ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় পরিচালকদের কারও আলোচ্যসূচি নিয়ে কোনো দ্বিমত বা পর্যবেক্ষণ থাকলে এখন থেকে তা কার্যবিবরণীতে উল্লেখ করার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। পাশাপাশি যেসব ব্যাংকের পর্ষদে বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্যবেক্ষক রয়েছেন, তাঁরা কোনো মতামত দিলে সেটিও কার্যবিবরণীতে উল্লেখ করতে বলা হয়েছে। ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ও পর্যবেক্ষকদের কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে এমন উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
সোমবার (০৪ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংক এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ব্যাংকগুলোকে এ–সংক্রান্ত নির্দেশনা দিয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ও পরিচালনা পর্ষদের সহায়ক কমিটির সভায় উপস্থাপিত কোনো বিষয়ে কোনো সদস্য নোট অব ডিসেন্ট বা নিজস্ব মতামত দিলে তা কার্যবিবরণীতে উল্লেখের বিধান রয়েছে। কিন্তু ব্যাংকগুলো অনেক ক্ষেত্রে এ নির্দেশনা পালন করছে না। এ ছাড়া অনেক ক্ষেত্রে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ও সহায়ক কমিটির সভায় উপস্থাপিত কোনো বিষয়/এজেন্ডার ওপর ওই সভায় যে আলোচনা হয় এবং পরিচালকসহ বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্যবেক্ষক যেসব মতামত দেন, তা সভার কার্যবিবরণীতে যথাযথভাবে উল্লেখ করা হয় না। ফলে পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের পর্ষদ ও সহায়ক কমিটির সভায় কার্যকরভাবে অংশগ্রহণ ও অবদান রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করা সম্ভব হয় না। এ জন্য পরিচালনা পর্ষদের সদস্যের কার্যকর অংশগ্রহণ ও অবদান রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য নতুন নীতিমালা মেনে চলতে বলা হয়েছে।
এ নীতিমালায় বলা হয়েছে, পরিচালনা পর্ষদ ও সহায়ক কমিটির সভায় উপস্থাপিত কোনো বিষয়ের ওপর কোনো আলোচনা এবং কোনো পরিচালকের দ্বিমত, ভিন্ন মতামত বা পর্যবেক্ষণ থাকলে তা সভার কার্যবিবরণীতে অবশ্যই অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। সভায় আলোচিত পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ও সহায়ক কমিটির সব পর্যবেক্ষণ বা সুপারিশও কার্যবিবরণীতে যথাযথভাবে লিপিবদ্ধ করতে হবে। এ ছাড়া কোনো ব্যাংকে বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্যবেক্ষক থাকলে এবং সভায় উপস্থাপিত কোনো বিষয়ের ওপর ওই পর্যবেক্ষক কোনো মতামত বা পর্যবেক্ষণ দিলে, তা–ও সভার কার্যবিবরণীতে যথাযথভাবে উল্লেখ করতে হবে।
ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, গত এক দশকে ব্যাংকের যেসব ঋণে অনিয়ম হয়েছে, সেসব ঋণের বিষয়ে পর্ষদ সভার কার্যবিবরণীতে কারও কোনো দ্বিমত পাওয়া যায়নি। ফলে এখন পর্ষদের সবাই আইনের আওতায় আসছেন। এখন সময় এসেছে পর্ষদে কার কী ভূমিকা, তা সুস্পষ্ট করার। যাতে ভবিষ্যতে দোষী কেউ ধরাছোঁয়ার বাইরে না থাকেন। এতে সৎ পরিচালকেরা তাঁদের ভূমিকা পালনে উৎসাহিত হবেন।