দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় রিয়েল এস্টেট কোম্পানি ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেড একসময় বড় ধরনের সংকটে পড়লেও বর্তমানে আবার শক্ত অবস্থান তৈরি করেছে।
২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ৩৫০ কোটি টাকার ঋণের বোঝায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল। তবে সুপরিকল্পিত ব্যবস্থাপনা ও দক্ষ নেতৃত্বে তারা সেই সময়কে পেছনে ফেলে এসেছে। বর্তমানে কোম্পানিটির মুনাফা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং তাদের এফডিআর এখন দাঁড়িয়েছে ৪৫০ কোটি টাকায়—যা আর্থিক সক্ষমতার সুস্পষ্ট প্রমাণ।
যখন দেশের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান ব্যাংক ঋণের ভারে জর্জরিত, ঠিক তখন ঋণমুক্ত থেকে ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেড একটি সফল ব্যবসায়িক মডেল হিসেবে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
ইস্টার্ন হাউজিং বাংলাদেশের রিয়েল এস্টেট শিল্পে সুপরিচিত একটি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি। রিহ্যাবের ২৯ প্রতিষ্ঠাতা সদস্যের অন্যতম হওয়ায় খাতটির উন্নয়নে তাদের অবদান অনস্বীকার্য।
শুরুর লক্ষ্য ছিল ঢাকার নগরায়ণকে পরিকল্পিত আবাসনে রূপান্তর করা। সেই উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠানটি রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় প্রকল্প শুরু করে। বনশ্রী, দক্ষিণ বনশ্রী, মহানগর, নিকেতন, ছায়াবিথি (বাসাবো), প্যারাডোগা (যাত্রাবাড়ী), ভেমর, পল্লবী ফেস-১ ও ফেস-২, মায়াকানন (আমিনবাজার), সাভার, আফতাবনগর ও রায়েরবাজারসহ বহু এলাকায় তারা সফলভাবে আবাসন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। এর মধ্যে কিছু প্রকল্প এখনো চলমান।
প্রতিষ্ঠানটির বিশেষ সাফল্যের মধ্যে আফতাবনগর প্রকল্পকে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ধরা হয়, যা ঢাকার অন্যতম আধুনিক আবাসিক এলাকায় পরিণত হচ্ছে। গত চার বছর ধরে প্রজেক্ট ইনচার্জ মেজর মো. আলতামাস করিম (অব.) আফতাবনগরকে পরিকল্পিত আবাসিক নগরীতে রূপ দিতে অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন। স্থানীয়রা বিশ্বাস করেন, তার নেতৃত্বে এলাকা অচিরেই রাজধানীর সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন আবাসনে রূপ নেবে।
ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেডের যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯৬৫ সালের দিকে, প্রতিষ্ঠাতা উদ্যোক্তা জহুরুল ইসলামের হাত ধরে। ঢাকার পল্লবী থানায় ৭০০ বাড়ির প্রথম প্রকল্প দিয়ে তারা কাজ শুরু করে। পাশাপাশি ৯১০ একর জমি অধিগ্রহণ করে বৃহৎ পরিসরে উন্নয়ন কার্যক্রম চালায়।
বর্তমানে চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলামের ছেলে মঞ্জুরুল ইসলাম দেশের বাইরে থাকায় ব্যবস্থাপনার গুরুদায়িত্ব সামলাচ্ছেন ধীরাজ মালাকার। তিনি ২০১০ সালে ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে যোগ দিয়ে কোম্পানিকে ঘুরে দাঁড় করান এবং লাভজনক অবস্থানে নিয়ে আসেন।
আজ ইস্টার্ন হাউজিং কেবল একটি আবাসন প্রতিষ্ঠান নয়, বরং বাংলাদেশের রিয়েল এস্টেট শিল্পের শক্তিশালী স্তম্ভে পরিণত হয়েছে।