নিশ্চিত করতে আমাদের ত্যাগ, আমাদের কুরবানি অব্যাহত থাকবে এবং রাখতে হবে। ইসলামি সমাজ বিনির্মাণের মাধ্যমে একটি সুখি-সমৃদ্ধ বৈষম্যহীন কল্যাণ ও মানবিক বাংলাদেশ গঠনে তিনি দলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীকে নিঃস্বার্থ ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।
সভাপতির বক্তব্যে মুহাম্মদ শামছুর রহমান ঢাকা-৮ আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রতি জনগণের সমর্থনের সার্বিক দিক তুলে ধরে বলেন, দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের প্রতি মানুষের সমর্থন ও ভালোবাসা দেখে একটি কুচক্রী মহল নানান রকম অপপ্রচার চালানোর চেষ্টা করছে। কোনো অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হয়ে জনগণের ভালোবাসা ও সমর্থন অর্জনের লক্ষ্যে দায়িত্বশীল ভূমিকা অব্যাহত রাখতে তিনি ঢাকা-৮ আসনের সর্বস্তরের জনশক্তির প্রতি আহ্বান জানান।
এমকে
রাজনীতি
যেকোনো মূল্যে দুর্নীতির লাগাম টানতে হবে: তারেক রহমান
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, যেকোনো মূল্যে আইনশৃঙ্খলা পরস্থিতি ভালো করতে হবে। না হলে দেশের ক্ষতি হয়ে যাবে। যদি সরকার গঠন করতে পারি, তবে শুরুতেই দুর্নীতি ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির লাগাম টেনে ধরতে হবে।
রোববার বিএনপির ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক কর্মসূচির আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, দেশে দুর্নীতির লাগাম টানতে পারে শুধু বিএনপি। অতীতে বিএনপি দুর্নীতির লাগাম টেনেছে, ভবিষ্যতেও পারবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
তারেক রহমান বলেন, বিভিন্ন সময়ে দেশ যখন সংকটের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে, তখন বিএনপি ধীরে ধীরে অবস্থার উন্নতি করেছে। দেশকে স্বাধীন করার জন্য লাখ লাখ মানুষ প্রাণ দিয়েছেন। সেই দেশকে গড়তেও কাঁধে কাঁধ রেখে কাজ করতে হবে।
স্বৈরাচার যেভাবে বিএনপির বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়েছে, একটি দল এখন একইভাবে অপপ্রচার চালাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেই দলের দুইজন বিএনপির আমলে মন্ত্রী ছিলেন। তারা সিনিয়র মানুষ, তারা গত হয়েছেন। তারা বেগম খালেদা জিয়ার ওপর শেষ দিন পর্যন্ত আস্থা রেখেছিলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থানের কারণে।
এ সময় দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, প্রতিটি ক্ষেত্রে এখন অরাজকতা বিরাজ করছে।
তিনি সতর্ক করে বলেন, সামনে অনেক কঠিন সময় আসছে। প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে অরাজকতা বিরাজ করছে। দেশ ও জাতিকে নেতৃত্ব দিতে হলে পরিকল্পনা থাকতে হবে।
তারেক রহমান আরও বলেন, যারা বলে অন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে দেখেছেন, এবার আমাদের দেখুন, মানুষ তাদের ১৯৭১ সালে দেখেছে—কীভাবে তারা লক্ষ লক্ষ মানুষ হত্যা করেছে, মা-বোনের ইজ্জত লুণ্ঠন করেছে।
রাজনীতির ময়দানে বেহেশতের টিকিট দেওয়ার আশ্বাস প্রসঙ্গে তারেক রহমান বলেন, বেহেশত বা দোজখ দেওয়ার মালিক একমাত্র আল্লাহ, এগুলো যারা বলে তারা শিরক করছে। পরকালে কে কোথায় যাবে, তার সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার একমাত্র সৃষ্টিকর্তার।
এমকে
রাজনীতি
এনসিপিসহ ৩ দলের নতুন নির্বাচনী জোট ঘোষণা
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি) ও বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন—এই তিন দল মিলে জুলাই অভ্যুত্থানের অঙ্গীকার রক্ষা এবং নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত বিনির্মাণে আগ্রহীদের নিয়ে নতুন একটি রাজনৈতিক ও নির্বাচনী জোট ঘোষণা করেছে। এর নাম দেওয়া হয়েছে গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট।
রোববার (৭ ডিসেম্বর) বিকেল চারটায় রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ জোটের ঘোষণা দেওয়া হয়।
গণ-অধিকার পরিষদের নাম আলোচনায় থাকলেও শেষ পর্যন্ত এই জোটে তাদের কোনো প্রতিনিধি দেখা যায়নি। তবে আয়োজকরা জানান, আরও কিছু রাজনৈতিক দল শিগগিরই এই জোটে যুক্ত হতে পারে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন—জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও সদস্য সচিব আখতার হোসেন, আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম। সংবাদ সম্মেলনে তিন দলের নেতাকর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন।
এমকে
রাজনীতি
ধর্মের নামে বিভাজনের পথ তৈরি করতে চায় একটি গোষ্ঠী: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, একটি গোষ্ঠী ধর্মের নামে বিভাজনের পথ তৈরি করতে চায়, ধর্মকে দিয়ে রাষ্ট্র আর সমাজে বিভাজন আমরা বিশ্বাস করি না।
রবিবার (৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর খামারবাড়িতে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে বিএনপির ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক সাতদিনব্যাপী কর্মসূচির উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য রাখবেন বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সভাপতিত্ব করছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের সবসময় মনে রাখতে হবে, ২৪-এর জুলাই গোটা বাংলাদেশের মানুষের মন-মানসিকতায় এবং তরুণ সমাজের মন-মানসিকতায় অনেক পরিবর্তন এনে দিয়েছে। এখন সবাই পরিবর্তন চায়। পরিবর্তন সর্বক্ষেত্রে চায়। রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে চায়, আমাদের চিন্তাভাবনার মধ্যে চায়। আমরা একটি নতুন বাংলাদেশ দেখতে চাই। এই চিন্তাটি সবার মধ্যে এসেছে এবং এসেছে এই উপলব্ধি থেকেও যে, সেই পুরোনো রাষ্ট্রকাঠামো আর উপযোগী থাকছে না। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা উপযোগী থাকছে না, বিচারব্যবস্থা উপযোগী থাকছে না। রাষ্ট্রের উন্নয়নের যে বিষয়গুলো আমরা এতদিন যেভাবে চিন্তা করেছি, সেগুলো পিছিয়ে পড়েছে। সেগুলো দিয়ে কাজ হচ্ছে না।
তিনি বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার গত ১৫ বছরে তার দুঃশাসনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের সব প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে আবার নতুন করে গড়ে তোলা, দেশকে গড়ে তোলা- এই চিন্তা আমাদের নেতা তারেক রহমানকে আলোড়িত করেছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের ছেলেরা অনুভব করে- পাস করে চাকরি নেই। এই ১৫ বছরে তো চাকরি পাওয়াই যায়নি। সব জায়গায় ভরাট আওয়ামী লীগের দুঃশাসন। কিন্তু নতুন বাংলাদেশে আমরা কীভাবে এই সমস্যার সমাধান করবো?
১৮ মাসে এক কোটি কর্মসংস্থান তৈরি করা হবে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, শুধু চাকরি নয়, ব্যবসা, কৃষিকাজ, শ্রম- সব মিলিয়ে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হবে। কীভাবে করা হবে তা এরইমধ্যে চূড়ান্ত হয়েছে। এই পরিকল্পনা প্রমাণ করে বিএনপি একটি অ্যাডভান্স রাজনৈতিক দল। বাংলাদেশের যা কিছু ভালো অর্জন হয়েছে তা অতীতে বিএনপিই করেছে। আবার নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলার ব্যাপারেও বিএনপি নতুন চিন্তাভাবনা সামনে নিয়ে আসছে। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষক। দুর্ভিক্ষপীড়িত দেশ, একদলীয় শাসন থেকে তিনি বহুদলীয় ব্যবস্থা চালু করেছিলেন। আধুনিক রাজনৈতিক দল গঠনের ভিত্তি তৈরি করেছিলেন। তার বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের দর্শন বাংলাদেশের মূল ভিত্তি রচনা করে।
বিএনপি মহাসচিব মন্তব্য করেন, গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেওয়া, ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়া, মিডিয়ার স্বাধীনতা, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা- সবই জিয়াউর রহমান শুরু করেছিলেন। আজকের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ভিত্তিও তিনি নির্মাণ করেছিলেন। প্রবাসী শ্রমিকের রেমিট্যান্সের পথও তিনিই খুলেছিলেন।
বিএনপির শীর্ষ এই রাজনীতিবিদ বলেন, আমরা কেউই খুব আনন্দিত থাকতে পারছি না। আমরা ভারাক্রান্ত। কারণ আমাদের নেত্রী, বাংলাদেশের অভিভাবক, গার্ডিয়ান অব ডেমোক্রেসি, সেই মহান নেত্রী যিনি কখনো অন্যায়ের কাছে মাথানত করেননি, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব-গণতন্ত্রের প্রশ্নে কোনো আপস করেননি সেই নেত্রী আজ গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার চিকিৎসার জন্য সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নিজে মনিটর করছেন। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা তার চিকিৎসা করছেন। সারাদেশের মানুষ তার জন্য দোয়া করছে। আমরা বিশ্বাস করি আল্লাহ নিশ্চয়ই এত মানুষের দোয়া কবুল করবেন।



