ছাত্রদল আদর্শিক রাজনীতি ছেড়ে পেশিশক্তির রাজনীতি বেছে নিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শাখা ইসলামি ছাত্রশিবির সেক্রেটারি ইউসুব আলী। তিনি বলেন, তাদের অফিশিয়াল পেইজ থেকে শুরু করে বিভিন্ন জায়গায় ‘একটা একটা শিবির ধর, ধইরা ধইরা জবাই কর’ বলে ছাত্রলীগের মতো সন্ত্রাসী স্লোগান দিয়েছে। তারা ৯০-এর সন্ত্রাসী রাজনীতে ফিরে যেতে চায়। এরকম নোংরামি রাজনীতি করতে থাকলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদেরকে লাল কার্ড দেখাবে। আমরা এমন ক্যাম্পাস চাই যেখানে শিক্ষার্থীরা নিরাপদে থাকবে এবং পড়াশোনার পরিবেশ বজায় থাকবে।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে ছাত্রদল নেতা কর্তৃক রাজশাহী বিশ্ববিদালয়ের (রাবি) নারী শিক্ষার্থীদের ‘যৌনকর্মী’ বলে কটুক্তি ও সারাদেশে নারী হেনস্তা এবং ক্যাম্পাস গুলোতে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরির প্রতিবাদে মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
ইউসুব আলী বলেন, ৫ আগস্ট পরবর্তী নতুন বাংলাদেশেকে ছাত্রদল তাদের পৈতৃক সম্পত্তি মনে করছে। রাবিতে এক ছাত্রদল নেতা ৯১ জন ছাত্রীদের ‘যৌনকর্মী’ এবং ঢাবির এক নেত্রী ছাত্রীকে ‘সেবাদাসী’ বলে কটূক্তি করেছে। চবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর বিএনপির নেতা হামলার জন্য উস্কে দিয়েছে। ঢাবির আলী হাসান ছাত্রশিবিরের ন্যূনতম সম্পৃক্ত ছিল না, কিন্তু সে তার প্রোফাইলে ছাত্রদলের প্রতি মায়া দেখিয়ে পোস্ট করেছিল; তা প্রমাণ করে সে ছাত্রদলের সাথেই সম্পৃক্ত। অথচ আমরা প্রশাসন বরাবর তার শাস্তির দাবি জানিয়েছি। বারবার তারা দায় চাপানো রাজনীতি করে যাচ্ছে। ছাত্রশিবির কোনো তুলা নয় যে ফুঁ দিলে ওড়ে যাবে।
শাখা ছাত্রশিবিরের ছাত্র অধিকার বিষয়ক সম্পাদক জাকারিয়া বলেন, আমরা আশা করেছিলাম একটা সুন্দর বাংলাদেশ পাবো, যে বাংলাদেশে আমাদের মা-বোন, আমাদের মেয়ে-সহ বাংলাদেশের প্রত্যেকটা নারী নিরাপদ থাকবে। কিন্তু বাংলাদেশে ধর্ষণের যে মহোৎসব পালন করেছিল ছাত্রলীগ তারই স্থলাভিষিক্ত হয়েছে ছাত্রদল। যে জুলাই শহীদের মেয়েকেও ছাত্রদলের নেতাকর্মী দ্বারা ধর্ষিত হতে হয়েছে। ধর্ষিতা হওয়ার পর বিচার না পেয়ে সেই জুলাই যোদ্ধার মেয়ে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে। নতুন বাংলাদেশ যাদের রক্তের উপর দিয়ে এসেছে তাদের সাথেই যদি এমন ঘটনা ঘটে তাহলে অন্যান্য মানুষের সাথে কীরকম ঘটবে?
এসময় তাদের ‘নারী হেনস্তা বন্ধ কর, করতে হবে; ছাত্রদলের সন্ত্রাস, রুখে দাও ছাত্রসমাজ; চাঁদাবাজের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে; ফ্যাসিবাদের রাজনীতি বন্ধ কর, করতে হবে; চাঁদাবাজ ও স্বৈরাচার মিলেমিশে একাকার; ধর্ষক আর স্বৈরাচার মিলেমিশে একাকার, দায় চাপানো রাজনীতি বন্ধ কর, করতে হবে; শিবিরের অঙ্গীকার, নিরাপদ ক্যাম্পাস; আমার সোনার বাংলায়, ধর্ষকের ঠাঁই নাই; জবাই স্লোগান দিতো যারা, এখন তারা বাংলা ছাড়া’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।
মানববন্ধনে শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি ইউসুব আলী, অর্থ সম্পাদক শেখ আলামিন, ছাত্র অধিকার বিষয়ক সম্পাদক জাকারিয়া হোসেন ও আন্তর্জাতিক ও স্কিল ডেভেলপমেন্ট বিষয়ক সম্পাদক হাসানুল বান্না সহ সংগঠনটির নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
অর্থসংবাদ/সাকিব/এসএম