পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত জ্বালানি-বিদ্যুৎ খাতের কোম্পানি খুলনা পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (কেপিসিএল) তুরস্কের আকসা এনার্জির উরেটিম এএস-এর কাছে তাদের একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র বিক্রি করবে। প্ল্যান্টটির নাম-কেপিসি ইউনিট টু। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে কোম্পানি দুটির মধ্যে একটি চুক্তি হয়েছে।
বুধবার (২৩ জুলাই) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দাখিল করা একটি মূল্য-সংবেদনশীল বিবৃতিতে খুলনা পাওয়ার কোম্পানি আলোচিত প্ল্যান্ট বিক্রির বিষয়টি জানিয়েছে। তবে কী মূল্য এই প্ল্যান্ট বিক্রি করা হচ্ছে সে সম্পর্কে কোম্পানিটি কিছু জানায়নি।
আলোচিত পাওয়ার প্ল্যান্টটি খালিশপুরে অবস্থিত। এর উৎপাদনক্ষমতা এটি ১১৫ মেগাওয়াট ক্ষমতা। সরকারের কাছে বিদ্যুৎ বিক্রি সংক্রান্ত চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর সেটি নবায়ন না হওয়ায় ২০২৪ সালের মার্চ থেকে প্ল্যান্টটি কার্যত অচল অবস্থায় রয়েছে।
পাওয়াল প্ল্যান্ট বিক্রির ঘোষণায় বুধবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে খুলনা পাওয়ারের শেয়ার ২.৬৩% বেড়ে ১১.৭০ টাকায় পৌঁছেছে।
খুলনা পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড দেশের প্রথম বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র। এই কোম্পানিটির স্পন্সর হচ্ছে- সামিট গ্রুপ ও ইউনাইটেড গ্রুপ। ২০১০ সালে কোম্পানিটি সরাসরি তালিকাভুক্তির মাধ্যমে পুঁজিবাজারে আসে। নানা কারসাজির মাধ্যমে কোম্পানিটির উদ্যোক্তারা উচ্চ মূল্য শেয়ার বিক্রি করে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেয় বলে অভিযোগ উঠে।
এদিকে সরকারের কাছে বিদ্যুৎ বিক্রি সংক্রান্ত চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় পর্যায়ক্রমে কোম্পানির সব বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হয়ে পড়ে। বিপুল সমালোচনার মুখে কোম্পানির অন্যতম স্পন্সর ইউনাইটেড গ্রুপ তাদের মালিকানাধীন ১৫০ মেগাওয়াট উৎপাদনক্ষমতাসম্পন্ন ইউনাইটেড পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৩৫ শতাংশ মালিকানা খুলনা পাওয়ার কোম্পানির কাছে বিক্রি করে।
গত বছরের ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর ক্ষমতায় আসা সরকার বেসরকারি খাতের বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর চুক্তি পর্যালোচনা করে দেখার সিদ্ধান্ত নেয়। সরকারের কঠিন অবস্থানে খুলনা পাওয়ারের চুক্তি নবায়ন না হওয়ার বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠে। এ অবস্থায় কোম্পানিটি তাদের সব প্ল্যান্ট বিক্রি করে দেওয়ার উদ্যোগ নেয়। এর আগে কোম্পানিটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক এক্সেলেরেট গ্লোবাল অপারেশনস এলএলসির সাথে তার প্রথম ১১০ মেগাওয়াট বার্জ-মাউন্টেড বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি ১৫ মিলিয়ন ডলারে (প্রায় ১৩০ কোটি টাকা) বিক্রি করার জন্য একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে। এবার ইউনিট টু বিক্রির বিষয়েও চুক্তি করেছে প্রতিষ্ঠানটি।