চবি ক্যাম্পাস থমথমে, রোববারের সব পরীক্ষা স্থগিত

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মধ্যরাতেই শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের সংঘর্ষে চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। শনিবার (৩১ আগস্ট) রাত সাড়ে ১২টা থেকে ভোর ৩টা ২০ মিনিট পর্যন্ত চলা এ সংঘর্ষে অন্তত ৬০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে ২১ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেইট সংলগ্ন একটি আবাসিক ভবনের ভাড়াটিয়া এক ছাত্রীর সঙ্গে নিরাপত্তারক্ষীর বাকবিতণ্ডা থেকে। রাত ১১টার দিকে বাসায় ফেরার সময় প্রহরীর সঙ্গে কথা কাটাকাটির পর ছাত্রীকে মারধর করা হয়। সহপাঠীদের খবর পাওয়ার পর তারা সেখানে গেলে স্থানীয়রা নিরাপত্তারক্ষীর পাশে দাঁড়িয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর আক্রমণ চালায়। দুই পক্ষই ইট-পাটকেল ও লাঠি ব্যবহার করে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে ওঠে।

রাত সাড়ে ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক তানভীর মো. হায়দার আরিফ ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে সবাইকে সতর্ক করেছেন। তিনি জানান, “দুই নম্বরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এলাকাবাসীর সংঘর্ষে প্রচুর শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। সহকারী প্রক্টর কুরবান আলী, নাজমুল স্যার ও নিরাপত্তা প্রধান রহিম ভাই আহত হয়েছেন। নিরাপত্তা বাহিনীর অনেকেই আহত। প্রক্টোরিয়াল বডি, পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ি ভায়চুর করা হয়েছে।”

উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন বলেন, “রাতে একটি আবাসিক ভবনের দারোয়ান আমাদের এক ছাত্রীর গায়ে হাত তোলে। শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করলে গ্রামবাসী তাদের ওপর আক্রমণ চালায়। পর্যাপ্ত পুলিশ আমরা ঘটনাস্থলে পাইনি। র‌্যাবের সাথে যোগাযোগ করেও তারা উপস্থিত হননি। শেষ পর্যন্ত সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।”

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রের প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবু তৈয়ব জানান, “রাতে অন্তত ৬০ জন আহত শিক্ষার্থীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। গুরুতর অবস্থার শিক্ষার্থীদের উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।”

এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন রোববারের সব পরীক্ষার কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করেছে। ক্যাম্পাসে শান্তি ফিরিয়ে আনতে প্রশাসন, প্রক্টোরিয়াল বডি ও সেনাবাহিনী একযোগে কাজ করছে। শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভের মাধ্যমে প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগের দাবি জানাচ্ছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের এই সংঘর্ষ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা, প্রশাসনিক তদারকি ও স্থানীয়দের সঙ্গে সম্পর্কের প্রশ্নকে নতুন করে সামনে এনেছে।

শেয়ার করুন:-
শেয়ার