১৫ আগস্ট, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে ফুলের তোড়া হাতে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে গণধোলাইয়ের শিকার হন রিকশাচালক আজিজুর রহমান। পরে তাকে তুলে দেওয়া হয় ধানমন্ডি থানা পুলিশের হাতে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রিকশাচালক আজিজুরকে হত্যা মামলার আসামি বলে ভুয়া তথ্য প্রচার করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
ডিএমপি বলছে, ধানমন্ডি ৩২ থেকে আটক রিকশাচালককে হত্যা মামলার আসামি করা হয়নি। ধানমন্ডি থানার এপ্রিল মাসে হওয়া একটি মামলায় সন্দিগ্ধ আসামি হিসেবে ১৬ আগস্ট তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
রবিবার (১৭ আগস্ট) ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তালেবুর রহমান বলেন, গত ১৫ আগস্ট, ধানমন্ডি-৩২ এলাকা থেকে মো. আজিজুর রহমান (২৭) নামে এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়। পরে ধানমন্ডি থানার এপ্রিল মাসে হওয়া একটি মামলায় সন্দিগ্ধ আসামি হিসেবে ১৬ আগস্ট তাকে আদালতে পাঠানো হয়।
১৫ আগস্ট, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে ফুলের তোড়া হাতে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে
তিনি বলেন, এরইমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে মো. আজিজুর রহমানের গ্রেফতার ও মামলা নিয়ে অহেতুক ভুল তথ্য ছড়ানো হচ্ছে, যা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে আজিজুর রহমানকে যে মামলায় সন্দিগ্ধ আসামি হিসেবে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে তা পেনাল কোডের একটি নিয়মিত মামলা। কিন্তু অনেকেই বিষয়টি হত্যা মামলা হিসেবে প্রচার করছেন, যা মিথ্যা ও উদ্দেশ্যমূলক।
এমতাবস্থায়, বর্ণিত বিষয়ে কোনোরকম বিভ্রান্তি ছড়ানো থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ করা হলো।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) দেখা গেছে, রিকশাচালক আজিজুর একটি ফুলের তোড়া হাতে রিকশা চালিয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে আসেন। এরপর উপস্থিত জনতা তাকে আটক করে। এক পর্যায়ে গণধোলাইয়ের শিকার হন তিনি।
ফুলের তোড়ায় যা লেখা ছিল
ওই ফুলের তোড়ার ওপর লেখা ছিল, ১৫ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবস। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৫১তম মৃত্যুবার্ষিকীতে সাধারণ রিকশাওয়ালা হিসাবে বঙ্গবন্ধুকে ভালোবাসে শ্রদ্ধা জানাতে নিজের সৎ উপার্জনের টাকা দিয়ে ফুল কিনে এসেছি। আমি কোন দল করি না। শুধু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ভালোবাসি।
ওই কাগজে আজিজুর রহমানের বাবার নাম লেখা ছিল আতিয়ার রহমান। তার বাড়ি ঝিনাইদহ সদর থানার ঘোড়াশাল ইউনিয়নের ঘোড়াশাল গ্রামে।
আজিজুর রহমান ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে আসার সঙ্গে সঙ্গে গণমাধ্যমকর্মীরা তাকে ঘিরে ধরেন। তখন তিনি বলেন, আমি আওয়ামী লীগ বা শেখ হাসিনাকে ফেরাতে আসিনি। আমি বঙ্গবন্ধুকে ভালোবাসি। তাই আমার হালাল টাকা দিয়ে কেনা ফুল নিয়ে এসেছি।
এর কিছুক্ষণ পরেই ধানমন্ডি ৩২ এ থাকা বিভিন্ন দলের নেতাকর্মীরা তাকে ঘিরে ধরেন এবং মারধর করেন। এ সময় তার রিকশাটি রাস্তার পাশে উল্টে ফেলে রাখা হয়। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে নিজেদের হেফাজতে নেয়।