ক্যাটাগরি: জাতীয়

প্রধান উপদেষ্টার ভাষণ আজ, ঘোষণা করতে পারেন নির্বাচনের তারিখ

গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের এক বছর পূর্ণ হলো আজ, মঙ্গলবার (৫ আগস্ট)। ঠিক এক বছর আগে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পতন ঘটে দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছরের শাসনের। সেই ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে আজ সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিতে যাচ্ছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ভাষণে বহু প্রতীক্ষিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়সূচি ঘোষিত হতে পারে বলে নিশ্চিত করেছে সরকারের একাধিক সূত্র।

বিকেল ৫টায় জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজা থেকে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ পাঠ করবেন ড. ইউনূস। পরে রাত ৮টার দিকে জাতির উদ্দেশে তার ভাষণ প্রচারিত হতে পারে। এতে অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছরের কার্যক্রম, জুলাই গণহত্যার বিচারপ্রক্রিয়া, চলমান রাজনৈতিক সংস্কার এবং আগামী নির্বাচন নিয়ে দিকনির্দেশনা থাকবে বলে জানা গেছে।

সরকারের ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা যায়, ভাষণে ২০২৬ সালের কোন মাসে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, সে বিষয়ে নির্দিষ্ট ঘোষণা আসতে পারে। এরপর নির্বাচন কমিশনকে তফসিল ঘোষণার আহ্বান জানানো হতে পারে বলেও আভাস দেওয়া হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ভাষণটি শুধু নির্বাচন নয়, দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যতের একটি রূপরেখা উপস্থাপন করবে। এতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন, সংলাপের অগ্রগতি ও নিরাপত্তা পরিকল্পনার বিষয়গুলো উঠে আসবে।

এদিকে প্রেস উইং থেকেও ভাষণ প্রচারের সম্ভাব্য সময় জানিয়ে বলা হয়েছে, রাত ৮টার আগে-পরে প্রচারিত হতে পারে। চূড়ান্ত সময় মঙ্গলবার সকালেই নির্ধারিত হবে।

ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন সম্ভাব্য তফসিল ঘোষণার প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। ইসি সচিব আখতার আহমেদ জানিয়েছেন, প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে সময়সূচি এলে আমরা প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করে তফসিল ঘোষণা করব। কমিশনের সকল বিভাগ এখন জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই কাজ করছে।

এছাড়া আগামী সেপ্টেম্বর থেকে দেড় লাখ পুলিশ সদস্যকে বিশেষ নির্বাচনী প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। অক্টোবর ও নভেম্বরজুড়ে চলবে এ প্রশিক্ষণ।

এদিকে নির্বাচনী নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ৫ আগস্ট থেকেই মাঠে সক্রিয় হয়েছে সেনাবাহিনী। নির্বাচনের সময় প্রায় ৬০ হাজার সেনাসদস্য মোতায়েন থাকবে এবং তাদের দেওয়া হয়েছে বিচারিক ক্ষমতা।

গত জুনে লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে ড. ইউনূসের বৈঠকের পর প্রকাশিত যৌথ বিবৃতিতে ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে নির্বাচন আয়োজনের সম্ভাবনার কথা জানানো হয়। রমজান শুরুর আগের সপ্তাহেও ভোট গ্রহণ সম্ভব—তবে তা বিচার ও সংস্কারে সন্তোষজনক অগ্রগতির ওপর নির্ভরশীল বলে জানানো হয়।

এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৬ জুলাই অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগে ১৪টি রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে ড. ইউনূস জানান, আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই নির্বাচনের সময়সূচি ঘোষণা করা হবে।

শেয়ার করুন:-
শেয়ার