জাতীয় সংসদ দেশের সিদ্ধান্ত গ্রহণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জায়গা বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম। তিনি বলেন, ‘সেখানে (সংসদ) নারীর প্রতিনিধিত্বটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং সেটি হতেই হবে।’
শনিবার (৯ আগস্ট) সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ে ‘জাতীয় সংসদে নারী আসন ও নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে ফওজিয়া মোসলেম এ কথা বলেন।
ফওজিয়া মোসলেম বলেন, ‘সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় যদি নারী না থাকে তাহলে নারীর পক্ষে আইন তৈরি হওয়া, নারীর বৈষম্য দূর করার যে বাস্তবতা তৈরি করা, প্রেক্ষিত তৈরি করা—সেটা সম্ভব হয় না।’
নারীর জন্য সংরক্ষিত আসনের প্রয়োজনীয়তার কারণ হিসেবে তিনি দুটি বিষয় উল্লেখ করেন। প্রথমত, বর্তমান রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে নারীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা অত্যন্ত জটিল। দ্বিতীয়ত, সমাজে নারীর এককভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ খুব সীমিত।
তিনি বলেন, ‘একজন নারী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে তাঁকে অন্যের ওপর নির্ভর করতে হয়। সেই কারণে সংরক্ষিত আসন রাখা দরকার। বিদ্যমান রাজনৈতিক কাঠামোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো ভারসাম্য রক্ষার জন্য নারীদের সংসদে হাজির করে।’
নারীর সরাসরি নির্বাচনে অংশগ্রহণের গুরুত্ব উল্লেখ করে ফওজিয়া মোসলেম বলেন, ‘সমাজে নারীর প্রতি এত বিদ্বেষ আছে, সেটা এখন বোঝা যাচ্ছে। এ অবস্থায় আমাদের চাপ সৃষ্টি করে যেতেই হবে। আমরা সেটি করে যাচ্ছি।’ তিনি সংসদের আসন বাড়িয়ে ৪০০ করা এবং নারীর জন্য ১৫০ আসন সংরক্ষণের পাশাপাশি সরাসরি নির্বাচনের সুযোগ সৃষ্টির দাবি জানান।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রধান শিরীন পারভীন হক, নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার, গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরী, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, নিজেরা করির সমন্বয়কারী খুশী কবির, নারীপক্ষের সভানেত্রী গীতা দাস, গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান তাসলিমা আখতার, স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের সদস্য ইলিরা দেওয়ান এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ও শিক্ষার্থী নাজিফা জান্নাত।