ভিপি প্রার্থী আবিদের উক্তি নিয়ে ব্যঙ্গ, ক্ষমা চেয়ে ইবি শিক্ষার্থীর স্ট্যাটাস

সম্প্রতি ডাকসুর ছাত্রদল সমর্থিত ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলামের জুলাই আন্দোলনে বলা ‘প্লিজ, কেউ কাউকে ছেড়ে যাইয়েন না’ অংশটি নিয়ে ব্যঙ্গ করার অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) ডাকসুর ফল ঘোষণার রাতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) অর্থনীতি বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের নাইমুর রহমান নামে এক শিক্ষার্থী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও পোস্ট করেন। এক পর্যায়ে সেটি ভাইরাল হলে দেশব্যাপী সমালোচনার ঝড় ওঠে।

এবিষয়ে শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকালে সমাজ কল্যাণ বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের সোহান হাসান সাকিব নামে এক শিক্ষার্থী ক্ষমা চেয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্ট্যাটাস দেন।

তবে তাদের পোস্ট করা ২৬ সেকেন্ডের মূল ভিডিওতে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা ‘তুমিও জানো আমিও জানি, সাদিক কায়েম পাকিস্তানি’ স্লোগান নেন। পাশাপাশা ‘প্লিজ, কেউ কাউকে ছেড়ে যায়েন না’ নিয়েও ব্যঙ্গ করেন। তবে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে কাঁটছাট করে শুধু ‘প্লিজ কেউ ছেড়ে যাইয়েন না’ অংশ প্রচার করা হয়।

আবিদ ভাইয়ের ‘প্লিজ কেউ কাউকে ছেড়ে যাইয়েন না’ মন্তব্য করা নিয়ে সোহান হাসান সাকিব লিখেন, গত ৯ সেপ্টেম্বর ডাকসু নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমাদের করা একটি ভিডিয়োর কিছু অংশকে অনেকেই সমালোচনাসহ প্রচার করছেন, যেখানে ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান ভাইয়ের ‘প্লিজ কেউ কাউকে ছেড়ে যাইয়েন না’ অংশটুকু ছিল। এই বিষয়টি নিয়ে কিছু বলা প্রয়োজন মনে করে এই পোস্ট।

তিনি আরও বলেন, এই ভিডিওটি আমরা করেছি সহপাঠীদের মধ্যে আড্ডার ছলে। এটি সেন্স অব হিউমার থেকে করা। এইটা জাস্ট একটা পলিটিক্যাল স্যাটায়ার। এটি উদেশ্যমূলকভাবে কাউকে আঘাতের জন্য করা হয়নি। ভিডিয়োটিতে আবিদ ভাইয়ের কথার পাশাপাশি সাদিক কায়েম ভাইকে নিয়েও মন্তব্য ছিল। কিন্তু ভিডিওটির একটি অংশ পোস্ট করে আবিদ ভাইয়ের বিষয়ে বিশেষভাবে উল্লেখ করে একটি নেগেটিভিটি তৈরি করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ভিডিওটি ছিল কেবলই হলের একটি রুমে বসে বন্ধুদের মাঝে আড্ডার অংশ। এটি কোনো রাজনৈতিক বৈঠক বা উদ্দেশ্যমূলক প্রচারণা ছিল না। এছাড়া এটি কেবলই ডাকসু নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে করা হয়েছে, অনেকে এটিকে জুলাই আন্দোলনে আবিদ ভাইয়ের সেই বিখ্যাত আহ্বানকে অবমূল্যায়নের কথা বলছেন, এটি কোনোভাবেই তেমন উদ্দেশ্য নিয়ে করা হয়নি। বরং বিষয়টির এমন অর্থ নিয়ে অনেকে কষ্ট পেয়েছেন এটি আমাদের মর্মাহত করেছে।

তিনি আরও বলেন, জুলাই যোদ্ধা আবিদ ভাইয়ের অবদান অনস্বীকার্য। তার হৃদয়গ্রাহী আহ্বান— “প্লিজ কেউ কাউকে ছেড়ে যাইয়েন না” আন্দোলনের কঠিন মুহূর্তে হাজারো শিক্ষার্থীর মনোবল ধরে রেখেছিল, মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করেছিল। আমরাও আন্দোলনের মাঠে অনুপ্রেরণা পেয়েছিলাম।

তিনি ক্ষমা চেয়ে বলেন, মজার ছলে করা আমাদের এই ভিডিওটি এভাবে মানুষকে কষ্ট দেবে, বিশেষ করে আমাদের জুলাই সহযোদ্ধাদের, এটি কখনোই ভাবতে পারিনি। আবিদ ভাইসহ যারা আমাদের এই কর্মকাণ্ডে ব্যথিত হয়েছেন সবার কাছে আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। আবিদ ও সাদিক ভাইসহ সকলের কাছে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ করছি।

শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মুহা. মাহমুদুল হাসান বলেন, কয়েকজন বন্ধুরা মিলে মজার ছলে ভিডিও করে ফেসবুক পোস্ট দিয়েছেন। অথচ একই ভিডিওতে সাদিক কায়েমকে নিয়েও ট্রল করেছেন। ইস্যু ক্রিয়েট করার জন্য একটা মহল কাটছাঁট করে ভিডিও ছড়িয়ে ভাইরাল করেছে। ভিডিওতে থাকা কয়েকজন আন্দোলনের সময় কুষ্টিয়া শহরে পুলিশের মার খেয়েছে। তবে তাদেরকে আন্দোলন বিরোধী হিসেবে মুখোমুখি দাঁড় করা হচ্ছে। তারা ইতোমধ্যে ক্ষমা চেয়েছে এবং আবিদ ভাইয়ের কাছে ক্ষমার জন্য যোগাযোগ করছে।

উল্লেখ্য, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে থাকা শিক্ষার্থীরা হলেন- ওমর ফারুক (ইইই ২০-২১ সেশন), নাহিদ হাসান (আল কুরআন ২০-২১), নাইমুর রহমান (অর্থনীতি ২১-২২), সোহান (সমাজ কল্যাণ ১৭-১৮), রোকনুজ্জামান রোকন (মার্কেটিং ১৯-২০), মোজাম্মেল (দাওয়াহ ২১-২২), আবদুল্লাহ নুর মিনহাজ (আল হাদিস ২০-২১)। তারা সবাই ইবি শাখা ছাত্র শিবিরের হল ও ফ্যাকাল্টির নেতাকর্মী।

অর্থসংবাদ/সাকিব/কাফি

শেয়ার করুন:-
শেয়ার