ক্যাটাগরি: অর্থনীতি

বাংলাদেশের ব্যাংক খাত নিয়ে যে সতর্কবার্তা দিল মুডিস

বাংলাদেশ ব্যাংকের দেওয়া খেলাপি ঋণ নবায়নের নতুন সুবিধাকে দেশের ব্যাংক খাতের জন্য ‘ক্রেডিট নেগেটিভ’ বা ‘ঋণ ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে অভিহিত করেছে আন্তর্জাতিক ঋণমান নির্ণয়কারী সংস্থা মুডিস।

সংস্থাটির মতে, এই নীতির ফলে ব্যাংকের ওপর চাপ সাময়িকভাবে কমলেও দীর্ঘমেয়াদে ঝুঁকি বাড়বে এবং ঋণ পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়া ব্যাহত হবে।

সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত মুডিসের প্রতিবেদনে এ সতর্কবার্তা দেওয়া হয়।

খেলাপি ঋণ নবায়নে সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক যে ছাড় দিয়েছে, তাতে দেশের ব্যাংক খাতে সার্বিকভাবে ঝুঁকির মাত্রা বেড়ে যাবে। এই সুবিধার ফলে সাময়িকভাবে খেলাপি ঋণের মাত্রা কমতে পারে। কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদে ঋণ আদায় কমে যাবে। গ্রাহকের ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা যাচাই করা বিলম্বিত হবে। ফলে দীর্ঘ মেয়াদে চাপে পড়বে ব্যাংক খাত।

এর আগে ২০২২ সালে এই ধরনের ছাড় দিয়েও কোনো বাড়তি সুবিধা পায়নি ব্যাংক খাত।

এর আগে ১৬ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংক খেলাপি ঋণ নবায়নের বিষয়ে নতুন একটি সার্কুলার জারি করেছে। এতে সাম্প্রতিক সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর খেলাপি ঋণ ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট জমা দিয়ে নবায়ন করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। ১০ বছর মেয়াদে ঋণ নবায়ন করা যাবে। গ্রেস পিরিয়ড দেওয়া হয়েছে দুবছর। খেলাপি ঋণের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা থাকলে নবায়নের পর তা স্থগিত রাখতে হবে।

মুডিস এই ধরনের সুবিধা দেওয়ার ফলে দেশের ব্যাংক খাতের জন্য ‘ক্রেডিট নেগেটিভ’ বা ঋণের জন্য নেতিবাচক হিসাবে অভিহিত করেছে। এ ধরনের নীতির কারণে ব্যাংকের ওপর চাপ সাময়িকভাবে কমলেও দীর্ঘ মেয়াদে ঝুঁকি বাড়বে। সেই সঙ্গে ঋণ আদায়ের প্রক্রিয়াও বাধাগ্রস্ত হবে। কারণ, এর আগে ২০২২ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক এই ধরনের সুবিধা দিয়ে কোনো সুফল পায়নি। গ্রেড পিরিয়ড দেওয়ার কারণে গ্রহীতার প্রকৃত ঋণ পরিশোধ সক্ষমতা যাচাই করা বিলম্বিত হবে। কারণ, নিয়মিত ঋণ পরিশোধ করলে গ্রহীতা একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার মধ্যে থাকে। তার ব্যবসার গতিবিধি বোঝা যায়। দুবছর গ্রেস পিরিয়ডের কারণে তা বোঝা যাবে না। ফলে দুই বছর গ্রেস পিরিয়ডের পর গ্রাহক ঋণ পরিশোধ করতে পারবে কি না, সেটি বোঝা কঠিন হবে।

শেয়ার করুন:-
শেয়ার