জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে গণভোট আয়োজনের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ।
রোববার (৫ অক্টোবর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের চতুর্থ দিনের আলোচনা শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
এসময় তিনি বলেন, জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের জন্য জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা জরুরি। তাদের সম্মতির জন্য একটি গণভোট অনুষ্ঠানের ব্যাপারে সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে। আমরা একে বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার প্রথম বড় পদক্ষেপ হিসেবে দেখছি।
কমিশনের সহ-সভাপতি জানান, এর আগে ১১, ১৪ ও ১৭ সেপ্টেম্বর তিনটি বৈঠকের পর দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক আলাপ-আলোচনার জন্য কিছু সময় দেওয়া হয়েছিল। সে সময় শেষে চতুর্থ বৈঠকে এসে গণভোট ও সাংবিধানিক সংস্কার নিয়ে দলগুলোর মধ্যে একটি অভিন্ন অবস্থান তৈরি হয়েছে।
সংসদ নির্বাচনের পর গঠিত নতুন আইনসভার কাঠামো সম্পর্কেও কমিশনের পক্ষ থেকে প্রস্তাব এসেছে। এ প্রসঙ্গে আলী রীয়াজ বলেন, ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের মাধ্যমে যে আইনসভা গঠিত হবে, সেটিকে এমন বৈশিষ্ট্য দিতে হবে যাতে জুলাই সনদের ভিত্তিতে প্রস্তাবিত সাংবিধানিক সংশোধনগুলো সহজে সম্পন্ন করা যায়। এ বিষয়েও কার্যত রাজনৈতিক দলগুলো একমত। আগে দলগুলোর একাংশ সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদের মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের মতামত নেওয়ার কথা বললেও বর্তমানে অধিকাংশই মনে করছে, এর আর প্রয়োজন নাও হতে পারে।
রাজনৈতিক দলগুলোর সহনশীলতা ও অবস্থান পরিবর্তনের সাহসিকতাকে কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করে আলী রীয়াজ বলেন, তারা দলীয় অবস্থান থেকে সরে এসে জাতীয় ঐক্য তৈরিতে ভূমিকা রেখেছে। জুলাই সনদ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে এটা বড় ধরনের অগ্রগতি।
কমিশনের সহ-সভাপতি জানান, অগ্রগতির বিষয়টি এরই মধ্যে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে অবহিত করা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা দ্রুততার সঙ্গে এ ব্যাপারে সুপারিশ চূড়ান্ত করার তাগিদ দিয়েছেন। ১৫ অক্টোবরের মধ্যেই সুপারিশ চূড়ান্ত করে সরকারের কাছে দিতে কমিশন আশাবাদী। এরই মধ্যে আলোচনায় যুক্ত ৩০টি দলের তিন-চতুর্থাংশের পক্ষ থেকে সনদে স্বাক্ষরের জন্য প্রতিনিধিদের নামও কমিশনের হাতে পৌঁছেছে।
আলী রীয়াজ বলেন, আগামী ৮ অক্টোবর বিকেলে আবারও রাজনৈতিক দল ও জোটগুলোকে নিয়ে বৈঠক হবে। পাশাপাশি আইনি ও সাংবিধানিক কাঠামো স্পষ্ট করার জন্য কমিশনের বিশেষজ্ঞ প্যানেলের সঙ্গেও পৃথকভাবে বৈঠক করার পরিকল্পনা রয়েছে।