Connect with us
৬৫২৬৫২৬৫২

মত দ্বিমত

বিশ্ব শিক্ষক দিবসে এক ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণ ও দর্শন

Published

on

বিআইসিএম

বিশ্ব শিক্ষক দিবসে সকল শিক্ষকের প্রতি সম্মান জানাতে গিয়ে আমার মন স্বভাবতই ছুটে যায় বাবা-মার কাছে। কারণ পৃথিবীর কোনো শ্রেণিকক্ষ, বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা পাঠশালার আগে আমার শিক্ষা শুরু হয়েছিল ঘরেই—মায়ের আঁচল আর বাবার শাসনের ভেতর দিয়ে।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

আমরা প্রায়শই ভুলে যাই, শিক্ষার সূচনা বই কিংবা বোর্ডে নয়—বরং ঘরের ভেতরেই। ‘প্রথম শিক্ষা মায়ের কোলেই শুরু হয়’—এই সত্য ইতিহাসের প্রতিটি সভ্যতাই স্বীকার করেছে। প্রাচীন ভারতীয় গুরুকুলে যেমন সন্তানকে প্রথম পাঠ শেখাতেন মা, তেমনি গ্রিক দার্শনিক সক্রেটিসও বলেছিলেন—“কোনো রাষ্ট্রের ভিত্তি জানতে চাইলে দেখো, সেই রাষ্ট্রের শিশুরা কেমন শিক্ষা পাচ্ছে।” আর সেই প্রথম শিক্ষালয় হলো পরিবার।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

আজ ভোরে সংবাদমাধ্যমে দেখলাম, পাঁচ অক্টোবর বিশ্ব শিক্ষক দিবস আসছে। ভাবতে লাগলাম—প্রতিবছর আমরা কত শিক্ষাবিদকে স্মরণ করি, অথচ যাঁদের হাত ধরে আমাদের চরিত্র, নীতি আর মানবিকতার ভিত গড়ে ওঠে, সেই বাবা-মা সম্পর্কে কত সামান্যই বলা হয়!

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

আমার শৈশবের শিক্ষা ছিল ভিন্নধর্মী। মা ছিলেন স্নেহময়ী ছাত্রীসুলভ শিক্ষক। লেখাপড়ায় সাহায্য করতেন, কিন্তু খাওয়ার সময় অঙ্কে গড়মিল করতেন। আমি এক চামচ ঝোল চাইলে, তিনি ঝোলের সঙ্গে মাছের টুকরো ঢুকিয়ে দিতেন। বাবার কাছে চাইলে তিনি উল্টো বলতেন—“যতটুকু পেয়েছো, সেটা আগে শেষ করো, পরে দেখা যাবে।” মাকে রাগ করে ইংরেজিতে কিছু বললে তিনি হেসে দিতেন—মনে হতো কিছুই বোঝেননি। কিন্তু বাবা ঠিকই বুঝতেন; ভুল ইংরেজি বললে কান ধরে শাসন করতেন। মা ছিলেন বেশ মিথ্যেবাদী—না খেয়ে বলতেন খেয়েছি, খিদে নেই, তোরা খেয়ে নে। পরে বুঝেছি, খাবার কম হলে উনি আমাদের আগে খাওয়াতেন। বাবা ছিলেন কিছুটা সত্যবাদী—নিজের ক্ষুধা গোপন করে বলতেন, “তোমরা খাও, আমি পরে খাবো।” মা ছিলেন বোকা, কলুর বলদের মতো রান্নাঘরে ঢুকে আর বেরোতে পারেননি। জীবন কাটিয়েছেন কঠিন সংগ্রামের ভেতর দিয়ে। বাবা ছিলেন কঠিন, ঝড়-বৃষ্টি-রোদে সংসারের ভার কাঁধে নিয়েছেন।

বাবা-মা দুজনেই ছিলেন পাহারাদার। সন্ধ্যা হলে বাড়িতে না ফিরলে খবর ছিলো। সংসার চালিয়েছেন নীরবে, আমাদের কষ্ট বুঝতে দেননি। কখনো নির্লজ্জ, কখনো বেহায়া হয়ে আমাদের ঘরের বিছানা পর্যন্ত গুছিয়ে দিয়েছেন, খোঁজ নিয়েছেন কেমন চলছে জীবন।

মায়ের কমনসেন্স ছিল কিছুটা কম, বাবার একটু বেশি। মা প্লেট ফাঁকা দেখলেই খাবার ভরতেন, বাবা বলতেন— ‘অতিরিক্ত খেয়ো না।’ মা ছিলেন কেয়ারলেস—নিজের যন্ত্রণা ভুলে যেতেন। বাবা ছিলেন কেয়ারফুল—সংসারের ভার টেনে নিতেন চুপচাপ। মনে হতো দুজনেই ছিলেন আনস্মার্ট। মা দামী শাড়ি-গয়না পরতেন না, বাবা গাড়ি-বাড়ি-আড্ডা নিয়ে মাথা ঘামাতেন না। তবুও তাঁরা আমাদের স্বপ্ন বড় করতে শতভাগ সাহায্য করেছেন।

দুজনেই ছিলেন স্বার্থপর—নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন, নিজেদের ঘাম ঝরিয়ে পরিবারের স্বপ্ন গড়তে। তাঁরা জীবনভর আমাদের দিয়েছেন শুধু ভালোবাসা। আর আমরা সন্তানরা? কষ্ট দিয়েছি, অবহেলা করেছি, অথচ তাঁরা বদলাননি। প্রতিদিন আমাদের জন্য একই দোয়া, একই মায়া। বড় হয়েও আমরা তাঁদের উপেক্ষার বোঝা চাপিয়েছি। তবুও বাবা-মা প্রার্থনায় বসে আমাদের জন্য হাত তুলেছেন। সারা জীবন তাঁরা শুধু একটাই প্রতিদান চেয়েছেন—দিনে একবার হলেও সন্তানের মুখে শুনতে চান, ‘মা’ বা ‘বাবা।’

আমরা কতটা নির্বোধ! মা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ডাক, বাবা তাঁর সবচেয়ে বড় ছায়া। আসলে মা-বাবা কী জিনিস, সেটা সেই বোঝে যার কাছে তাঁরা নেই। বাবা-মার শাসনের ভিন্নতা আমি বড় হয়ে বুঝেছি। মানুষ হতে হলে কী শিক্ষা, কেন শিক্ষা, শিক্ষার ধরন কেমন হবে—এই প্রতিটি প্রশ্নের সঠিক উত্তর তাঁরা তাঁদের জীবন দিয়ে আমাদের শিখিয়েছেন। হয়তো সেই ভিন্নতার কারণেই আমি বাংলাদেশের পাড়াগাঁয়ের সীমা পেরিয়ে বিশ্ব নাগরিক হওয়ার পথে হাঁটতে পেরেছি।

আমার বাবা বাংলাদেশ পুলিশের একজন কর্মকর্তা ছিলেন। চাকরি শুরু করেছিলেন ব্রিটিশ আমলে, শেষ করেছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা হাতে নিয়ে। তাঁর জীবন ছিল শৃঙ্খলা, ত্যাগ আর সংগ্রামের প্রতীক। মা সামলেছেন পুরো পরিবার, পাশাপাশি সমাজকল্যাণেও যুক্ত থেকেছেন নিঃস্বার্থভাবে।

গতকাল সহধর্মিণীর সঙ্গে বাবা-মাকে নিয়ে কথা হচ্ছিল। আলোচনার শেষে আমি বলি— ‘আমার বাবা-মা অতি সাধারণ পরিবেশে থেকেও আমাদের এতগুলো ভাই-বোনকে সৃজনশীল শিক্ষায় শিক্ষিত করতে পেরেছেন, যেন পুরো পৃথিবীর অভিজ্ঞতা ও শিক্ষা আমাদের জন্য সংগ্রহ করেছেন। তাঁরা জীবনের প্রায় শেষ বিশ বছর বাংলাদেশ এবং ইউরোপ—দুই নাগরিকত্বেই কাটিয়েছেন, যা একটি গরীব পরিবারের জন্য সত্যিই বিরল।’

আমার সহধর্মিণী মারিয়া সরাসরি উত্তর দিলেন— ‘তাঁরা ডিজার্ভ করেন। তাঁদের ত্যাগ, কঠোর পরিশ্রম এবং সংগ্রামের মধ্য দিয়ে তোমাদের বিশ্বনাগরিক বানিয়েছেন। তাঁদের জীবন ব্যতিক্রম হবে, এটাই স্বাভাবিক।’ কথাটা শোনার পরই আমার মধ্যে অজানা দায়বদ্ধতা আরও গভীর হলো। আসলে বাবা-মা শুধু অভিভাবক নন, তাঁরা জীবন্ত পাঠ্যপুস্তক। প্রতিটি ছোট কাজে লুকিয়ে থাকে বড় শিক্ষা। মায়ের নিঃশব্দ ত্যাগ আমাকে শিখিয়েছে নিঃস্বার্থ ভালোবাসা। বাবার কঠোর শাসন আমাকে শিখিয়েছে নীতি, শৃঙ্খলা ও দায়িত্ববোধ। দুজনের মিলিত শিক্ষা আমাকে শিখিয়েছে মানুষ হওয়া—শুধু ডিগ্রি পাওয়া নয়।

আজকের দিনে সন্তানরা বাবা-মাকে বোঝা ভাবে, প্রযুক্তির ভিড়ে তাঁদের শিক্ষা ভুলে যায়। কিন্তু মনে রাখতে হবে—স্কুল-কলেজের জ্ঞান হয়তো চাকরি এনে দেবে, কিন্তু বাবা-মার শিক্ষা চরিত্র গড়বে। আর চরিত্র ছাড়া জ্ঞান অন্ধ। তাই যতদিন বাবা-মা জীবিত, তাঁদের শিক্ষাকে সম্মান করতে হবে। কারণ তাঁরা আমাদের প্রথম শিক্ষক, এবং মৃত্যুর পরও তাঁদের শিক্ষা আমাদের জীবনে পথপ্রদর্শক হয়ে থাকবে।

আমি এই লেখাটি আমার বাবা-মার জন্য লিখেছি। তবে এটিকে উৎসর্গ করছি বিশ্বজুড়ে সকল বাবা-মাকে—যাঁরা আমাদের হৃদয় দিয়ে শিখিয়েছেন দৈনন্দিন শিক্ষা, মানবিক শিক্ষা, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক শিক্ষা, যোগাযোগের শিক্ষা এবং সর্বোপরি নীতি ও নৈতিকতার শিক্ষা। বাবা-মা আমাদের জন্য শুধু শিক্ষক নন; তাঁরা আমাদের জীবনের প্রথম ও চিরন্তন পথপ্রদর্শক। তাঁদের ভালোবাসা, ত্যাগ এবং শিক্ষা আমাদের প্রতিটি পদক্ষেপে ছায়ার মতো থাকে—যা আমরা হয়তো বুঝি না, কিন্তু যা আমাদের জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে গভীরভাবে প্রভাবিত করে। আজ যাঁদের বাবা-মা নেই, তাঁদের জন্য এই স্মৃতি হোক সান্ত্বনার আলো—কারণ তাঁদের রেখে যাওয়া শিক্ষা ও দোয়া অদৃশ্য আশ্রয়ের মতো আজও আমাদের পথ দেখায়।

আর যাঁদের বাবা-মা বেঁচে আছেন, তাঁদের জন্য এই লেখা হোক এক মৃদু স্মরণ—একবার হলেও মায়ের হাত ধরে বলুন, “তুমি আমার শ্রেষ্ঠ শিক্ষক”, বাবার চোখে চোখ রেখে বলুন, “তুমি আমার জীবনের প্রথম দিশারি।” কারণ শেষ পর্যন্ত, আমরা সবাই একই সত্যে এসে দাঁড়াই— বাবা-মা চলে যান, কিন্তু তাঁদের শিক্ষা থেকে যায়; ভালোবাসা ম্লান হয় না, বরং সময়ের সাথে আরও উজ্জ্বল হয়ে ওঠে।

বিশ্ব শিক্ষক দিবসে তাই আমার শ্রদ্ধা প্রথমেই বাবা-মার প্রতি, যাঁরা আমাদের শিখিয়েছেন কিভাবে গুরুজনদের সম্মান করতে হয়। এই মুহূর্তে মনে পড়ে গেল কাজী কাদের নেওয়াজের কবিতা “শিক্ষাগুরুর মর্যাদা”-এর শেষ দুটি লাইন: আজ হতে চির-উন্নত হলো শিক্ষাগুরুর শির, সত্যই তুমি মহান উদার বাদশাহ আলমগীর।

এই কবিতায় শিক্ষকের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রকাশিত হয়েছে। বাবা-মা এবং শিক্ষক —উভয়ই আমাদের জীবনের প্রথম ও চিরন্তন পথপ্রদর্শক। তাঁদের শিক্ষা ও ভালোবাসা আমাদের সঙ্গে চলমান থাকুক আজীবন।

রহমান মৃধা, সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন। Rahman.Mridha@gmail.com

শেয়ার করুন:-

মত দ্বিমত

শেখ হাসিনা বা খালেদা জিয়া তৈরি হয়নি আমরা তৈরি করেছি

Published

on

বিআইসিএম

ইতিহাসের সবচেয়ে বড় শিক্ষাগুলোর একটি হলো রাষ্ট্র এবং নেতৃত্ব কখনো শূন্যস্থান সহ্য করে না। যে সমাজ যোগ্য নেতৃত্ব তৈরি করতে ব্যর্থ হয় সেই সমাজকে একসময় পরিবারতন্ত্র, কৃত্রিম জনপ্রিয়তা এবং প্রতিহিংসার রাজনীতি গ্রাস করে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক যাত্রাও তার ব্যতিক্রম নয়। স্বাধীনতার পর যে রাজনৈতিক আদর্শ, ত্যাগ এবং নৈতিকতার ভিত্তিতে দেশটি দাঁড়িয়েছিল তা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ক্ষমতার লোভ, দলীয় স্বার্থ এবং দুর্নীতিগ্রস্ত নেতৃত্বের কারণে ক্রমশ ক্ষয় হতে থাকে। ফলে নেতৃত্বের অভাব পূরণ করতে গিয়েই আমরা এমন দুই নারীর ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ি যারা জন্মসূত্রে নেতৃত্বের ঐতিহ্যের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও রাজনৈতিকভাবে প্রস্তুত ছিলেন না। আর এখান থেকেই শুরু হয় বাংলাদেশের রাজনীতিতে পরিবারতন্ত্র, প্রতিহিংসা এবং দলীয় কাঠামোর ভাঙনের দীর্ঘ পর্ব যা আজ পুরো জাতিকে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

বাংলাদেশের ভূখণ্ডে দুই মহীয়সী নারী নেত্রী রাজনীতিতে এসেছিলেন। একজন ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা আর অন্যজন ছিলেন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্ত্রী। তারা জন্মসূত্রে রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে যুক্ত হলেও নিজেরা ছিলেন মূলত রাজনৈতিক বা সামরিক ব্যক্তিত্বের পরিবারের প্রতিনিধি এবং তাদের দুজনকেই দলীয় স্বার্থে সামনে ঠেলে এনে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠাকে ধরে রেখেছিল। একই উপমহাদেশে ইন্দিরা গান্ধি বা বেনজির ভুট্টো বাবার হাত ধরে রাজনীতিতে এসেছিলেন ঠিকই কিন্তু তারা রাজনীতির বাস্তবতায় সক্রিয়ভাবে শামিল হয়েই নেতৃত্বে উঠে এসেছিলেন। পার্থক্য ছিল এখানেই। শেখ হাসিনা বা খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে সেই সরাসরি রাজনৈতিক প্রস্তুতি ছিল না কারণ তৎকালীন দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীরা নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য বঙ্গবন্ধু এবং জিয়ার জনপ্রিয়তার উত্তরাধিকার ধরে রাখতে পরিবারতন্ত্রকে আঁকড়ে ধরেছিলেন। আর সেই লালসাই বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রতিহিংসা পরায়ণতার বীজ বপন করে এবং পরবর্তী সময়ে পুরো দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসকে ভিন্ন দিকে ঘুরিয়ে দেয়।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

ইতিহাস আমাদের শিখিয়েছে নেতৃত্বের ধারাবাহিকতার জন্য যোগ্য উত্তরসূরি তৈরি করা অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু সত্য হলো শেখ মুজিব এবং জিয়ার রাজনৈতিক জীবনে দীর্ঘ সময় ছিল না। হয়তো যুদ্ধোত্তর সংকট বা সামরিক বাস্তবতা তাদেরকে সঠিক নেতৃত্ব গড়ে তোলার সুযোগ দেয়নি অথবা এক নায়কতন্ত্র তাদেরকে গ্রাস করেছিল যেখানে তাদের চারপাশে এমন পরিবেশ তৈরি করা হয়েছিল যে তারা আজীবন ক্ষমতায় থাকবেন এবং নেতৃত্বের বিকেন্দ্রীকরণ নিতান্তই অপ্রয়োজনীয়। অথচ তখনই দেশে শত শত যোগ্য আইনজীবী রাজনৈতিক বিজ্ঞানী অর্থনীতিবিদ এবং তরুণ নেতৃত্ব ছিল। তবুও দলীয় সংগঠন যে ভুল রাজনীতির চর্চা বেছে নিয়েছিল তা ছিল বাংলাদেশের রাজনীতির জন্য এক ভয়াবহ বিপর্যয় এবং সেই আগুনে দগ্ধ হয়েছে পুরো জাতি এবং দগ্ধ হয়েছেন এই দুই নেত্রীও।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

তবু শেখ হাসিনা এবং খালেদা জিয়ার মধ্যে যেমন মিল রয়েছে তেমনি রয়েছে বিস্তর অমিল। যদি তখন দলীয় নেতারা বাবার বা স্বামীর প্রভাবকে ব্যবহার করে শুধু ক্ষমতা দখলের পরিবর্তে রাজনীতির ধারাকে জনগণের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নিতেন তাহলে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি পরিবারতন্ত্রের আবরণে আবদ্ধ হতে পারত না। যদি দলীয় নেতৃত্ব সাহস করে একজন দক্ষ সৎ এবং শিক্ষিত নেতৃত্বকে সামনে আনত তাহলে তাদের দল আরও শক্তিশালী হত সংগঠিত হত এবং ভবিষ্যতের জন্য টেকসই ভিত্তি পেত। নেতৃত্ব ঘর থেকে নয় বরং জনগণের ভিতর থেকে উঠে আসা উচিত ছিল এবং নির্বাসন বা দূরত্ব থেকে নয় সরাসরি রাজনৈতিক মাঠ থেকে উঠে আসাই হতো শেখ মুজিব এবং জিয়াউর রহমানের রাজনৈতিক স্পিরিট এবং ডিসকোর্সের প্রকৃত ধারাবাহিকতা। কিন্তু সেই ভুলের মাশুল আমরা আজও দিচ্ছি।

আজ আমরা অনেকেই শেখ হাসিনাকে স্বৈরাচার বলছি। কিন্তু প্রশ্ন হলো তাকে স্বৈরাচার বানিয়েছে কে? একইভাবে যদি হাওয়া ভবন আরও কয়েক বছর রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেত তবে কি খালেদা জিয়া স্বৈরাচারী হতেন না? ইতিহাস বলে ক্ষমতার কাঠামো ব্যক্তিকে পাল্টে দেয়। তাই দুই দলই দায়ী দুই দলই এই অনুশোচনার বোঝা বহন করে।

তবু এখনও দেরি হয়নি। প্রয়োজন আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির আলাদা করে অনুশোচনা করা জনগণের কাছে আন্তরিকভাবে ক্ষমা চাওয়া এবং ভুলের প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকারোক্তি করা। আজও এই দুই দল নতুন করে দাঁড়াতে পারে যদি তারা আত্মসমালোচনার পথ বেছে নেয় যোগ্য নেতৃত্ব তৈরি করে জনগণের সঙ্গে নতুন আস্থার বন্ধন গড়ে তোলে এবং নেতৃত্ব নির্বাচনের ভিত্তি হিসেবে সাহস যোগ্যতা নৈতিকতা এবং সততাকে সামনে আনে। তাহলেই শেখ হাসিনা স্বৈরাচারের খেতাব থেকে একদিন মুক্তি পেতে পারেন। তাহলেই বেগম জিয়ার ত্যাগের মর্যাদা রক্ষা পাবে এবং জিয়াউর রহমানের আদর্শের একজন প্রকৃত ধারক বাহক তৈরি হবে।

আমি মনে করি তাদের ব্যক্তিগত দুঃখ কেবল তাদের একার নয়। এটা রাষ্ট্রীয় নির্যাতন এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের বিরুদ্ধে সমগ্র জাতির দীর্ঘ সংগ্রামের প্রতিচ্ছবি। যদি এই ইতিহাস নতুন নেতৃত্বকে অনুপ্রাণিত করে তাহলে তাদের জীবনসংগ্রামই ভবিষ্যতের নতুন আলোর পথ তৈরি করবে বিশেষ করে বেগম খালেদা জিয়া। কারণ তিনি এখনও আমাদের মাঝে আছেন এবং তাঁর উপস্থিতি স্বয়ং এক দৃঢ়তার উৎস। আজকের তরুণেরা দেখছে এই দেশে একজন নারী আছেন যিনি প্রতিহিংসাপূর্ণ রাজনীতিকে নীরব শক্তি দিয়ে পরাজিত করে দাঁড়িয়ে আছেন। তাঁর জীবন নক্ষত্রের মতো দীপ্ত এবং যতদিন তিনি থাকবেন ততদিন সেই দীপ্তি প্রজন্মকে পথ দেখাবে। একদিন তাঁর প্রস্থান আসবে সেটি হবে একটি যুগের অবসান কিন্তু আজ তিনি জীবনের সঙ্গে লড়াই করা এক অদম্য শক্তির প্রতীক।

একই সাথে আমি এটাও বিশ্বাস করি শেখ হাসিনা যে ভুল করেছেন তা ক্ষমার অযোগ্য। কিন্তু তাকে মৃত্যুদণ্ড দিলে আমরা কী ফিরে পাবো? কিছুই না। রাষ্ট্রীয় ক্ষতি পূরণ হবে না। বরং যদি শেখ পরিবারের মধ্যে ন্যূনতম মানবিকতা অবশিষ্ট থাকে তাহলে তাদের উচিত জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়া। কারণ ক্ষমা করার অধিকার একমাত্র আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামীনের।

বাংলাদেশ একটি নদীবেষ্টিত দেশ যেখানে প্রতিদিন নদী বদলায়, ভাঙে, গড়ে। এই ভাঙন এবং নতুন সৃষ্টির সাথে তাল মিলিয়ে যে দেশে টিকে থাকা যায় সেখানে নেতৃত্বও হতে হয় পরিবর্তনের সক্ষম ধারক। কিন্তু পরিবারতন্ত্র সেই পরিবর্তনকে আটকে দিয়েছিল। দক্ষিণ এশিয়ার ভূগোল দেখলে দেখা যায় যে এই অঞ্চলে নেতৃত্ব যত বেশি গণমুখী হয়েছে দেশ তত বেশি স্থিতিশীল হয়েছে। বাংলাদেশও সেই বাস্তবতা থেকে আলাদা নয়। আজকের বিশ্বব্যবস্থা দ্রুত বদলে যাচ্ছে। ইন্দোপ্যাসিফিক কৌশল, নতুন আঞ্চলিক জোট, বঙ্গোপসাগরের সামুদ্রিক করিডোর এবং বৈশ্বিক বাণিজ্য রুট বাংলাদেশের ভবিষ্যৎকে নতুন মাত্রায় এগিয়ে নেওয়ার সুযোগ তৈরি করছে। এমন এক সময়ে পরিবার কেন্দ্রিক রাজনীতি, দলীয় অন্তর্দ্বন্দ্ব এবং প্রতিহিংসার চর্চা কেবল দেশের অগ্রযাত্রাকে থামিয়ে দেয় না বরং আমাদের ভূরাজনৈতিক সুবিধাগুলোকেও বিপন্ন করে। বিশ্বের অষ্টম বৃহত্তম জনসংখ্যার দেশ হিসেবে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শক্তি তার মানুষ। নেতৃত্ব যদি এই জনশক্তিকে সৎভাবে কাজে লাগাতে পারে এবং রাজনীতিকে নৈতিকতা ও জবাবদিহিতার ভিত্তিতে পুনর্গঠন করতে পারে তবে এই দেশ দক্ষিণ এশিয়ার নতুন শক্তির কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে পারে। তাই নতুন নেতৃত্ব তৈরি করা, জনগণের ওপর আস্থা ফিরিয়ে আনা এবং অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়া শুধু রাজনৈতিক প্রয়োজন নয় বরং বাংলাদেশের ভৌগোলিক বাস্তবতা এবং বৈশ্বিক ভবিষ্যতের জন্য একটি অপরিহার্য জাতীয় দায়িত্ব।

রহমান মৃধা, গবেষক এবং লেখক, সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন। rahman.mridha@gmail.com

শেয়ার করুন:-
পুরো সংবাদটি পড়ুন

মত দ্বিমত

খালেদা জিয়ার প্রতি আমাদের আকুলতা এবং নীরব শক্তির প্রতিচ্ছবি

Published

on

বিআইসিএম

উপমহাদেশের সমৃদ্ধ কিন্তু উত্তাল ইতিহাসে খালেদা জিয়ার নাম এক আলাদা অধ্যায়। ব্যক্তিগত বেদনা এবং রাজনৈতিক টানাপোড়েনের মধ্যেই তিনি গড়ে তুলেছিলেন এক অদম্য পরিচয় যা তাকে দেশের সর্বোচ্চ ক্ষমতার কেন্দ্রে নিয়ে যায়। তিনি ১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ এবং ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং দেশের ইতিহাসে প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অনন্য মর্যাদা অর্জন করেন।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

একটি সাধারণ সংসারে বড় হয়ে জীবনের কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হওয়া, স্বামীর হত্যার পর আকস্মিকভাবে রাজনীতিতে উঠে আসা এবং দলকে নেতৃত্ব দেওয়া তাকে এক অনন্য উচ্চতায় তুলে ধরে। তাঁর আদর্শ, সিদ্ধান্ত গ্রহণের দৃঢ়তা এবং রাষ্ট্র পরিচালনায় প্রভাব বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে দীর্ঘস্থায়ী ছাপ রেখে গেছে।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান, শিক্ষা ও অর্থনৈতিক সংস্কারের প্রতি মনোযোগ এবং রাজনৈতিক অঙ্গনে তাঁর দৃঢ়তা তাকে সমর্থক ও সমালোচকের আলোচনায় রাখে। ২০০৮ সালের মামলায় তোলা বিভ্রান্তিকর অভিযোগ এবং দীর্ঘ আইনি লড়াই তাঁর রাজনৈতিক যাত্রায় গভীর প্রভাব ফেলে। ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে শীর্ষ আদালত তাঁকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিলে তাঁর প্রতি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হয়।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

গত এক বছরে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি নিয়ে মানুষের উদ্বেগ বেড়েছে। এই বছরের মে মাসে লন্ডনে চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরার পর হঠাৎ অবস্থার আরও অবনতি ঘটে এবং তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন যে অনুকূল নয় এমন শ্বাসনালী সংক্রমণ বা নিউমোনিয়ার কারণে তিনি কোরোনারি কেয়ার ইউনিটে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। দল মত নির্বিশেষে মানুষ তাঁর সুস্থতার জন্য দোয়া করছেন।

চিকিৎসায় দেশি বিদেশি বিশেষজ্ঞরা সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব ও আন্তরিকতা নিয়ে কাজ করছেন। কয়েকটি বন্ধুত্বপূর্ণ দেশ উন্নত চিকিৎসা সহায়তার আগ্রহও প্রকাশ করেছে। এই মানবিক সহযোগিতা এবং সমন্বিত চিকিৎসা ব্যবস্থা জনগণের উদ্বেগ কিছুটা প্রশমিত করেছে। জিয়া পরিবারের পক্ষ থেকে দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানো হয়েছে এবং দোয়া অব্যাহত রাখার অনুরোধ করা হয়েছে। মাননীয় প্রধান উপদেষ্টাসহ উচ্চপর্যায়ের ব্যক্তিরা চিকিৎসায় পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।

তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের ব্যথা এখন একটি জাতির বেদনায় রূপ নিয়েছে। একজন নারী হিসেবে রাজনৈতিক শিখরে ওঠা, পরিবার বিচ্ছিন্নতার অভিজ্ঞতা এবং বর্তমান শারীরিক দুর্বলতা মিলিয়ে তাঁর জীবন একটি গভীর মানবগল্প হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাঁর সংগ্রাম, উত্থান পতন এবং বর্তমান সংগ্রাম মানুষের মনে আন্তরিকতা ও সহমর্মিতা জাগিয়েছে।

দীর্ঘ সময় ধরে প্রতিহিংসাপূর্ণ রাজনীতি বাংলাদেশকে গ্রাস করেছে। সেখানে খালেদা জিয়ার নীরব ধৈর্য, সংযমী আচরণ এবং আধ্যাত্মিক শক্তি অনেকের চোখে অন্যরকম এক প্রতিরোধের প্রতীক হয়ে উঠেছে। আজ দেশজুড়ে যেভাবে সমবেদনা ছড়িয়ে পড়েছে তা কেবল একজন রাজনৈতিক নেত্রীর প্রতি নয়, বরং একজন মা, একজন বোন এবং একজন রাষ্ট্রনেত্রীর প্রতি মানুষের গভীর মানবিক সাড়া।

এই সময় আমরা যে প্রার্থনায় ঐক্যবদ্ধ হয়েছি তা কোনো আনুষ্ঠানিকতা নয়। এটি এক মানবিক আবেদন জীবনের বহু ঝড় অতিক্রম করা এক নেত্রীর প্রতি শ্রদ্ধা জানানো। জিয়া পরিবারের প্রতি দোয়া অব্যাহত রাখার আহ্বান জানাই এবং চিকিৎসা সেবায় যুক্ত সকলকে ধন্যবাদ জানাই যারা নিরলসভাবে কাজ করছেন।

উপমহাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে কখনো কখনো এমন একটি চরিত্র আসে যার উপস্থিতি সময়কে বদলে দেয়। বাংলাদেশের রাজনীতিতে সেই চরিত্র ছিলেন খালেদা জিয়া। তিনি ছিলেন এমন এক নারী যাঁর দৃঢ়তা অসংখ্য মানুষকে আত্মমর্যাদার শিক্ষা দিয়েছে এবং যাঁর সাহস রাষ্ট্রক্ষমতার অর্থকে নতুনভাবে বুঝিয়েছে। তাঁর পথচলা ছিল সাহসে ভরা দীর্ঘ যাত্রা যেখানে প্রতিটি অগ্রগতি প্রতিহিংসার রাজনীতির বিরুদ্ধে নীরব অথচ শক্তিশালী ঘোষণা ছিল।

তাঁর জীবন ছিল নিরন্তর সংগ্রামের গল্প। ব্যক্তিগত ক্ষতি, অপবাদ, রাষ্ট্রীয় প্রতিহিংসা এবং ষড়যন্ত্রের বহু অধ্যায় তিনি বরণ করেছেন। স্বামী ও সন্তানকে হারানোর বেদনা এবং অন্য সন্তানদের থেকে দূরে থাকার কষ্ট তিনি মর্যাদার সঙ্গে বহন করেছেন। তবুও তিনি ঘৃণার উত্তরে ঘৃণা দেখাননি। তাঁর নীরবতা ছিল তাঁর সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিরোধ।

দুর্নীতি থেকে দূরে থাকার নৈতিক দৃঢ়তা এবং ক্ষমতার কেন্দ্রে থেকেও ব্যক্তিগত স্বার্থকে প্রত্যাখ্যান করার যে উদাহরণ তিনি সৃষ্টি করেছেন তা বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে বিরল। তাঁর দল আজও তাঁর সমতুল নেতৃত্ব তৈরি করতে পারেনি কারণ দলটি দাঁড়িয়ে আছে তাঁর নীতি, বিচক্ষণতা এবং দৃঢ় ব্যক্তিত্বের ভিত্তিতে।

একসময় তাঁকে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পদে দেখার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। তিনি যদি সেই পদে যেতে পারতেন তাহলে বাংলাদেশ রাজনৈতিক শিষ্টাচার এবং দৃঢ় নেতৃত্বের এক নতুন অধ্যায় দেখতে পেত। কিন্তু প্রতিহিংসাপূর্ণ রাজনৈতিক বাস্তবতা সেই সম্ভাবনাকে থামিয়ে দেয়।

আজ তিনি জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময় পার করছেন। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় নিবিড় পরিচর্যায় থাকা সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জন্য সারা দেশ দোয়া করছে। প্রধান উপদেষ্টাও তাঁর সুস্থতার জন্য প্রার্থনা করেছেন এবং চিকিৎসায় পূর্ণ সহযোগিতার কথা জানিয়েছেন।

দেশ বিদেশের চিকিৎসকরা নিষ্ঠা নিয়ে কাজ করছেন এবং কয়েকটি বন্ধুত্বপূর্ণ রাষ্ট্র উন্নত চিকিৎসার আগ্রহ জানিয়েছে। জিয়া পরিবারের পক্ষ থেকে দেশবাসীর ভালোবাসা ও দোয়ার জন্য গভীর কৃতজ্ঞতা জানানো হয়েছে এবং সকলকে দোয়া চালিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে।
এই সংকটকালে মায়ের স্নেহ স্পর্শ পাবার আকাঙ্ক্ষা একজন সন্তানের কাছে খুবই স্বাভাবিক তবুও রাজনৈতিক পরিস্থিতির সংবেদনশীলতার কারণে হয়তো সব কিছু সম্ভব হচ্ছে না, তবে বিশ্বাস করি পরিস্থিতি শান্ত হলে বহু দিনের প্রতীক্ষার অবসান ঘটবে এবং স্বদেশে ফিরে মায়ের পাশে দাঁড়ানোর দিন একদিন অবশ্যই আসবে।

তিনি এখনও আমাদের মাঝে আছেন এবং তাঁর উপস্থিতি নিজেই এক দৃঢ়তার উৎস। বর্তমানের তরুণেরা দেখছে যে এই দেশে এক নারী আছেন যিনি প্রতিহিংসাপূর্ণ রাজনীতিকে নীরব সাহস দিয়ে পরাজিত করেছেন। তাঁর জীবন এখনো নক্ষত্রের মতো দীপ্ত এবং যতদিন তিনি আমাদের সঙ্গে থাকবেন ততদিন সেই দীপ্তি প্রজন্মকে পথ দেখাবে। এক দিন তাঁর প্রস্থান যখনই আসবে তা হবে একটি যুগের সমাপ্তি, কিন্তু আজ তিনি জীবনের সঙ্গে লড়াই করা এক অবিনাশী শক্তির প্রতীক।

রহমান মৃধা, গবেষক এবং লেখক, প্রাক্তন পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন
rahman.mridha@gmail.com 

শেয়ার করুন:-
পুরো সংবাদটি পড়ুন

মত দ্বিমত

চট্টগ্রাম বন্দর সংস্কার: কার স্বার্থে ‘নিরাপত্তা’র ভয়

Published

on

বিআইসিএম

চট্টগ্রাম বন্দর বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রধান প্রবেশদ্বার। দেশের মোট আমদানি এবং রপ্তানার প্রায় নব্বই শতাংশ এখান দিয়ে সম্পন্ন হয়। তাই বন্দর কেবল একটি স্থাপনা নয়, এটি জাতীয় অর্থনীতির হৃদস্পন্দন। প্রতিদিন হাজার হাজার কন্টেইনার ওঠানামা করে, জাহাজের হর্ন বাজে, শ্রমিকরা ব্যস্ত থাকে, আর ব্যবসায়ীরা অপেক্ষা করে তাদের পণ্যের মুক্তির জন্য। এই জায়গাই বাংলাদেশের অর্থনীতির নীরব নাড়ি।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

কিন্তু বছরের পর বছর দুর্নীতি, অদক্ষতা, স্বজনপ্রীতি এবং রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের লুটপাটের কারণে এই নাড়ির গতি ক্রমশ কমে এসেছে। যন্ত্রপাতির অভাব, সমন্বয়ের ঘাটতি, কাগজপত্রের জট এবং সিদ্ধান্তহীনতার কারণে বন্দরের দক্ষতা বিশ্বের মানদণ্ডের তুলনায় অনেক নিচে নেমে গেছে। ব্যবসায়ীরা প্রায়ই বলেন, “পণ্য আনতে যত খরচ হয়, তার থেকেও বেশি খরচ পড়ে বন্দরের অদক্ষতা সামলাতে।” প্রশ্ন আসে, একটি দেশের অর্থনৈতিক স্বপ্ন কি বন্দরেই আটকে থাকবে?

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

এই সমস্যার মোকাবিলায় বর্তমান সরকার চট্টগ্রাম বন্দরের পুরনো দুর্নীতিগ্রস্ত অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনা ভেঙে আধুনিক, দক্ষ ও স্বচ্ছ কাঠামো গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ এবং অভিজ্ঞ অপারেটরদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যাতে উন্নত প্রযুক্তি, ডিজিটাল ব্যবস্থাপনা, গতি এবং বৈশ্বিক মান বজায় রাখা সম্ভব হয়।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

কিন্তু এখানে বাধা সৃষ্টি করেছে দীর্ঘদিনের সুবিধাভোগী দুর্নীতিগ্রস্ত চক্র। তারা “জাতীয় নিরাপত্তা”র নামে ভয় দেখাচ্ছে, প্রকৃত বিষয়টি নিরাপত্তা নয় বরং তাদের নিজের স্বার্থের নিরাপত্তা। নতুন স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক ব্যবস্থাপনায় তাদের অবৈধ আয় এবং প্রভাবের সুযোগ শেষ হয়ে যাবে।

দূরদর্শিতা দেখানো দরকার। ব্যক্তিগত জীবনে বিদেশি প্রযুক্তির প্রতি তাদের কোনো আপত্তি নেই। তারা বিদেশে চিকিৎসা নিতে একদিনও দেরি করে না, বিদেশি ইমপ্ল্যান্ট ব্যবহার করে, বিদেশি গাড়ি চালায়, আন্তর্জাতিক এয়ারলাইনসে ভ্রমণ করে, বিদেশি ওষুধ এবং পানীয় ব্যবহার করে। কিন্তু রাষ্ট্রের স্বচ্ছতা বৃদ্ধির জন্য বিদেশি বিশেষজ্ঞ এলে হঠাৎ দেশপ্রেম জেগে ওঠে। এই দ্বিচারিতা ভণ্ডামি ছাড়া কিছুই নয়।

বাস্তবতা হলো, উন্নত বিশ্বে আউটসোর্সিংই দক্ষতার পথ। বিশ্বের প্রায় সব উন্নত দেশে গুরুত্বপূর্ণ সেক্টরের বড় অংশই আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। উদাহরণ হিসেবে হাসপাতাল, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক অংশ, আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, বিদ্যুৎ ও গ্যাস বিতরণ, সমুদ্রবন্দর, রেলওয়ের নিরাপত্তা এবং বড় শিল্প কারখানার প্রডাকশন লাইন উল্লেখযোগ্য। এগুলো প্রায় সবই পেশাদার আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে, যা লং রেঞ্জ প্ল্যানিং এবং দীর্ঘমেয়াদী দক্ষতা নিশ্চিত করে।

সৌদি আরবের ব্যস্ততম বিমানবন্দর বিদেশি কোম্পানি দিয়ে চলে, সিঙ্গাপুরের PSA বন্দর বিশ্বের সেরা বন্দরের একটি, দুবাইয়ের জেবেল আলি বন্দরও বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে। সেখানে দুর্নীতি নেই, অপদক্ষতা নেই, স্বচ্ছতা আছে। কিন্তু চট্টগ্রাম বন্দরে এপিএম (বিশ্বসেরা ডেনিশ কোম্পানি) কাজ করতে চাইলে হঠাৎ দেশপ্রেম জেগে ওঠে। এটি দেশপ্রেম নয়, এটি চোরদের আয় বন্ধ হওয়ার কান্না।

বাংলাদেশের প্রশাসনিক কাঠামো এতটাই দুর্বল যে দেশের সব গুরুত্বপূর্ণ সেক্টর আজ দুর্নীতি এবং অদক্ষতায় ভরা। রাজনৈতিক দলগুলোকে নিরপেক্ষভাবে বিশ্বাস করা যায় না, প্রশাসনের ওপর মানুষের আস্থা নেই, কোনো প্রতিষ্ঠানেই দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার সংস্কৃতি নেই, জবাবদিহি দুর্বল এবং স্বচ্ছতা অনুপস্থিত। এই অবস্থায় দক্ষতা আনার সবচেয়ে যৌক্তিক পথ হলো আউটসোর্সিং।

চট্টগ্রাম বন্দরের দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়নে বিদেশি বিশেষজ্ঞদের অংশগ্রহণ মানেই স্বাধীনতা হারানো নয়। বরং এটি দক্ষতা বৃদ্ধি, দুর্নীতি কমানো এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার সবচেয়ে শক্তিশালী পথ। ডিজিটাল সিস্টেম এলে প্রক্রিয়া দ্রুত হবে, দুর্নীতি কমবে, এবং দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী হবে।

যারা এতদিন খেয়ে এসেছে, তারা চিৎকার করবে “দেশ বিক্রি হয়ে গেলো।” এটা দেশপ্রেম নয়, এটি চোরদের আয় বন্ধ হওয়ার কান্না।

বর্তমান বাস্তবতা বলছে, যদি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে দুর্নীতি মুক্ত করা যেত, হাসপাতালগুলোতে জবাবদিহি জন্মাত, ঢাকা বিমানবন্দরে যাত্রীদের ভোগান্তি কমত, রাজস্ব সঠিকভাবে ব্যবহৃত হতো, তাহলে আজ দেশের জন্য আউটসোর্সিংয়ের প্রয়োজন হতো না। ক্ষমতার অপব্যবহার, দুর্নীতি এবং অদক্ষতা রাষ্ট্রকে এমন এক অবস্থায় পৌঁছে দিয়েছে যেখানে দেশের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র দ্রুত সমাধানের বাইরে।

চট্টগ্রাম বন্দরের মতো কৌশলগত স্থাপনায় বিদেশি বিশেষজ্ঞ আনা মানে উন্নয়নকে বাধাহীন করা, দক্ষতা ফিরিয়ে আনা, এবং রাষ্ট্রকে রক্ষা করা। উন্নয়ন মানে শুধু ভবন নয়, গতি, স্বচ্ছতা, সুশাসন এবং মানুষের স্বার্থ রক্ষা।

সারমর্ম
বাংলাদেশকে বাঁচাতে হলে দুর্নীতিকে পরাজিত করতেই হবে। রাজনৈতিক শক্তি এবং প্রশাসনিক অদক্ষতার কারণে আজ দেশে আউটসোর্সিংয়ের পথ গ্রহণ করতে হচ্ছে। এটি আমাদের দুর্বলতার প্রমাণ নয়, বরং বাস্তবতার স্বীকারোক্তি। রাষ্ট্রকে ধ্বংস হতে দেওয়া যাবে না। প্রয়োজনে পুরো দেশকেই নতুন করে আউটসোর্সিং করে দক্ষতার পথে ফিরিয়ে আনতে হবে। আমরা আর সময় নষ্ট করার অবস্থায় নেই।

চট্টগ্রাম বন্দর সংস্কার একটি সাধারণ অবকাঠামো প্রকল্প নয়, এটি দেশের অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎ। ডিজিটাল সিস্টেম এলে দুর্নীতি কমে, স্বচ্ছতা বৃদ্ধি পায় এবং কার্যকারিতা দ্রুত হয়। যারা এতদিন খেয়ে এসেছে তারা চিৎকার করে বলবে “দেশ বিক্রি হয়ে গেলো।” এটি দেশপ্রেম নয়, এটি চোরদের আয় বন্ধ হওয়ার কান্না। চট্টগ্রাম বন্দরের স্বচ্ছতা ও উন্নয়ন রুখে দাঁড়ানো মানে দেশের ভবিষ্যৎ রুখে দাঁড়ানো।

রাষ্ট্রকে রক্ষা করতে চাইলে এখনই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আউটসোর্সিং হলো দেশের একমাত্র যৌক্তিক পথ, যা দুর্নীতিকে নিয়ন্ত্রণ করে দক্ষতা ফিরিয়ে আনবে, এবং বাংলাদেশকে আধুনিক, স্বচ্ছ এবং প্রতিযোগিতামূলক রাষ্ট্র হিসেবে স্থাপন করবে।

রহমান মৃধা, গবেষক এবং লেখক, প্রাক্তন পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন
rahman.mridha@gmail.com

শেয়ার করুন:-
পুরো সংবাদটি পড়ুন

মত দ্বিমত

গণতন্ত্রের অপমৃত্যু এবং জনগণের নবজাগরণের অনিবার্য ডাক

Published

on

বিআইসিএম

বিশ্বে যে উদ্দেশ্যে গণতন্ত্রের জাগরণ হয়েছিলো কোনো এক সময় সেই উদ্দেশ্য আজও সফল হয়নি। দুই হাজার চব্বিশ সালে যে গভীর উদ্বেগ আমাকে আঘাত করেছিলো সেই একই উদ্বেগ আজ আরও তীব্র হয়েছে যদি বর্তমান বৈশ্বিক বাস্তবতাকে দেখি। পৃথিবী আজ প্রযুক্তির অসীম অগ্রগতিতে বদলে গেছে, ডিজিটালায়ন মানুষের জীবনযাত্রাকে নতুন রূপ দিয়েছে, তথ্যপ্রবাহের গতি আশ্চর্য দ্রুততায় ছুটছে কিন্তু গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি যে প্রতিষ্ঠানগুলো সেখানে কোনো অগ্রগতি নেই।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

এখনও বহু দেশে স্বৈরাচারী শাসন টিকে আছে, পরিবারতন্ত্র এবং একনায়কতন্ত্র আরও জমাট বেঁধে আছে। শাসন এবং শোষণ যেন একই স্রোতে বইছে, ভাষণের স্বাধীনতা প্রতিদিনই আঘাতপ্রাপ্ত হচ্ছে, মানুষের ভিন্নমত প্রকাশের অধিকার প্রহসনে পরিণত হয়েছে।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

অথচ রয়েছে জাতি সংঘের মতো অচল এবং নিষ্ক্রিয় এক সংগঠন, যার অবস্থান আজ বিশ্বের সামনে এক অবিশ্বাস্য লজ্জা। কোথাও কোনো সাড়া নেই, কোনো দায় নেই, কোনো জবাব নেই। যেন গোটা মানবজাতির দুর্দশা আর অস্থিরতা তাদের বিবেক স্পর্শই করে না।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

আজ দিনমজুর মানুষ তার সবকিছু বিসর্জন দিয়ে নিজের দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় জীবন পর্যন্ত দিচ্ছে। আর সেই একই সময়ে যাদের আমরা এলিট শ্রেণি বলি তারা বিলাসবহুল জীবনে অন্য দেশে সুরক্ষিতভাবে অবস্থান করছে কিংবা তাদের পরিবারকে বিশ্বের শান্তিপূর্ণ দেশে পাঠিয়ে দিয়েছে। ওদিকে সাধারণ মানুষ পেটে ক্ষুধা হাতে অস্ত্র নিয়ে যুদ্ধ করছে মাতৃভূমির জন্য। এই কি সেই গণতন্ত্র যার স্বপ্ন একদিন মানবজাতিকে আলোড়িত করেছিলো। এ লজ্জা এবং এ ঘৃণা কোথায় রাখি।

আজ যুদ্ধ চলছে গাজায় ইউক্রেনে আরও বহু দেশে। অথচ সদ্য আমি এসেছি সিশরে আর দেখছি যে বহু দেশের এলিট মানুষ এখানে নিশ্চিন্তে ছুটি কাটাচ্ছে। তাদের দেশের মানুষ যখন মরছে তখন তারা সমুদ্রের নীল জলে আনন্দে ভাসছে। আমরা খবর দেখছি সাহায্য পাঠাচ্ছি অর্থ দিচ্ছি। কিন্তু সেই অর্থ কতটা যায় সাধারণ মানুষের কাছে আর কতটা চলে যায় দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদদের পরিবারে যারা দূরদেশে লাক্সারি জীবন কাটায়। বহুদিন ভাবতাম এমন জঘন্যতা শুধু বাংলাদেশের দুর্নীতিবাজদের মধ্যে সীমাবদ্ধ। এখন দেখছি এ ভণ্ডামি সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু কেন। কোথায় সেই জাতি সংঘ। তারা কী কাজ করছে আর কীই বা করতে পারছে।

বাংলাদেশের স্বৈরাচার সরকারের পতন ঘটেছে তবে সেই স্বৈরাচার পরিবারের কেউ দেশে নেই। তারা বিশ্বের নানা দেশে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে নাগরিকত্ব কিনে নিয়েছে। অথচ দেশের মানুষের পেটে ভাত নেই দেখার কেউ নেই। যখন দেশে আইন স্বচ্ছ হলো বিচারিক ব্যবস্থা নিজেদের কাজ করতে শুরু করলো তখনই তারা মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে প্রতিবাদ করছে। বাহ কি আশ্চর্য অভিনয়। আর সব কিছুর ওপরে আছে জাতি সংঘের নিশ্চুপ অবস্থান।

যে দেশে দিনের নব্বই শতাংশ মানুষ দিনমজুর সেখানে কীভাবে এলিট শ্রেণির মানুষ নেতার আসনে বসে। তারা কি কোনোদিন বুঝতে চেয়েছে সাধারণ মানুষের জীবন কতটা কঠিন। না তারা তা বুঝবে কেন। তাদের বোঝার দরকার নেই কারণ বোঝার চেষ্টা করলে দেশের টাকা বিদেশে পাচার করা যাবে না। এবারের এনসিপির নোমিনেশন ফর্ম বিক্রির দৃশ্য দেখে হঠাৎ মনে হলো তারা অবশেষে এক সত্য উপলব্ধি করেছে। বাংলাদেশের পরিচয় শুধু দুর্নীতি স্বৈরাচার পরিবার তন্ত্রের রাজনীতি সীমাবদ্ধ নয় এদেশে সতেরো কোটি মানুষের মধ্যে রয়েছে বিশাল জনগোষ্ঠী যারা নিজেদের জীবনকে উৎসর্গ করে দেশের উন্নয়নে। এ দেশ রিকশাওয়ালার দেশ অতএব রিকশাচালকের ভোট তার কণ্ঠস্বর তার প্রতিনিধিত্বই হওয়া উচিত দেশের সরকার গঠনের ভিত্তি। বাংলাদেশ পঞ্চান্ন বছর পার করেছে কিন্তু শাসিত হয়েছে এলিট শ্রেণির হাতে। এটা আর চলতে দেওয়া যায় না।

যে রিকশাওয়ালা দেশের তরুণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দেখে ছুটে এসেছিলো যে সাধারণ মানুষ দেশের ভবিষ্যৎ রক্ষায় জীবন দিতে দ্বিধা করেনি সেই মানুষই প্রকৃত নায়ক। সুতরাং এবারের জাতীয় নির্বাচন তারই প্রাপ্য। কারণ সেই মানুষই স্বৈরাচার দুর্নীতি এবং চাঁদাবাজির দুষ্টচক্র থেকে সতেরো কোটি মানুষের অধিকার ফিরিয়ে আনতে পারবে।

আমি দেখতে চাই বাংলাদেশ হোক বিশ্বের প্রথম দেশ যেখানে জনগণ নতুন বিপ্লবের মাধ্যমে প্রকৃত গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করবে। আর বিশ্ব সেখান থেকে শিখবে কীভাবে শত বছরের প্রতিজ্ঞা যার নাম গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা যায়। জাগো বাংলাদেশ জাগো।

রহমান মৃধা, গবেষক এবং লেখক, সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন
rahman.mridha@gmail.com

এমকে

শেয়ার করুন:-
পুরো সংবাদটি পড়ুন

মত দ্বিমত

বৈশ্বিক বিনিয়োগ ও বাংলাদেশের পুঁজিবাজার

Published

on

বিআইসিএম

একটি নতুন সময়ের চিত্র
বিশ্ব এখন এমন এক বিনিয়োগ সময়ের মুখোমুখি যেখানে পুরনো স্থিতিশীলতা আর নেই। গত কয়েক দশকের পরিচিত অর্থনৈতিক গতিশীলতা, বাজারের নিয়ম ও নিশ্চিত বিনিয়োগ প্রবাহ ভেঙে পড়েছে। অর্থনীতি, ভূরাজনীতি এবং প্রযুক্তির পরিবর্তনের জটিলতায় বিশ্বব্যাপী পুঁজির গতিপথ নতুন রূপ নিচ্ছে। এই পরিবর্তনের ঢেউ বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সরাসরি প্রভাবিত করছে।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

বৈশ্বিক বিনিয়োগ প্রবণতা
গত কয়েক বছরে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগে ক্রমাগত ধীরগতি দেখা গেছে। United Nations Conference on Trade and Development জানিয়েছে যে ২০২৪ সালে বৈশ্বিক প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে এবং ২০২৫ সাল এখনও অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে। এর অর্থ, উন্নয়নশীল দেশগুলো বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি।
এশিয়া অঞ্চলে পুঁজিবাজার কিছু অগ্রগতির ইঙ্গিত দিলেও বাজারের গভীরতা, দায়বদ্ধতা এবং স্বচ্ছতার অভাব এখনো প্রকট। উন্নয়নশীল দেশগুলো এখনও ঝুঁকি এবং মানবসম্পদ সংকটে ভুগছে। ফলে অতিরিক্ত বিনিয়োগের সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও বাজার স্থিতিশীল নয়।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

বেসরকারি মৌলধন বা প্রাইভেট ইকুইটি বাজার কিছুটা পুনরুদ্ধার করলেও আগের অবস্থায় ফিরতে পারেনি। বড় লেনদেন ধীর এবং বিনিয়োগকারীরা অত্যন্ত সতর্ক। এর ফলে উদ্ভাবন এবং উদ্যোগে অর্থায়নের গতি কমে যাচ্ছে। ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা, সুদের হার বৃদ্ধি, মুদ্রাস্ফীতি চাপ, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য পরিবর্তন এবং নিয়ন্ত্রক অনিশ্চয়তা বিনিয়োগকারীদের ঝুঁকি মূল্যায়নে বাধ্য করছে। এসব প্রবণতা মিলিয়ে বিশ্ব এখন নতুন বিনিয়োগ যুগের মুখোমুখি, যেখানে পুরনো নিশ্চয়তা আর নেই এবং বাজারকে নতুন চোখে দেখা ছাড়া বিকল্প নেই।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের বর্তমান চিত্র
“একটি দেশের জিডিপির একটি বড় অংশ হচ্ছে দেশের পুঁজিবাজার, কিন্তু বাংলাদেশে সবচেয়ে অবহেলিত পুঁজিবাজার।” বাংলাদেশে পুঁজিবাজার দীর্ঘদিন ধরে নির্ভরযোগ্যতা ও স্বচ্ছতার অভাবে দুর্বল। নীচে মূল বিষয়গুলো বিশ্লেষণ করা হলো। ব্যাংক একীভূতকরণ: নীতি, সংকট ও ঝুঁকি কিছু দুর্বল ব্যাংককে অন্যান্য ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর ফলে দেশের অর্থনীতি ও পুঁজিবাজারের জন্য তিনটি বড় সংকট তৈরি হয়েছে।

১. তালিকাভুক্ত ব্যাংকের শেয়ারের ভবিষ্যত অনিশ্চিত। বিনিয়োগকারীরা জানে না তাদের অর্থের ফলাফল কী হবে।
২. বিনিয়োগকারীর মতামত উপেক্ষিত। আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী শেয়ারহোল্ডারের ভোট, স্বাধীন মূল্যায়ন এবং ন্যায্য বিনিময় অনুপাত নিশ্চিত করা বাধ্যতামূলক। বাংলাদেশে এগুলো কার্যকরভাবে হয় না।
৩. নৈতিক সংকট। যদি অডিট অনুযায়ী ব্যাংক স্থিতিশীল ছিল তাহলে হঠাৎ পতন কেন। আর যদি দুর্বল ছিল তাহলে অডিটে ধরা পড়েনি কেন। এটি বিনিয়োগকারীর আস্থা ভেঙে দেয় এবং বাজারকে ঝুঁকিপূর্ণ করে।
শেয়ারহোল্ডারের অধিকার
শেয়ারহোল্ডারের মৌলিক অধিকারগুলো কার্যকর না হলে বাজার টেকসই হয় না। এই অধিকারগুলো হলো:
১. ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করা
২. স্বচ্ছ তথ্য প্রকাশ করা যেমন নন-পেরফর্মিং লোন, ক্যাপিটাল অ্যাডিকোয়েসি এবং অডিট রিপোর্ট
৩. শেয়ারহোল্ডারের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা
৪. ক্ষতির ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীর ক্ষতিপূরণের অধিকার
বাংলাদেশে এই অধিকারগুলো প্রায়ই উপেক্ষিত। ফলে বিনিয়োগকারীর আস্থা দুর্বল হয়ে গেছে এবং বাজার অনিরাপদ স্থানে আটকে আছে।
পুঁজিবাজার পতনের মূল কারণ
বাংলাদেশে বাজার পতন কোনো আকস্মিক ঘটনা নয়। বরং এটি দীর্ঘমেয়াদি কাঠামোগত সংকটের ফল।
১. নীতির অস্থিরতা: হঠাৎ নতুন নীতি যেমন সার্কিট ব্রেকার, মার্কেট মেকার নীতি বা মার্জিন লোন নীতি বাজারকে অনিশ্চিত করে।
২. স্বচ্ছতার অভাব: ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং তালিকাভুক্ত কোম্পানির প্রকৃত আর্থিক অবস্থা জনসমক্ষে আসে না।
৩. গোষ্ঠী স্বার্থে বাজার নিয়ন্ত্রণ: দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ রয়েছে, কিন্তু কার্যকর সমাধান নেই।
৪. সাধারণ বিনিয়োগকারীর বিশ্বাসহীনতা: মানুষ বিশ্বাস করে না যে তাদের টাকা নিরাপদ, নীতি ন্যায্য এবং রেগুলেটর নিরপেক্ষ।
নির্দিষ্ট পথ নির্দেশনা: নতুন আলো কীভাবে দেওয়া সম্ভব
বাংলাদেশ চাইলে এই সংকট কাটিয়ে পুঁজিবাজারে নতুন আলো দিতে পারে। এর জন্য ধাপমূলক রোডম্যাপ প্রস্তাব করা হলো।
১. নীতি ধারাবাহিকতা এবং পূর্বঘোষণা
নতুন নীতি হঠাৎ পরিবর্তন না করে স্পষ্টভাবে ঘোষণা করতে হবে। সার্কিট ব্রেকার, মার্কেট মেকার এবং মার্জিন লোন নীতিকে দীর্ঘমেয়াদি ভিত্তিতে স্থির করতে হবে।
২. বিনিয়োগকারীর অধিকার রক্ষা
মার্জার বা অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে শেয়ারহোল্ডারের ভোট বাধ্যতামূলক করতে হবে।
রেগুলেটর ব্যর্থ হলে ক্ষতিপূরণের স্বচ্ছ নীতি থাকা জরুরি।
৩. সুশাসন প্রতিষ্ঠা
কর্পোরেট গভর্ন্যান্স শক্তিশালী করতে হবে।
ইন্সাইডার ট্রেডিং কঠোরভাবে দমন করতে হবে।
কোম্পানির অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ শক্তিশালী করতে হবে।
৪. নিয়ন্ত্রক সংস্থার দক্ষতা ও স্বাধীনতা
BSEC এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের তদারকির ক্ষমতা বাড়াতে হবে।
আন্তর্জাতিক মানের অডিট পদ্ধতি নিশ্চিত করতে হবে।
৫. বিনিয়োগকারীর তথ্যপ্রবাহ ও শিক্ষার উন্নয়ন
সহজ ভাষায় তথ্য প্রকাশ, বিনিয়োগ-ঝুঁকি সচেতনতা বৃদ্ধি, মিডিয়া ও রেগুলেটরের যৌথ উদ্যোগে বাজার-সচেতনতা তৈরি।
৬. উদ্ভাবনী খাতে পুঁজিবাজারের সম্পৃক্ততা
প্রযুক্তি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, গ্রিন ইনভেস্টমেন্ট ইত্যাদিতে পুঁজিবাজারের শক্তি ব্যবহার।
৭. ধাপভিত্তিক রূপান্তর রোডম্যাপ
প্রথম বছর: নীতি রিভিউ ও আইন সংস্কার।
দ্বিতীয় বছর: তদারকি শক্তিশালী করা ও শেয়ারহোল্ডারের অধিকার নিশ্চিত।
তৃতীয় বছর: উদ্ভাবনী বাজার ব্যবস্থা চালু করা এবং বিনিয়োগকারীর আস্থা ফিরিয়ে আনা।

শেষ আহ্বান
বিশ্বের ধনী দেশ, ক্ষমতাধারী ব্যক্তি এবং কর্পোরেট নেতৃত্বের উদ্দেশ্যে একটি স্পষ্ট বার্তা। বিশ্বের অর্থনীতির সংকটের মূল প্রভাবগুলো হচ্ছে বিশ্বরাজনীতিতে অস্থিতিশীলতা, সামরিক সংঘাত, রোবটিক ও প্রযুক্তিগত দ্বন্দ্ব, কুটনৈতিক কুচক্র এবং যুদ্ধ। এই বাস্তবতায় যদি কাগজে কলমে আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি, তাহলে এলন মাস্কের মতো একজনের ভোটের মতো আমারও একটি ভোট। এখন ভাবুন যদি দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বাড়তে থাকে এবং গুরুত্বপূর্ণ শহরে কোটি কোটি ডলার বিনিয়োগ সত্ত্বেও নেতৃস্থানীয় মানুষকে হারানো সম্ভব হয়নি, তাহলে অর্থ দিয়ে ক্ষমতা ধরে রাখার চেষ্টা কতটা কার্যকর হবে।
এখন বিশ্বের কাছে প্রশ্ন: আমরা চাই অবিচার ও বিশৃঙ্খলা নাকি ন্যায্যতা ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা?

Rahman Mridha, গবেষক এবং লেখক, প্রাক্তন পরিচালক, Pfizer, Sweden
rahman.mridha@gmail.com 

শেয়ার করুন:-
পুরো সংবাদটি পড়ুন

পুঁজিবাজারের সর্বশেষ

বিআইসিএম বিআইসিএম
পুঁজিবাজার33 minutes ago

বিআইসিএম’র রিসার্চ সেমিনার

বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ক্যাপিটাল মার্কেটের (বিআইসিএম) রিসার্চ সেমিনার-৫০ অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার (৭ ডিসেম্বর) ইন্সটিটিউটের মাল্টিপারপাস হলে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।...

বিআইসিএম বিআইসিএম
পুঁজিবাজার2 hours ago

বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলসের ক্রেডিট রেটিং সম্পন্ন

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলস পিএলসির ক্রেডিট রেটিং সম্পন্ন করা হয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা...

বিআইসিএম বিআইসিএম
পুঁজিবাজার2 hours ago

জিপিএইচ ইস্পাতের পর্ষদ সভা তারিখ নির্ধারণ

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি জিপিএইচ ইস্পাত লিমিটেড পর্ষদ সভার তারিখ ঘোষণা করেছে। আগামী ১০ ডিসেম্বর বিকাল সাড়ে ৪টায় কোম্পানিটির পর্ষদ সভা...

বিআইসিএম বিআইসিএম
পুঁজিবাজার2 hours ago

লুব-রেফের পর্ষদ সভা তারিখ নির্ধারণ

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি লুব-রেফ (বাংলাদেশ) লিমিটেড পর্ষদ সভার তারিখ ঘোষণা করেছে। আগামী ১০ ডিসেম্বর বিকাল সাড়ে ৩টায় কোম্পানিটির পর্ষদ সভা...

বিআইসিএম বিআইসিএম
পুঁজিবাজার2 hours ago

বেক্সিমকোর সুকুকের মেয়াদ আরও ৬ বছর বাড়াতে সুপারিশ

বেক্সিমকো গ্রিন সুকুক বন্ডের মেয়াদ ২০২৬ সালের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিনিয়োগকারীদের মূলধন ফেরত দিতে না...

বিআইসিএম বিআইসিএম
পুঁজিবাজার2 hours ago

এফএএস ফাইন্যান্সের সর্বোচ্চ দরপতন

সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন শেষে দরপতনের তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে এফএএস ফাইন্যান্স ও ইনভেস্টমেন্ট...

বিআইসিএম বিআইসিএম
পুঁজিবাজার3 hours ago

দর বৃদ্ধির শীর্ষে সামিট অ্যালায়েন্স

সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ১১০টির শেয়ারদর বেড়েছে। এরমধ্যে দর বৃদ্ধির...

সোশ্যাল মিডিয়া

তারিখ অনুযায়ী সংবাদ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১৩
১৫১৬১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
৩০৩১  
বিআইসিএম
কর্পোরেট সংবাদ7 minutes ago

কোহিনূর কেমিক্যালের ৩৮তম বার্ষিক সাধারণ সভা

বিআইসিএম
পুঁজিবাজার33 minutes ago

বিআইসিএম’র রিসার্চ সেমিনার

বিআইসিএম
রাজনীতি48 minutes ago

যেকোনো মূল্যে দুর্নীতির লাগাম টানতে হবে: তারেক রহমান

বিআইসিএম
রাজনীতি1 hour ago

এনসিপিসহ ৩ দলের নতুন নির্বাচনী জোট ঘোষণা

বিআইসিএম
অর্থনীতি1 hour ago

ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু

বিআইসিএম
পুঁজিবাজার2 hours ago

বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলসের ক্রেডিট রেটিং সম্পন্ন

বিআইসিএম
অর্থনীতি2 hours ago

নভেম্বরে মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৮.২৯ শতাংশ

বিআইসিএম
পুঁজিবাজার2 hours ago

জিপিএইচ ইস্পাতের পর্ষদ সভা তারিখ নির্ধারণ

বিআইসিএম
পুঁজিবাজার2 hours ago

লুব-রেফের পর্ষদ সভা তারিখ নির্ধারণ

বিআইসিএম
জাতীয়2 hours ago

সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে দুদক

বিআইসিএম
কর্পোরেট সংবাদ7 minutes ago

কোহিনূর কেমিক্যালের ৩৮তম বার্ষিক সাধারণ সভা

বিআইসিএম
পুঁজিবাজার33 minutes ago

বিআইসিএম’র রিসার্চ সেমিনার

বিআইসিএম
রাজনীতি48 minutes ago

যেকোনো মূল্যে দুর্নীতির লাগাম টানতে হবে: তারেক রহমান

বিআইসিএম
রাজনীতি1 hour ago

এনসিপিসহ ৩ দলের নতুন নির্বাচনী জোট ঘোষণা

বিআইসিএম
অর্থনীতি1 hour ago

ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু

বিআইসিএম
পুঁজিবাজার2 hours ago

বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলসের ক্রেডিট রেটিং সম্পন্ন

বিআইসিএম
অর্থনীতি2 hours ago

নভেম্বরে মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৮.২৯ শতাংশ

বিআইসিএম
পুঁজিবাজার2 hours ago

জিপিএইচ ইস্পাতের পর্ষদ সভা তারিখ নির্ধারণ

বিআইসিএম
পুঁজিবাজার2 hours ago

লুব-রেফের পর্ষদ সভা তারিখ নির্ধারণ

বিআইসিএম
জাতীয়2 hours ago

সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে দুদক

বিআইসিএম
কর্পোরেট সংবাদ7 minutes ago

কোহিনূর কেমিক্যালের ৩৮তম বার্ষিক সাধারণ সভা

বিআইসিএম
পুঁজিবাজার33 minutes ago

বিআইসিএম’র রিসার্চ সেমিনার

বিআইসিএম
রাজনীতি48 minutes ago

যেকোনো মূল্যে দুর্নীতির লাগাম টানতে হবে: তারেক রহমান

বিআইসিএম
রাজনীতি1 hour ago

এনসিপিসহ ৩ দলের নতুন নির্বাচনী জোট ঘোষণা

বিআইসিএম
অর্থনীতি1 hour ago

ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু

বিআইসিএম
পুঁজিবাজার2 hours ago

বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলসের ক্রেডিট রেটিং সম্পন্ন

বিআইসিএম
অর্থনীতি2 hours ago

নভেম্বরে মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৮.২৯ শতাংশ

বিআইসিএম
পুঁজিবাজার2 hours ago

জিপিএইচ ইস্পাতের পর্ষদ সভা তারিখ নির্ধারণ

বিআইসিএম
পুঁজিবাজার2 hours ago

লুব-রেফের পর্ষদ সভা তারিখ নির্ধারণ

বিআইসিএম
জাতীয়2 hours ago

সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে দুদক