ক্যাটাগরি: আন্তর্জাতিক

ভারতে তীর্থযাত্রীদের ভাসিয়ে নিয়ে গেল কাদার স্রোত, নিহত ৬০

বৃহস্পতিবার ভারতের স্বাধীনতা দিবসে হঠাৎ ভারী বর্ষণের ফলে ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে বন্যা ও ভূমিধস দেখা দিয়েছে। শুক্রবার (১৫ আগস্ট) কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের তথ্যানুযায়ী, ওই ঘটনার পরদিন সেখানে অন্তত ৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে। শতাধিক মানুষ এখনও নিখোঁজ রয়েছে। প্রায় এক সপ্তাহের মধ্যে এটি হিমালয়ের এই ধরনের দ্বিতীয় প্রাকৃতিক দুর্যোগ। ভারতের সংবাদমাধ্যমগুলো ও ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

বৃষ্টির ফলে ভারী কাদা ও বন্যার পানি বৃহস্পতিবার চাসোতি গ্রামকে ঢেকে দেয়। ওইখানে তীর্থযাত্রীরা জনপ্রিয় তীর্থস্থল মাচাইল মাতার দিকে যাওয়ার আগে দুপুরের খাবারের জন্য জমায়েত হয়েছিল। সেই সময় কাদা ও পানিতে অনেক তীর্থযাত্রী ভেসে যায়।

আহত তীর্থযাত্রী রাকেশ শর্মা বলেন, আমরা একটি বিশাল শব্দ শুনলাম এবং সঙ্গে সঙ্গে স্রোতের মতো পানি ও কাদা এসে আমাদের ভাসিয়ে নিয়ে গেল। মানুষ চিৎকার করছিল। কিছু মানুষ চেনাব নদীতে পড়ে গেল। অন্যরা ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে।

শুক্রবার উদ্ধারকর্মীরা কাদা ও ধ্বংসস্তূপের মধ্যে শাবল, দড়ি ব্যবহার করে এবং স্থায়ী নয় এমন সেতু পার করে মানুষকে উদ্ধার করার চেষ্টা করেন। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে ব্যাগ, জামাকাপড় ও অন্যান্য জিনিসপত্র কাদায় আচ্ছাদিত অবস্থায় ছড়িয়ে ছিটিয়েছিল। পাশাপাশি ভাঙা বিদ্যুৎ খুঁটিও দেখা যাচ্ছিল।

একজন উদ্ধারকর্মী সংবাদ সংস্থা এএনআইকে বলেন, আমাদের বলা হয়েছে, আরও ১০০-১৫০ জন মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে থাকতে পারে।

মাচাইল যাত্রা হলো হিমালয়ের উচ্চভূমির মাচাইল মাতার মন্দিরের প্রতি একটি জনপ্রিয় তীর্থযাত্রা। এই মাতা দেবী দুর্গার এক রূপ। তীর্থযাত্রীরা চাসোতি থেকে মন্দির পর্যন্ত হেঁটে যান। কারণ সেখানে গাড়ির রাস্তা শেষ হয়।

এক সপ্তাহ আগে হিমালয়ের উত্তরাখণ্ড রাজ্যে একটি সম্পূর্ণ গ্রাম বন্যা ও ভূমিধসে ভেসে যায়।

ভারতের ৭৯তম স্বাধীনতা দিবসে প্রায় দুই ঘণ্টার বক্তব্যের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, প্রকৃতি আমাদের পরীক্ষা করছে। সাম্প্রতিক কয়েক দিনে আমাদের ভূমিধস, মেঘভাঙা বর্ষণ এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করতে হয়েছে।

ভারতীয় আবহাওয়া দফতরের তথ্য অনুযায়ী, মেঘভাঙা বর্ষণ হলো এক ঘণ্টার মধ্যে ১০০ মিলিমিটারের বেশি হঠাৎ ও প্রবল বর্ষণ। এই বর্ষণ বিশেষ করে বর্ষাকালে পাহাড়ি এলাকায় হঠাৎ বন্যা, ভূমিধস এবং ধ্বংস ঘটাতে পারে।

শেয়ার করুন:-
শেয়ার