ক্যাটাগরি: আন্তর্জাতিক

১০১ বছর বয়সেও রোগমুক্ত জীবনযাপন করছেন তুরস্কের এই নারী

কোনো রোগ বা স্বাস্থ্য সমস্যা ছাড়াই দিব্যি জীবনযাপন করছেন দক্ষিণ তুরস্কের ১০১ বছর বয়সের এক নারী। তার নাম আয়শে উগুর। ছোটবেলা থেকেই প্রাকৃতিক খাবার খাওয়ার দিকে মনোযোগ দিয়েছেন তিনি। তৈরি করা বা প্রক্রিয়াজাত খাবার নয় বরং সময়মতো ঘুমাতে যাওয়া ও সকালে তাড়াতাড়ি জেগে ওঠার অভ্যাস অনুসরণ করেছেন এই নারী।

জানা গেছে, আয়শে উগুর তার খাদ্যাভ্যাসের ওপর খুব গুরুত্ব আরোপ করেন এবং কৃত্রিম ও প্রক্রিয়াজাত খাবার থেকে কঠোরভাবে বিরত থাকেন। এছাড়া দুধ, মধু, গুড়, জ্যাম, ডিম, মাখন ও দইয়ের মতো প্রাকৃতিক খাদ্য দিয়ে নিজেকে পুষ্ট রাখেন। ১০১ বছর বয়সেও তিনি দাবি করেন যে তার কোনো রোগ নেই। তিনি নিজেই বাসায় খাবার প্রস্তুত করেন; নিজেই দই তৈরি করেন এবং প্রচুর শাকসবজি ও ফলমূল খান।

তিনি বলেন, “আমি সকালের নাস্তা করি। যেটা খেতে ইচ্ছা করে, সেটাই তৈরি করি। দুপুর পর্যন্ত বাসা থেকে বের হই না, কিন্তু তারপর বাইরে ছায়ায় বসি কারণ আবহাওয়া খুব গরম। আমি গরম সইতে পারি না। আমি সবসময় প্রাকৃতিকভাবে খেয়েছি। যেসব ফলমূল ও সবজি খাই, তা আমার নিজের বাগান থেকেই আসে।”

শৈশব ও যৌবনের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আয়শে উগুর বলেন, “আগের দিনগুলো এখনকার চেয়ে ভালো ছিল। আমাদের ছোট খামার ও মুরগি ছিল। আমরা নিজেরাই আমাদের পণ্যের জোগান দিতাম। কিন্তু এখন সেসব দিনের অনেক কিছু আর অবশিষ্ট নেই।”

নিজের উৎপাদিত পণ্যের পাশাপাশি তিনি স্থানীয় পণ্যও গ্রহণ করেন এবং পুষ্টির ব্যাপারে সবসময় সচেতন থাকেন। তিনি বলেন, “আমার কাছে সবসময় মধু ও গুড় থাকে। আমি মাংস ভেজে ফ্রিজে রেখে দেই; যখন দরকার হয়, বের করে খাই। আমি নিজেই জ্যাম তৈরি করি। আমার বাসায় সবসময় ভাজা ও সেদ্ধ মাংস থাকে। আলহামদুলিল্লাহ, আমার যা কিছু দরকার, সবই আছে। আমার কোনো রোগ নেই। আমার ডায়াবেটিস নেই, কোলেস্টেরল নেই, উচ্চ রক্তচাপ নেই। আমি যা খাই তা আমার কোনো ক্ষতি করে না। আমার ঘুম নিয়মিত। যতটা পারি, ডিম, দুধ ও দই খাই। আমি ভালোভাবে নিজেকে পরিচালনা করছি। আমি যা পারি, তাই খাই।”

আয়শে উগুর আরও বলেন, তিনি কখনোই তার নামাজ বাদ দেন না এবং রমজানে রোজা পালন করেন। তিনি বলেন, “আমি সবসময় তাসবিহ ব্যবহার করি ও দোয়া করি। আমি কখনো ইবাদত বাদ দিই না। ঘুমানোর আগে ও ঘুম থেকে উঠেই আমি দোয়া করি।”

তিনি তার সন্তান ও নাতি-নাতনিদের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করে পারিবারিক সম্পর্ক, একতা ও সৌহার্দ্যের গুরুত্বের কথা বলেন।

তার ছোট ছেলে, ৫৫ বছর বয়সী নিসান উগুর বলেন, “আমরা প্রতি সপ্তাহে মায়ের কাছে যাই। কখনো তাকে একা রাখি না। তার যেকোনো প্রয়োজন আমরা পূরণ করি। তিনি যা দরকার বলেন, আমরা কিনে আনি। আমি প্রতি সপ্তাহে গ্রামে যাই মাকে দেখতে। তিনি এখন ১০১ বছর বয়সী। আমি বিশ্বাস করি, তিনি এই বয়সে পৌঁছেছেন কারণ তিনি সবসময় প্রাকৃতিক ও অর্গানিক খাবার খেয়েছেন।”

তিনি আরও বলেন, “আমাদের পরিবারের সবচেয়ে বড় সদস্যের বয়স ৭৫ বছর, আর আমি সবচেয়ে ছোট – ৫৫ বছর বয়সী। আমার মা সবসময় প্রাকৃতিক খাবার খেয়েছেন। তিনি সব সময় স্বাস্থ্য নিয়ে সতর্ক ছিলেন। বর্তমানে তার কোনো অসুস্থতা নেই। তার ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল বা উচ্চ রক্তচাপ নেই।”

শেয়ার করুন:-
শেয়ার